নিউজ ডেস্ক:
দীর্ঘ প্রায় চার বছর পর সংস্কার করা হয়েছে ভেড়ামারা গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের ৩ নম্বর পাম্প। বিদেশি ছাড়াই দেশি প্রকৌশলীদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় স্বল্প খরচে অকেজো পাম্পটি সচল করা সম্ভব হয়। পাম্পটি সচল হওয়ায় আসছে বোরো মৌসুমে প্রকল্পের সেচ সক্ষমতা অনেকাংশে বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একইসঙ্গে সরকারের প্রায় ১৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে স্থাপিত জিকে সেচ প্রকল্পের ৩ নম্বর পাম্পটি ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল অকেজো হয়ে যায়। চার বছর ধরে দুটি পাম্প দিয়েই কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা জেলার ১৩ উপজেলায় সেচ কাজ সচল রেখেছিল জিকে কর্তৃপক্ষ। তবে ওই পাম্পটি অকেজো থাকায় সেচকাজ ব্যাহত হচ্ছিল। অকেজো হওয়া ৩৭ হাজার হর্স পাওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্পটি মেরামতের জন্য জাপানি ইবারা কোম্পানি ১৭ কোটি টাকা দাবি করলে পানি উন্নয়ন বোর্ড শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিটাককে পরামর্শক নিয়োগ দেয়।
গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি অটোকন ইঞ্জিনিয়ারিংকে তিন নম্বর পাম্পটি মেরামতের জন্য তিন কোটি ৭১ লাখ টাকায় চুক্তি সম্পাদন করে বিটাক (বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র)।
অটোকন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দেশি প্রকৌশলীরা দীর্ঘদিনের চেষ্টায় সম্প্রতি ৩ নম্বর পাম্পটি সচল করতে সক্ষম হন। পাম্পটি সচল হওয়ায় একদিকে কৃষকরা যেমন নিজেদের চাহিদামতো সেচের পানি পাবেন তেমনি আগামী বোরোতে স্বল্প খরচে অধিক ফসল ফলাতে পারবেন।
অটোকন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভারী পাম্প বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ বলেন, দেশে এটা আমাদের প্রথম সফলতা। বাইরের কোনো সহযোগিতা ছাড়াই আমরা নিজেরাই কাজটি করতে সক্ষম হয়েছি। এতে আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।
অটোকন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এমডি প্রকৌশলী আলী আজাদ মনে করেন, এখন দেশের বাইরেও তারা পাম্প মেরামতের জন্য কাজ করতে পারেন। দেশে এ ধরনের কাজ করতে পারায় সরকারের অনেক অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। পাশাপাশি দেশে যে এ ধরনের কাজ করা যায় তার নজির সৃষ্টি হয়েছে। সামনে তারা আরও জটিল কাজও সমাধান করতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।
৩ নম্বর পাম্পটি সচল হওয়ার কারণে আগামীতে কৃষকদের চাহিদামতো পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে জানান জিকে পাম্প হাউসের ইনচার্জ প্রকৌশলী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, জিকের পানির ওপর নির্ভর করেন চার জেলার কৃষক। চাপ বাড়লে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। পদ্মায় পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকলে তিনটি পাম্পের সাহায্যে চার জেলার কৃষকদের পানির প্রয়োজন মেটানো সম্ভব।