নিউজ ডেস্ক: রংপুর- ৩ আসনে জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত এইচ এম এরশাদের মৃত্যুতে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দলীয় প্রার্থীর বাইরে গিয়ে ২০-দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান (সদ্য বিলুপ্ত) রিটা রহমানকে ধানের শীষের মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুনি মেজর (অব.) খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমান। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসছে দেখে সে বিদেশে পালিয়ে যায়। বিচারে খায়রুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ হয়েছিল। ওই অবস্থায় বিদেশের পলাতক জীবনে তার মৃত্যু হয়। এদিকে রিটা রহমান শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনির স্ত্রী নয় বরং মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে রাজাকার মশিউর রহমান জাদু মিয়ার মেয়েও। এমন বিতর্কিত একজনকে বিএনপি প্রার্থী করায় রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা।
দলীয় প্রার্থীদের বাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনির স্ত্রী ও রাজাকারের মেয়েকে মনোনীত করায় নেতারা বলছেন, ঘুরেফিরে বিএনপির বিচরণ বঙ্গবন্ধুর খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের ঘিরেই। যার কারণে দল রাজনীতির লাইম লাইটে ফিরতে পারছে না। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এই আসনে দলীয় প্রার্থীকে সরিয়ে রিটাকে মনোনয়ন দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু রিটা বিপুল ভোটে পরাজিত হন। ফলে রংপুর-৩ আসনে তাকে মনোনয়ন দেয়া নিয়ে বেশ সমালোচিত হতে হচ্ছে বিএনপিকে।
সূত্র বলছে, রংপুর-৩ আসন থেকে বিএনপির চারজনসহ মোট ৫ জন মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন। বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম এ বিষয়ে বৈঠকও করে। বৈঠকে রিটাকে মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে অনেকেই আপত্তি তোলেন। তবে শেষ পর্যন্ত লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নির্দেশে রিটাকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে সম্মত হন দলের শীর্ষ নেতারা। তবে তারেক রহমানের এমন একচেটিয়া সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি দলের অধিকাংশ নেতাই। কিন্তু পদ বাঁচানো ও নতুন পদের আশায় কেউ প্রকাশ্যে এর প্রতিবাদ করেননি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রংপুর-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির একজন নেতা বলেন, দলের হঠকারী সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে আর কথা বলতেও ইচ্ছে হয় না। দলের অন্তত ৫ জন নেতা ছিলেন যারা এই আসনে লড়বেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ রিটা রহমানকে মনোনয়ন দেয়া হলো। রিটা সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। দলের হাইকমান্ড মাঠের রাজনীতি না বুঝে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছেন। যার কারণে দলের মধ্যে যে বিভেদ তৈরি হচ্ছে- এর মাশুল গুণতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ত্যাগ করা নিয়ে এমনিতেই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপে রয়েছে দল। সেখানে সেই চাপ আরেকটু বাড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বীকৃত খুনির স্ত্রী ও রাজাকারের মেয়েকে প্রার্থী করা হলো। বিষয়টি দলের নেতাকর্মীরাই মানতে পারছেন না। সেখানে সাধারণ মানুষ কিভাবে মানবেন?