নারদ বার্তা ডেস্ক:
শতবর্ষী পুরনো দেশের বৃহৎ রেলসেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ঝুঁকি এড়াতে নতুন একটি সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মনিরুজ্জামান মনির এ তথ্য জানান।
রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়ায় একটু একটু করে দেবে যাচ্ছে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। বর্তমানে রেল সেতুটি ঝুঁকিতে রয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে কম সময়ের মধ্যে নতুন একটি রেল সেতু নির্মাণ করা হবে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সেতু থেকে এক হাজার ফুট দূরে অনুরূপ নতুন একটি সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি নির্মাণ করতে প্রায় পাঁচ বছর সময় লাগবে। কারিগরি সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরই রেল সেতু নির্মাণের মূল প্রকল্প নেওয়া হবে। নতুন রেল সেতু নির্মাণের জন্য বিশদ নকশাসহ সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে ১৮০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ দেবে এডিবি। পদ্মা নদীর ওপর উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের সংযোগ রক্ষাকারী এই রেল সেতুটি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী রেলওয়ে স্টেশনের কাছাকাছি অবস্থিত। সেতুটি পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলাকে সংযুক্ত করেছে। নতুন রেল সেতুর অবস্থান ও দৈর্ঘ্য একই হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের অনুরূপ নতুন রেলসেতু নির্মাণের জন্য সমীক্ষা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিসট্যান্স (টিএ) ফর রেলওয়ে কানেকটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটিটি (আরসিআইপিএফ)’ প্রজেক্টের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
রেল সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের বয়স ১০০ বছর পেরিয়ে গেছে। বয়সের ভারে সেতুটি দেবে যাচ্ছে। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন রেল সেতু নির্মাণ করা হবে। রেল সেতুটি নির্মাণের আগেই আমরা সম্ভাব্যতা যাচাই করব।
তিনি আরও বলেন, আমরা রেলপথে কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। বিদ্যমান হার্ডিঞ্জ ব্রিজকে যত দ্রুত মুক্ত করতে পারব ততই মঙ্গল।
বর্তমান হার্ডিঞ্জ ব্রিজের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৭৯৮ দশমিক ৩২ মিটার। নতুন রেলসেতুর দৈর্ঘ্যও একই হবে। এর ওপর দুটি ব্রড গেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ১৯০৯ সালে। নির্মাণ শেষে ১৯১৫ সালে ট্রেন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সেই হিসাবে এই সেতুর বয়স একশো বছর পেরিয়ে গেছে।