নিউজ ডেস্ক:
জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হলো দুবাই এক্সপো ২০২০। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের জেবল আলিতে বিশ্বের ১৯২ দেশের সঙ্গে এই বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশও। প্রায় এক দশকের প্রস্তুতি শেষে বৃহস্পতিবার রাতে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ছয় মাসব্যাপী এই এক্সপোর উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম ও আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
গতকাল শুক্রবার মেলায় ‘টেকসই উন্নয়নের পথে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের দুয়ার খুলেছে। প্যাভিলিয়নের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এ সময় সম্মানিত অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। সভাপতিত্ব করেন আবুধাবিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবু জাফর। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, অগ্রগতি, সাফল্য ও বাণিজ্য সম্ভাবনা তুলে ধরতে দ্বিতল বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে রয়েছে ডিসপ্লে সেন্টার। প্যাভিলিয়নের প্রবেশ মুখেই স্থান পেয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু জোন’। যেখানে রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ তার নানা কর্মকাণ্ডের ভিডিওচিত্র। এ ছাড়া সোশ্যাল ইকোনমিক জোন, ট্যুরিজম জোনসহ মোট ১০টি জোন করা হয়েছে প্যাভিলিয়নে। এসব জোনে বাংলাদেশের ওপর নির্মিত বিভিন্ন ভিডিওচিত্র বিরতিহীনভাবে প্রদর্শন করা হবে। প্যাভিলিয়নে পাল তোলা নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে পণ্য প্রদর্শনীর মঞ্চ। রয়েছে ডিজিটাল প্যানেল। এসব প্যানেলে দেশি পণ্য ও বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য রয়েছে। বিশেষ করে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ইতিহাসের পাশাপাশি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে দর্শনার্থীরা এসব তথ্য সহজেই পেতে পারেন। এতে করে এক্সপো থেকে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দুবাইয়ের এই এক্সপোতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ শুধু দেশীয় পণ্য প্রদর্শনী নয়, বাংলাদেশ যে বিশ্বে কতখানি এগিয়েছে তাও তুলে ধরা হচ্ছে। বিশ্ব দেখছে, বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। আজকের বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশের পথে চলছে। আমরা পাশের দেশগুলো থেকে অনেকাংশে এগিয়েছি। বিশেষ করে ভারত থেকে কিছু কিছু সূচকে এবং পাকিস্তান থেকে প্রায় সব সূচকে এগিয়ে বাংলাদেশ।
প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, এক্সপোর মাধ্যমে দেশে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধাগুলো আরও ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। রেমিট্যান্স পাঠানোর পাশাপাশি প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে হবে। ঘর তৈরি, গাড়ি কেনা বিনিয়োগের আওতায় পড়ে না। তারা যদি দেশে কোনো কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেন এবং এতে কারও কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয় সেটাই বিনিয়োগ হিসেবে ধরে নেওয়া যাবে।
এক্সপো ঘিরে আরব আমিরাত সেজেছে ভিন্নরূপে। মেলায় দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়াতে ‘এক্সপো-২০২০ পাসপোর্ট’ করার সুযোগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যাতায়াতের জন্য ১৮টি নির্ধারিত স্থান থেকে বিনামূল্যে গণপরিবহনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সপরিবারে মেলা উপভোগ করতে সরকারি দপ্তরগুলোতে ছয় দিনের ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে।