শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক আইএমএফ

সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক আইএমএফ

নিউজ ডেস্ক:
করোনার টিকা কিনতে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের কাছ থেকে বড় অঙ্কের ঋণ সহায়তা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর পাশাপাশি অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বেশ কিছু নতুন প্রকল্পে ঋণ দেবে সংস্থা দুটি। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভায় ঋণ প্রাপ্তির বিষয়টির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। চারটি ঋণ চুক্তির আওতায় প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তা পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে সংস্থা দুটি থেকে ইতিবাচক আভাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকাকে নান্দনিক শহর করতে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

জানা গেছে, আগামীকাল সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থা দুটির প্রধান কার্যালয়ে সাত দিনব্যাপী বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। করোনা মহামারীর এই সময়ে সভাটি ভার্চুয়ালি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ কারণে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে সভায় অংশগ্রহণ করবেন। বিশ্বব্যাংক গত এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের অনুক‚লে করোনার টিকা কিনতে ৫০ কোটি ডলার বা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে। এছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ৮২ কোটি ডলার ঋণ দিতে চায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সংস্থা (আইএমএফ)।

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের এবারের বার্ষিক সভায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে সদস্য দেশগুলোর জনগণের করোনার টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে করোনা মোকাবেলা করে অর্থনীতি পুনরুদ্বারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সংস্থা দুটি। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের নেয়া এ পর্যন্ত সবগুলো পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকার ২৮ প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রাখা এবং দেশের সবাইকে করোনার টিকা দিতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করার বিষয়টির দিকে নজর রেখেছে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও অর্থ বিভাগ থেকে করোনার টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সংস্থা দুটির কাছে ঋণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

বার্ষিক সভায় অর্থমন্ত্রী দ্রæত ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ লাখ কোটি টাকার বেশি বাজেট দেয়া হয়েছে। এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং টিকাপ্রাপ্তির ওপর। এ কারণে বাজেটে সহায়তা চাওয়া হবে বিশ্বব্যাংকের কাছে। ইতোমধ্যে চলতি অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা চেয়েছে ইআরডি। আগামীকাল সোমবার ১১ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের সভা চলবে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। ওই সময় সংস্থা দুটির সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেসব বৈঠকে অর্থমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা সংযুক্ত থাকবেন। ইতোমধ্যে ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় বার্ষিক সভা উপলক্ষে একটি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ওই সময় অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারী খাতে সহজ শর্তে আরও অধিকতর অর্থায়নের পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি হস্তান্তর ও বেসরকারী খাতেও সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ এগিয়ে এসেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ায় করোনার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ভাল অবস্থায় রয়েছে।

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের সঙ্গে চার চুক্তি ॥ করোনাভাইরাস মোকাবেলা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশকে তিনটি চুক্তির আওতায় ১০৪ কোটি মার্কিন ডলার বা ৯ হাজার কোটি ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। এই সহায়তা করোনার টিকা কেনার খাতেও ব্যয় করা যাবে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সরকারের ইআরডির সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের এ সংক্রান্ত ঋণচুক্তি হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ৮২ কোটি ডলার ঋণ দিতে চায় আইএমএফ। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ সাত হাজার কোটি টাকার বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সঙ্গে এক ভার্চুয়ালি বৈঠকে চুক্তির মাধ্যমে এ পরিমাণ ঋণ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে প্রভাবশালী সংস্থাটি। এছাড়া ঋণ চুক্তির আওতায় ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তা এসেছে। সহায়তার এই অর্থ টিকা কিনতে ব্যয় করা হবে। অর্থাৎ করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তা আসছে সংস্থা দুটির কাছ থেকে।

সূত্রমতে, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকার ভ্যাকসিন কিনতে একটি তহবিল গঠন করেছে। এ তহবিলে উন্নয়ন সহযোগী বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে চলতি অর্থবছর ৩০ হাজার কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবি, জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা), ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) মতো সংস্থাগুলো। এবার আইএমএফ বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন কিনতে ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটি করোনা প্রতিরোধী ভ্যাকসিন কিনতে ৯৪ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা অনুমোদন করেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৭ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা। এই ঋণের টাকায় বাংলাদেশ আনুমানিক চার কোটি ৪৭ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে পারবে।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, জাতীয় টিকাদান কর্মসূচী চালু করে বাংলাদেশ করোনা প্রতিরোধে দ্রæত পদক্ষেপ নিয়েছে। এ কর্মসূচীর লক্ষ্য অর্জনে দ্রæত এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে জনগণের টিকা প্রাপ্তি গুরুত্বপূর্ণ। এই অর্থায়নের ফলে জাতীয় ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ জনগণের জন্য অবিলম্বে টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করবে। এছাড়া কর্মসংস্থান ও দক্ষতা উন্নয়নে দুটি প্রকল্পে বাংলাদেশকে ৬০ কোটি ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় পাঁচ হাজার ৮৫ কোটি টাকা) ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত নারী, তরুণ ও বিদেশফেরত শ্রমিকসহ সাড়ে ১৭ লাখের বেশি মানুষ উপকৃত হবেন। বার্ষিক সভায় ঋণ চুক্তিগুলো দ্রæত বাস্তবায়নের তাগিদ দেয়া হবে।

আরও দেখুন

রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে  ১৫ভরি স্বর্ণের ও 

১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,,  নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার  পথে পথ …