বুধবার , ডিসেম্বর ২৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / বড়াইগ্রাম / নাটোরের বড়াইগ্রামে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে কাঠ ব্যবসায়ীর অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরাল, কাঠ ব্যবসায়ী আটক

নাটোরের বড়াইগ্রামে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে কাঠ ব্যবসায়ীর অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরাল, কাঠ ব্যবসায়ী আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম:
নাটোরের বড়াইগ্রামের উপলশহরের স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ছবি ভাইরাল করার অভিযোগে জমশেদ আলী নামে এক কাঠ ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবার। বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারের নজরে পড়ার আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই গতকাল বিকেল সোয়া ৫টার দিকে অভিযুক্ত জমশেদকে আটক করা হয়।

সোমবার বেলা ১২টার দিকে এই প্রতিবেদকের কাছে ভাইরাল হওয়া একটি ছবি আসে বড়াইগ্রামের উপলশহর এলাকা থেকে। দুপুরে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে উপলশহর গ্রামে গিয়েই সংবাদকর্মীদের দেখে কানা-ঘুষা করতে থাকে সাধারণ মানুষ। জানা যায়, সেখানকার বাজার এলাকায় উন্মুক্ত দোকানেও ওই ছাত্রী সম্পর্কে নানা মন্তব্য করতো জমশেদ। সেই খবরে উপলশহর বাজারে গেলে সংবাদকর্মীদের দেখে মুহূর্তেই জড়ো হয়ে যায় এলাকার ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।

এ সময় স্থানীয়রা জানান, বাড়িতে একটি ফার্নিচারের দোকান করে কাঠ ব্যবসা করে জমশেদ। দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক জমশেদের বিরুদ্ধে নারী আসক্তির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এরই মধ্যে একই গ্রামের ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের কারণে নিয়মিত সেখানে যাতায়াত করতো সে। একপর্যায়ে নানা প্রলোভনে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে তার। ওই পরিবারের সঙ্গে ছোট খাটো অর্থনৈতিক লেনদেনও হতো জমশেদের। পরে সম্পর্কের অবনতি হলে বছর খানেক আগে স্থানীয় মেম্বার ও সমাজ প্রধানদের কাছে ছাত্রীর পরিবারের কাছে টাকা পাওয়ার অভিযোগ আনেন জমশেদ। এনিয়ে একটি গ্রাম্য সালিশে বিভিন্ন সময় লেনদেনের হিসাব কষে ৮ হাজার টাকা পাওনা হয় জমশেদ। সেই টাকা পরিশোধ শেষে জমশেদ ওই ছাত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি পরিবার ও ওই ছাত্রীকে দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল এবং ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। স্থানীয় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী বিষয়টি নিয়ে বিব্রত সময় কাটাতে থাকে। করোনা মহামারিতে স্কুলও বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া জমশেদের নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে ওই ছাত্রীর পরিবার তাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। সেখানেও ওই মেয়েকে ব্ল্যাকমেইলিং এর জন্য গিয়ে নানা হুমকি দিতো জমশেদ। এরই মধ্যে ওই ছাত্রীর সঙ্গে অর্ধনগ্ন অন্তরঙ্গ একটি ছবি ইমোতে পরিচিত জনদের কাছে পাঠায় জমশেদ। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে বাজারের দোকানেও মেয়েকে নষ্টা প্রমাণ করতে আরও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকিও দেয় সে এমনটা জানান স্থানীয় অনেকেই। গতকাল দুুপুরে উপলশহর বাজারে উপস্থিত উৎসুক অনেকেই এমন নানা কথার বর্ণনা দিয়ে জমশেদের বিচার দাবি করেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, ইউপি যুবলীগ সভাপতি রাশেদুল ইসলাম, ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল রানা ও সাধারণ সম্পাদক খাদেম বিশ্বাস এমন গর্হিত ঘটনার বিচার দাবি করেন।

এ ব্যাপারে ইউপি মেম্বার নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে তিনি একটা সালিশ করেছেন। সেই টাকা পরিশোধের পর ওই মেয়েকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল ও পরিবারকে হুমকি দিলে পুরো পরিবার এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে যায়। সেখানে গিয়েও ওই মেয়েকে ভয়ভীতি দেখাতো জমশেদ। এমন নানা অভিযোগ পেয়ে বারবার নিষেধ করলেও আমলে নেয়নি জমশেদ।

এ ব্যাপারে মেয়ের জ্যাঠা বলেন, জমশেদের অত্যাচারে তার দিনমজুর ভাই পুরো পরিবার নিয়ে ঢাকায় গিয়ে পেটের তাগিদে গার্মেন্টেসে কাজ করেন। জমশেদের অত্যাচারে স্কুল পড়ুয়া ওই ছাত্রীর বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। সে খবরে সেখানেও যায় জমশেদ। যার সঙ্গে বিয়ের কথা চলছিল তাকে ওই আপত্তিকর ছবি দিয়ে বিয়ে ভেঙে দেয়া হয়েছে। আমরা গরিব হওয়ায় এর বিচার পাই না প্রতিবাদও করতে পারি না।

এদিকে সরজমিন ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহাকে জানানো হলে তাৎক্ষণিক সেখানে পুলিশ পাঠান তিনি। ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে বিকেল সোয়া ৫টার দিকে জমশেদকে আটক করে বড়াইগ্রাম থানার পুলিশ উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ও শামসুল ইসলাম।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, সামাজিক মূল্যবোধ নষ্ট করার কোনো সুযোগ নাটোর জেলা পুলিশ দেবে না। সে যেই হোক কোন অপরাধ করলে তাকে আইনের আওতায় এনে সুবিচার নিশ্চিত করা হবে। এমন ঘটনা নজরে আনায় সংবাদকর্মীদের ধন্যবাদ দেন তিনি।

আরও দেখুন

নলডাঙ্গায় উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,, নাটোরের নলডাঙ্গায় উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। নলডাঙ্গা উন্নয়ন …