এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৪৯টি দেশের মধ্যে বর্তমানে ১৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। প্রবৃদ্ধির বিবেচনায় সিঙ্গাপুর ও হংকংকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ এই অবস্থানে পৌঁছেছে বলে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে মোট ৭০ হাজার ৪১৬ কোটি ডলার সমপরিমাণ পণ্য উৎপাদন ও সেবা সৃষ্টি হয়েছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করে দীর্ঘদিন এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির পরিমান হিসাব করে আসছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবি। এর মাধ্যমে দেশগুলোর অর্থনীতির আকার নির্ধারণ করে সংস্থাটি। সম্প্রতি সূচকগুলো বিবেচনা করে ‘কি ইনডিকেটরস ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শীর্ষক চলতি বছরের প্রতিবেদন প্রকাশ করে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
অর্থনীতির আকার বিবেচনায় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৪৯টি দেশের মধ্যে ১৩তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রবৃদ্ধির আকারে বিগত বছরগুলোতে সিঙ্গাপুর ও হংকংকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ এই অবস্থানে এসেছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশে মোট ৭০ হাজার ৪১৬ কোটি ডলার সমমূল্যের পণ্য উৎপাদন ও সেবার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গেলেও গত বছর এই আকার হংকংয়ের চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
এডিবির প্রতিবেদনে পিপিপি অনুযায়ী এশিয়ায় সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ চীন। দেশটির মোট জিডিপির আকার ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৩ কোটি ডলার। দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত, যেখানে জিডিপির আকার ১০ লাখ ৪৭ হাজার ৪৩৩ কোটি ডলার। এডিবির ওই প্রতিবেদনে এশিয়ার ৪৯টি দেশের মধ্যে কার কত জিডিপির আকার, তা দেখানো হয়েছে।
২০০০ সালে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ছিল সিঙ্গাপুর। ওই বছর বাংলাদেশে মাত্র ১৫ হাজার ১৮০ কোটি ডলারের পণ্য উৎপাদন ও সেবা সৃষ্টি হয়েছিল। তখন সিঙ্গাপুরে সৃষ্টি হয়েছিল ১৬ হাজার ৭১৮ কোটি ডলারের পণ্য উৎপাদন ও সেবা। এরপর বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে। পরের ১০ বছরেই সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। ২০১০ সালে বাংলাদেশের জিডিপির আকার দাঁড়ায় ৩৬ হাজার ৪০৫ কোটি ডলার। ওই বছরই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে পড়ে সিঙ্গাপুর। তখন সিঙ্গাপুরে পণ্য উৎপাদন ও সেবা সৃষ্টির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৬ হাজার ৩৩২ কোটি ডলার। এরপর বাংলাদেশের শুধু এগিয়ে যাওয়ার গল্প। ২০১৮ সালে সিঙ্গাপুরের চেয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ শতাংশ বেশি।
একইভাবে হংকংকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। এই দেশটিও ২০০০ সালে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ছিল। কিন্তু ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো হংকংকে পেছনে ফেলে দেয় বাংলাদেশ। গত বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বেড়ে হংকংয়ের চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি হয়েছে। গত দেড় যুগে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে দারিদ্র্যবিমোচনে অগ্রগতি তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে। মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু রোধ এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। শ্রমশক্তিতে কর্মক্ষম মানুষের অংশ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বেশি।