বিনোদন ডেস্ক
বহুদিন ধরে সিনেমার মন্দাদশা কাটছে না। লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত না পাওয়ায় দিন দিন কমছে সিনেমার প্রযোজক বা বিনিয়োগকারীর সংখ্যা। যারা আগে নিয়মিত সিনেমা নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তারাও লোকসান গুনতে গুনতে ইন্ডাস্ট্রি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
সিনেমার এমন দুর্দশায় বেকার হয়ে পড়ছেন বহু পরিচালক, ক্যামেরাম্যান, শিল্পীসহ কলাকুশলীরা। এমন ক্রান্তিলগ্নে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রযোজক ও পরিচালক সমিতি। সিনেমা নির্মাণে ব্যয় কমাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি আনছেন নতুন নীতিমালা। ফলে ধারনা করা হচ্ছে, নির্মাণ ব্যয় কমবে প্রায় ৪০ শতাংশ।
এরই মধ্যে চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশন ও চলচ্চিত্র এডিটরস গিল্ড’র মোট দশজন সদস্য নিয়ে গঠন করা হয়েছে ‘চলচ্চিত্র নির্মাণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি’। এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে প্রযোজক নেতা কামাল কিবরিয়া লিপুকে এবং পরিচালক বদিউল আলম খোকনকে করা হয়েছে মহাসচিব।
সিনেমা নির্মাণ ব্যয় কমানো প্রসঙ্গে কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া লিপু ‘দীর্ঘদিন প্রযোজক সমিতির নির্বাচিত কমিটি না থাকায় সিনেমার উন্নয়নে পরিচালক সমিতি একা কোনো উদ্যোগ নিতে পারছিল না। যার ফলে নানা অনিয়ম হতে হতে তা চরম পর্যায়ে চলে গেছে। ফলে সিনেমার ব্যয় বেড়েছে এবং লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ইন্ডাস্ট্রি টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে যাবে। তাই সিনেমা নির্মাণে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও ব্যয় কমাতে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের সহযোগিতায় নতুন নীতিমালা তৈরি করতে যাচ্ছি। আশা করছি এর ফলে কমে যাবে প্রায় ৪০ শতাংশ নির্মাণ ব্যয়।’
‘এরই মধ্যে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি দ্রুতগতিতে কাজ করছে। সকলের সুবিধা ও সিনেমার উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে এই নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।
নীতিমালা তৈরি হওয়ার পর সিনেমাসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসে তা বাস্তবায়ন করা হবে এবং সবাই ঠিকমত নীতিমালা মানছে কিনা সেটা জানার জন্য মনিটরিং সেল তৈরি করা হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া যদি কেউ নীতিমালা না মানে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন।
লিপু আরও বলেন, ‘আগে আমাদের প্রায় ১২শ’ থেকে ১৩শ’ প্রেক্ষাগৃহ ছিল, যা এখন নেমে এসেছে প্রায় দেড়শ’। সিনেমা নির্মাণের বর্তমান ব্যয় যদি কমানো সম্ভব হয় তাহলে অল্প সংখ্যক প্রেক্ষাগৃহ থেকেও লগ্নি ফেরত পাওয়া যাবে। নির্মাণ নীতিমালা বাস্তবায়নের পর প্রেক্ষাগৃহে অনিয়মসহ অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়েও আমরা মাঠে নামবো।’
প্রস্তাবিত চলচ্চিত্র নির্মাণ ব্যয় নীতিমালার কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো:-
• প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে শুটিং শুরু করতে হবে।
• দিনের শুটিং শুরু হবে ঠিক সকাল ১০টায়, অন্য সময় যখন শুটিং থাকবে নির্ধারিত সময়েই তা শুরু করতে হবে।
• শিল্পী ও কলাকুশলীদের সম্মানীর বাইরে যে যাতায়াত ভাড়া দেওয়া হয় তার পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে।
• যাদের সম্মানী ১ লাখ টাকার উপরে তারা কোনও প্রকার যাতায়াত ভাড়া পাবেন না।