নিউজ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। অনেকে অনেক সময় জিজ্ঞেস করেন, ম্যাজিকটা কী? আমি বলি, এটা কোনো ম্যাজিক নয়। ম্যাজিক ফর্মুলাটা হচ্ছে দেশপ্রেম। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ। আমার চিন্তা দেশের মানুষকে দুই পায়ে দাঁড় করিয়ে তাদের স্বাবলম্বী করে তোলা। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অন্যের কাছে হাত না পেতে নিজের পায়ে চলতে হবে। নিজেদের অর্থায়নে কাজ করতে হবে। আমরা আমাদের দেশকে উন্নত করব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।
গতকাল সোমবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’-এর উদ্বোধন এবং এই তহবিল থেকে ‘পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেইনেন্স ড্রেজিং’ স্কিমে অর্থায়নের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় ঋণচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। নিজস্ব তহবিল থেকে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের লক্ষ্য নিয়ে রিজার্ভের উদ্বৃত্ত অর্থ দিয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’-এর যাত্রা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ তহবিলের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ তহবিল থেকে প্রথম অর্থায়ন করা হচ্ছে ‘পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেইনেন্স ড্রেজিং’ প্রকল্পে। সেজন্য এ অনুষ্ঠানে অর্থ বিভাগ, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসলে উন্নয়নটা তখনই হবে দেশটাকে যদি কেউ চিনতে পারে, জানতে পারে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে পারে এবং উন্নতি যে অপরিহার্য দেশটার জন্য, সেটা যদি কারো চিন্তা-চেতনায় থাকে, তখনই সেদেশের উন্নতি সম্ভব। বাংলাদেশের সীমিত সম্পদ, ভৌগোলিক সীমারেখার তুলনায় জনসংখ্যা অনেক বেশি, এদেশে ধারাবাহিক গণতন্ত্র চলেনি, মিলিটারি ডিক্টেটররা কখনো দৃশ্যমান হয়ে আবার কখনো অদৃশ্যভাবে এই রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। ক্ষমতা যুদ্ধাপরাধী আর খুনিদের হাতে থাকলে সেই দেশের কখনো উন্নতি হওয়া সম্ভব না। শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেউ শুধু হয়তো কারো সন্তানকে দুই পায়ে দাঁড় করানোর চিন্তা করবে। আর আমার চিন্তা আমার বাবার কাছ থেকে যেটা শিখেছি, দেশের মানুষকে দুই পায়ে দাঁড় করিয়ে তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। সেটাই হচ্ছে আমার একমাত্র লক্ষ্য।’
‘বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’ গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু এর মধ্যেও আমাদের দেশকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই এই তহবিল গঠন।’ গ্লোবাল ভিলেজে এককভাবে কেউ চলতে পারে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার ডিভিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার।
প্রধানমন্ত্রীকে বঙ্গবন্ধুর
ম্যুরাল উপহার
চীনা দূতাবাসের
বিশেষ প্রতিনিধি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে পিতলের তৈরি একটি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিয়েছেন চীনা রাষ্ট্রদূত। চীন দূতাবাসের পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাত্কালে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ম্যুরাল তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
চীনের রাষ্ট্রদূত তাত্ক্ষণিকভাবে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশকে করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের ১ লক্ষ ডোজও প্রদানের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের শুভেচ্ছা ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেন। প্রধানমন্ত্রী মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল দেওয়ার জন্য চীনা দূতাবাসের নিদর্শনের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।