নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যা নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে নির্মাণ হতে যাচ্ছে পরিবেশ থিয়েটার। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় দেশের ৬৪ টি জেলায় ৬৪ টি নাটক নির্মাণ ও পরিবেশনকাজ চলমান রয়েছে । গণহত্যার ভয়াবহতা, গণকবর, বধ্যভূমিসহ মুক্তিযুদ্ধের সামগ্রিক ভাষ্য তুলে ধরা হচ্ছে এই নাটকগুলোতে।
গত এক বছর ধরে গবেষণা ও যাচাই-বাছাই করে প্রতিটি জেলায় পরিবেশ থিয়েটার উপযোগী একটি করে বধ্যভূমি বেছে নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় নাটোরের লালপুরে অবস্থিত নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে ১৯৭১ সালের ৫মে ঘটে যাওয়া নারকীয় গণহত্যার ইতিহাসকে কেন্দ্র করে নাটক “শহীদ সাগর” নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় আছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সৈয়দ মামুন রেজা। এই নাটকের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নাটোর জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার রাকিবিল বারী। আগামী ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এই নাটকের প্রদর্শনী গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার স্থানেই অনুষ্ঠিত হবে।
এ প্রসঙ্গে নাটকের নির্দেশক ড. সৈয়দ মামুন রেজা বলেন, “১৯৭১ সালে সারা বাংলাদেশ জুড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীরা যে ভয়াবহ, বর্বর ও নারকীয় গণহত্যা চালিয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীর বছরে এই গণহত্যা বিষয়ক নাটক নির্মাণ ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে গণহত্যার শিকার হওয়া নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো, নতুন প্রজন্মের কাছে এই ইতিহাস তুলে ধরা এবং গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করা আমাদের লক্ষ্য।”
এ ব্যাপারে জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার রাকিবিল বারী বলেন, জাতীয় শিল্পকলা একাডেমীর গবেষক দ্বারা নির্বাচিত নাটোরের লালপুরের শহীদ সাগর এর গণহত্যার ইতিহাসকে নাট্যরূপ দেয়ার ব্যাপারে নির্বাচন করায় লালপুরেই এই নাটকের মহড়াসহ সকল প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে চলেছে। এই পরিবেশ থিয়েটারে লালপুরের চলন নাটুয়া ও বাগাতিপাড়ার বকুল স্মৃতি থিয়েটারসহ ঐ এলাকার বিভিন্ন নাট্য ও সাংস্কৃতিক কর্মী এবং বিভিন্ন স্কুল কলেজের বিএনসিসি-স্কাউট সদস্যসহ প্রায় শতাধিক কলাকুশলী অংশগ্রহণ করছেন।
তিনি আরও বলেন, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ৪ ডিসেম্বর নাটকটি পরিবেশিত হবে। এ ব্যাপারে অংশগ্রহণকারী সকলে অক্লান্ত পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে আমরা আশা করছি সফলভাবেই “শহীদ সাগর” পরিবেশ থিয়েটারটি নাটোরবাসী উপভোগ করতে পারবেন।