রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪
নীড় পাতা / উন্নয়ন বার্তা / শেরপুরে উচ্ছ্বসিত ৪০ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ

শেরপুরে উচ্ছ্বসিত ৪০ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ

নিউজ ডেস্ক:
‘আমগরে তো কিছুই নাই। জীবন আছে, কিন্তু আনন্দ নাই। মা-বাবা, ভাই-বোন থেকেও নাই। সংসার নাই, স্বপ্ন নাই, বন্ধু-বান্ধবও নাই। কারণ আমরা হিজড়া। অন্যের বাড়িত থাকি, ভিক্ষা কইরা খাই। আইজ প্রধানমন্ত্রী আমগরে বাড়ি দিলেন। স্বপ্নেও ভাবি নাই আমরা জমি পামু, বাড়ি পামু। শেখ হাসিনার দয়ায় আমরা ঠিকানা পাইলাম। প্রধানমন্ত্রী আমগরে অনেক শান্তি দিলেন। তারে অন্তর থেইক্কা ধন্যবাদ জানাই।’

জমিসহ নতুন ঘর পেয়ে আপ্লুত সবুজা সেলফি তুলছিলেন আর এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিলেন। সবুজাসহ ৪০ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ সোমবার শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া সুতিরপাড় গ্রামে খুঁজে পেয়েছেন আপন ঠাঁই। সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন জমিসহ নতুন ঘরের চাবি, জনপ্রতি ১৫ হাজার টাকা, কাপড়, ডেকচি, থালা-গ্লাস-বাটি, চাল, ডাল, তেল, বিছানা, চৌকিসহ নানা উপকরণ।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রশাসনের তরফ থেকে তৈরি করে দেওয়া এ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের আবাসন প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আন্ধারিয়া তৃতীয় লিঙ্গ গুচ্ছগ্রাম’। কৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত দিয়ে তাদের এই বসতভিটা করে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটিতে ব্যয় হয়েছে ৬৯ লাখ আট হাজার টাকা।

উপজেলা প্রশাসন জানায়, এ গুচ্ছগ্রামে তৃতীয় লিঙ্গের প্রত্যেকের জন্য ঘরের পাশাপাশি রয়েছে একটি করে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন, বারান্দার পাশেই রান্নাঘর, সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েলসহ গোসলখানা। প্রশিক্ষণসহ নানা কাজে ব্যবহারের জন্য এ গ্রামে রয়েছে একটি মাল্টিপারপাস হলরুম। এ ছাড়া গুচ্ছগ্রামের ভেতর রয়েছে একটি বিশাল পুকুর। হাঁস ও মাছ চাষের জন্য সেটির চারপাশ বাঁধাই করা হয়েছে। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য পাশেই আট একরের মরাসুতি বিল খননের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুযায়ী প্রস্তাবনা অনুমোদন মিললে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এই বিলে হাঁস ও মাছ চাষের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞে যুক্ত হবেন।

গুচ্ছগ্রামের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সদর ইউএনও ফিরোজ আল মামুন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনা উপহার- মুজিববর্ষের এ স্লোগান ধারণ করে আমরা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সমাজের মূল স্রোতে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। এ লক্ষ্যে এর আগে তাদের সেলাই, হাঁস-মুরগি পালন, ড্রাইভিং শিক্ষা, ব্লক-বাটিক প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, হিজড়া কল্যাণ সমিতির সভাপতি নিশি সরকার, কামারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারী চান প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন ডিডিএলজি (উপসচিব) এটিএম জিয়াউল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুক্তাদিরুল আহমেদ, এনডিসি মো. মিজানুর রহমান, জনউদ্যোগ আহ্বায়ক শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, প্রবীণ সাংবাদিক সুশীল মালাকার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের পর জেলা প্রশাসক পুকুরে মাছ ছাড়েন এবং বৃক্ষরোপণ করেন।

আরও দেখুন

পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!

নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …