নিউজ ডেস্ক:
থার্ড পার্টি ইন্স্যুরেন্সের নতুন প্রস্তাবে ক্ষতিপূরণ কয়েক গুণ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বিদ্যমান অঙ্কের চেয়ে প্রায় ২৫ গুণ করার বা ৫ লাখ টাকা করার কথা ভাবছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। যদিও বিমা কোম্পানিগুলো তা কিছুটা কমাতে চাচ্ছে। তা হতে পারে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। থার্ড পার্টি ইন্স্যুরেস ফিরিয়ে এনে গাড়ির মালিকের প্রিমিয়াম ও বিমা দাবি ব্যাপকভাবে বাড়ানোর যে পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তা কিছুটা কমাতে চাইছে কোম্পানিগুলো। প্রিমিয়াম দুই থেকে চার গুণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে আপত্তি না থাকলেও বিমা কোম্পানিগুলো ক্ষতিপূরণ ৫ লাখ টাকা করার পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে। তারা বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক মানুষ হতাহত হয়। তাদের এ পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে গেলে যে হারে প্রিমিয়াম নির্ধারণ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তা সম্ভব নয়।
সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে যে পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষের প্রাণহানি ও এর চেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর আর্থিক অবস্থার ব্যাপক অবনতি হয়। এক্ষেত্রে বিমা হতে পারত আর্থিক রক্ষাকবচ। গাড়ির মালিকের তৃতীয় পক্ষের বিমা সুবিধার আওতায় থাকতে পারত এ মানুষগুলো। কিন্তু সেই সুবিধা দেশে ছিল নামকাওয়াস্তে। এর প্রিমিয়ামও যেমন ছিল ন্যূনতম, তেমনি বিমা দাবির পরিমাণও এতটাই অনুল্লেখযোগ্য যে, ক্ষতিগ্রস্তরা তা দাবিও করত না। অকার্যকর বিধায় সেই বিমা ব্যবস্থা বাতিলও করা হয়েছে। তবে তা আবার নতুন করে ফিরিয়ে এনে ?যুগোপযোগী করার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তাতে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আর্থিক নিরাপত্তা দিতে পারে। এবার আগের চেয়েও বেশি প্রিমিয়াম, বেশি ক্ষতিপূরণ ও শক্ত আইনি কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকরও করতে চাইছে সরকার। এরই মধ্যে নতুন থার্ড পার্টি ইন্স্যুরেন্সের প্রাথমিক রূপরেখাও তৈরি করেছে আইডিআরএ।
১৯৮৩ সালের মোটরযানসংক্রান্ত পুরনো আইনে তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি বিমা করা বাধ্যতামূলক এবং এর অধীনে দণ্ডের বিধানও ছিল। তবে ২০১৮ সালের নতুন সড়ক পরিবহন আইনে তা বাতিল করা হয়, যা ২০১৯ সালের নভেম্বরে কার্যকর হয়। গত ডিসেম্বরে বিমার বিধান বাতিল করে বিজ্ঞপ্তি দেয় আইডিআরএ। তবে বছর না পেরোতেই আবারও মোটরযান বিমায় ফিরছে সংস্থাটি। আইডিআরএ বলছে, নতুন সড়ক পরিবহন আইনের সঙ্গে বিমা আইনের সমন্বয়হীনতা ছিল। এটি দূর করতে তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি বিমা বাতিল করা হয়। এখন গুরুত্ব অনুধাবন করে আরো কার্যকরভাবে তা ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগের চেয়ে বাড়ছে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ, বাড়ছে প্রিমিয়ামের হারও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুরনো মোটরযান বিমায় মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে বছরে ৩০০ টাকা প্রিমিয়াম থাকলেও তা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা বা তার বেশি করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। গাড়ির ক্ষেত্রে তা প্রায় ৪ গুণ করার কথা বলা হচ্ছে। আগের প্রিমিয়াম ৫০০ টাকার মতো ছিল, যা বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা করার কথা ভাবা হচ্ছে। নতুন প্রস্তাবে ক্ষতিপূরণ কয়েক গুণ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বিদ্যমান অঙ্কের চেয়ে প্রায় ২৫ গুণ করার বা ৫ লাখ টাকা করার কথা ভাবছে আইডিআরএ। যদিও বিমা কোম্পানিগুলো তা কিছুটা কমাতে চাচ্ছে। তা হতে পারে ৩ থেকে ৪ লাখ। তবে মৃত্যুতে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণসহ দুর্ঘটনায় পড়া ব্যক্তি কতটা গুরুতর আহত হয়েছেন, তার ওপর ভিত্তি করে আরো চার স্তরের (স্ল্যাব) ক্ষতিপূরণের কথাও আলোচনায় রয়েছে।
নতুন করে আবারো দুর্ঘটনায় ঝুঁকি বিমার রূপরেখা ঠিক করতে আইডিআরএ সদস্য মো. দলিল উদ্দিনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরে আইডিআরএর নির্বাহী পরিচালক এস এ শাকিল আখতারকে প্রধান করে আরেকটি উপকমিটি করা হয়। ওই কমিটিকে নতুন প্রস্তাবের খসড়ার দায়িত্ব দেয়া হয়। কমিটি এরই মধ্যে কয়েকবার বিমাসংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে সভা করেছে।
তারা কেমন ক্ষতিপূরণ হবে, প্রিমিয়াম কত হবে, কত ধরনের ক্ষতিপূরণ হবে, সেসব বিষয়ে একটি প্রাথমিক প্রস্তাবও তৈরি করেছে। এটি আরো পাঁচ-ছয় ধাপ পার হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে। তবে এতে ক্ষতিপূরণের হার বর্তমানের চেয়ে প্রায় ২৫ গুণ বাড়াতে চায় আইডিআরএ। তবে এ নিয়ে বিমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে দর কষাকষি চলছে। তারা এত ক্ষতিপূরণে রাজি হচ্ছে না।
আরও দেখুন
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ ………..চাঁপাইনবাবগঞ্জে রক্তদান সামাজিক সেবামূলক সংগঠন ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। শুক্রবার …