শনিবার , নভেম্বর ১৬ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা

জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা


নিউজ ডেস্ক:
পটুয়াখালীতে কয়লাভিত্তিক সবকটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে গেলে নতুন মাত্রা যোগ হবে জাতীয় অর্থনীতিতে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সর্ববৃহৎ কয়লাভিত্তিক ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের তিনটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ফেজ উৎপাদন করছে। জেলার কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়নে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ফেজের দুটি ইউনিটের পুরোটাই উৎপাদনে রয়েছে। একটি ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। অন্য ইউনিট সঞ্চালন লাইনের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় সরবরাহ করতে পারছে না বিসিপিসিএল। দ্বিতীয় ফেজে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজও এগিয়ে চলেছে, যা ২০২৩ সালে উৎপাদনে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর পাশেই বাংলাদেশ-চায়না যৌথ মালিকানায় আরেকটি ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন। দ্রুতগতিতে চলছে এর স্ট্রাকচারাল কাজ। ২০২৩ সালে উৎপাদনে যাবে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও। পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক থেকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সংযোগস্থল পর্যন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে ছয় লেন মহাসড়কের কাজ। ২০২৩ সালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের নির্মাণাধীন আরও দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করলে দেশের অর্থনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজওয়ান ইকবাল খান জানান, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বিসিপিসিএল কর্তৃপক্ষ প্রথম পর্যায়ে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ করেছে; যার একটি ২০২০ সালের ১৫ মে থেকে জাতীয় গ্রিডে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। দ্বিতীয় ইউনিটটি গত ৮ ডিসেম্বর নির্মাণকাজ শেষ করে উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। দুটি ইউনিট প্রস্তুত হলেও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের অপেক্ষায় রয়েছে।

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (বিসিপিসিএল) মো. পিঞ্জুর রহমান জানান, ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ফেজের কাজ এগিয়ে চলেছে। মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে কাজের গতি একটু থমকে গেলেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। তবে বর্তমানে দ্রুততার সঙ্গে কাজ এগিয়ে চলেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই এর দুটি ইউনিটের উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এদিকে কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়নে নির্মাণাধীন পটুয়াখালী কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। সরকারি কোম্পানি রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল) এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। আরপিসিএল চীনের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি নোরিনকো ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যৌথ মালিকানায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। জানা যায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াট ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াট ২০২৩ সালের আগস্টে উৎপাদনে যাওয়ার কথা। প্রকল্পের জন্য ধানখালীর নিশানবাড়িয়া ও লোন্দা মৌজার ৯১৫.৭৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। করোনার প্রকোপের কারণে কাজের একটু অসুবিধা হলেও গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৯.৫৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে চায়না এক্সিম ব্যাংক ১.৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ হিসেবে দেবে। চুক্তি অনুযায়ী চুক্তিমূল্যের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় ইপিসি ঠিকাদার প্রাথমিকভাবে নিজেরাই বহন করবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি বয়লার, স্টিম টারবাইন ও জেনারেটর নির্মাণের জন্য ইপিসি ঠিকাদারের মাধ্যমে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের মে থেকে পরবর্তী আট মাসের মধ্যে প্রধান যন্ত্রপাতিগুলোর ফ্যাক্টরি ইন্সপেকশন শেষ হবে। বর্তমানে পাইলিংসহ মালামাল হ্যান্ডলিং জেটি, অ্যাকসেস রোড, প্রকল্পের অফিস ও আবাসন সুবিধাদির নির্মাণকাজ চলছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে সর্বাধুনিক আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে। এতে পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার পরিমাণ কমে যাবে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ২২০ মিটার উচ্চতার চিমনি ব্যবহারের ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ছাই ও ধোঁয়া পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কম ফেলবে। এতে আরও থাকছে অ্যাশপন্ড যার ৯৯ ফ্লাইঅ্যাশ বয়লার টিউবের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে। কয়লা পরিবহনের জন্য প্রকল্পটির পাশে জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একই ব্যবস্থাপনায় আমদানি করা কয়লা আসবে এখানে। আর পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) নির্মাণ করবে এর গ্রিডলাইন।

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শাহ আবদুল মাওলা জানান, দুই দেশের যৌথ বিনিয়োগে পরিচালিত এ প্রকল্পে এ পর্যন্ত ২.৩৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে ১.৯৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী বিসিপিসিএল নির্ধারিত সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকাজ শেষ করেছে। তবে কয়েক দফা সময় বাড়ালেও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) পায়রা থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণকাজ শেষ করতে পারলেও গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার আমিনবাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন এখনো নির্মাণ করতে পারেনি। ফলে বাধ্য হয়ে একটি মাত্র ইউনিট চালু রাখছে বিসিপিসিএল।

আরও দেখুন

নাটোরে নবাগত ইউএনও’র খাল পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক সিংড়া,,,,,,,,নাটোরের সিংড়ায় খাল পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ নিয়েছেন সদ্যযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলাম। শনিবারসকাল …