নিউজ ডেস্ক:
দেশের ভাবমূর্তি যারা ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায় তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সরকার দেশব্যাপী শক্তিশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেলেও দেশে একটি শ্রেণি রয়েছে, তারা এই উন্নয়ন দেখে না বরং নানা ঘটনার জন্ম দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়। গতকাল রবিবার পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর নির্মিত পায়রা সেতু উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করেন। একই অনুষ্ঠানে তিনি ঢাকা-সিলেট ও সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পৃথক এসএমভিটি
লেনসহ ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। এর মাঝেই কিছু কিছু ঘটনা মাঝে মাঝে ঘটছে, ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হচ্ছে সেটা আপনারা নিজেরাও টের পান। যাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। সেই সঙ্গে প্রচারণাও চালানো হয়। আমরা যতই উন্নতি করি, ভালো কাজ করি- একটা শ্রেণি আছে বাংলাদেশের বদনাম করতেই তারা ব্যস্ত।
এই শ্রেণির লোকদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এদেশের স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক তারা কি তা চায় না? একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তাদের একটু কদর বাড়ে। সেজন্য উন্নয়নটা তারা দেখে না বরং ধ্বংসই সব সময় করতে চায়। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।
পায়রা সেতু চালু হওয়ায় বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সঙ্গে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দর পর্যন্ত সড়কপথ ফেরিবিহীন হয়ে গেছে। আগে বরিশাল থেকে সড়কপথে কুয়াকাটা পৌঁছতে হলে ৬টি ফেরি পার হতে হতো। ৫টি স্থানে সরকার আগেই সেতু করেছে।
সেতুটির নামকরণ নিজে করেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বরিশাল ও পটুয়াখালীর সংযোগ সৃষ্টিকারী হবে এই পায়রা সেতু। পায়রা শান্তির প্রতীক। এই সেতু হওয়ার পর এই অঞ্চলের মানুষের যে আর্থিক উন্নতি হবে তার ফলে মানুষের মনে একটা শান্তি আসবে। আর্থসামাজিক উন্নয়নের ফলে তারা ভালোভাবে বাঁচতে পারবে।
প্রবাসীরা সরকারের পাশে রয়েছেন
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য প্রবাসে জনমত গঠন এবং মুক্তিযুদ্ধে লন্ডন প্রবাসী সিলেটিদের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা সব সময় দেশের উন্নয়নে সরকারের পাশে রয়েছেন। এ কারণে আমাদের হৃদয়ে তারা একটি বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে। তাই সিলেটের রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি সরকার একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও ক্যান্টনমেন্ট করেছে।
সিলেটের সার্বিক উন্নয়য়নে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ আমাদের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। সেই কথাটা আমরা সব সময় স্মরণ করি। আমি মনে করি, এই রাস্তাটা হয়ে গেলে যে যোগাযোগটা বাড়বে তাতে দেশেরই বিশেষ উন্নতি হবে এবং আন্তর্জাতিক সড়ক নেটওয়ার্কেও বাংলাদেশ যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম প্রকল্পগুলোর ওপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস গণভবন থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালী এবং সিলেট প্রান্তে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত প্রশাসন, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, কেন্দ্র্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুুস সোবহান গোলাপ গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।