নিউজ ডেস্ক:
জৈবিক পদ্ধতিতে মশা নিধনের গবেষণায় সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক হারুনুর রশীদ।
রোববার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার গবেষণার সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ড. আবুল মনসুর।
গবেষক হারুনুর রশীদ জানান, মশা নিয়ন্ত্রণে সফল দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, সারা বছর ধরেই জৈবিক ও রাসায়নিক দমন পদ্ধতির সমন্বিত প্রয়োগের মাধ্যমেই মশা ও মশাবাহী রোগ দমনে সাফল্য এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো সমন্বিত কাজ ছিল না। জৈবিক উপায়ে মশা নিধন করার জন্য তিনি ২০১৭ সালে চট্টগ্রামে একটি গবেষণা করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল মশা নিধনের জন্য (মশক লার্ভা ভক্ষণ) দেশি জাতের কিছু মাছের সঙ্গে বিদেশি জাতের মাছের দক্ষতা তুলনা করা। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি চট্টগ্রামের বিভিন্ন ড্রেনের ও নর্দমার নোংরা পানিতে প্রচুর পরিমাণ ‘মসকুইটো ফিশ’ পেয়েছেন। মাছগুলো নোংরা পানিতে খুব ভালোমতোই বেঁচে থাকতে পারে। তাদের পেট কেটে প্রচুর পরিমাণে মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এই মাছটি কিছুটা আমাদের দেশি দাড়কিনা মাছের মতো দেখতে এবং শহরের অ্যাকোয়ারিয়াম শপগুলোতে বিক্রি হয়ে থাকে।
গবেষক জানান, পরবর্তী সময়ে ‘মসকুইটো ফিশ’ ছাড়াও কিছু দেশি-বিদেশি মাছ ল্যাবরেটরিতে তিনি পরীক্ষা করেন। উদ্দেশ্য ছিল মশার লার্ভা ভক্ষণে তাদের দক্ষতার তুলনা করা। গবেষণায় দেখা গেছে, বিদেশি ‘মসকুইটো ফিশ’ বা গাপ্পির তুলনায় মশক লার্ভা ভক্ষণের ক্ষেত্রে আমাদের দেশি জাতের খলিশা মাছের দক্ষতা প্রায় দ্বিগুণ। লার্ভা দমনের ক্ষেত্রে বিদেশি মাছের তুলনায় দাড়কিনা মাছের দক্ষতাও ভালো পাওয়া গেছে। কিন্তু ড্রেনের বা নর্দমার পানিতে দাড়কিনা মাছ বেশিদিন টেকে না।
পক্ষান্তরে খলিশা শুধু মশার লার্ভা ভক্ষণেই ভালো নয়, এটির ড্রেনের পানিতে অভিযোজন ও টিকে থাকার ক্ষমতাও ভালো। এসব মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন খুবই সহজ। সিটি করপোরেশনগুলো এসব মাছ বদ্ধজলাশয়গুলোতে নিয়মিতভাবে প্রতি বছর অবমুক্ত করতে পারে। তাহলে জলাশয়গুলোতে মশা ডিম ছাড়লে উৎপন্ন লার্ভা খেয়ে দেশি মাছগুলো মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।