নিউজ ডেস্ক:
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও মোটরসাইকেল নির্মাণ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারত। গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শির সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প সচিব অনুপ ওয়াধাওয়ান এমন আগ্রহের কথা জানান। আজ সোমবার অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের বৈঠক উপলক্ষে বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন তিনি।
আলোচনাকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মো: মহিদুল ইসলাম, ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো: হাফিজুর রহমান, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী ও ভারতীয় হাইকমিশনের কমার্শিয়াল রিপ্রেজেনটেটিভ প্রমাইয়োশ বসাল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাতের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী পরে সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে দুই দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে নতুন দ্বার খুলে যাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাণিজ্য ক্ষেত্রে চলমান সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে উভয় দেশের বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। যেসব পণ্যের ওপর এ্যান্টি ডাম্পিং আরোপ করা আছে, আলোচনার মাধমে সেগুলোর বিষয়ে যৌক্তিক সমাধান করা হবে। এ ছাড়া ভারতের সাথে ‘কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট’ (সিইপিএ) সইয়ের মাধ্যমে বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানোর কাজ চলছে। আমরা চাই বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তিতে উভয় দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে এমন কিছু করতে, যা উভয় দেশের মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, রেলপথ চালুর ফলে উভয় দেশের বাণিজ্য সহজ হয়েছে। চলমান বর্ডারহাটগুলোতে উভয় দেশের মানুষের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। এ বর্ডার হাটের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে আরো কয়েকটি বর্ডার হাট উদ্বোধন করা হবে।
প্রসঙ্গক্রমে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সাথে পিটিএ এবং এফটিএ সইয়ের মাধ্যমে বাণিজ্য সুবিধা সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ফলে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বাংলাদেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।
বাংলাদেশ-ভারত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ৮টি বিষয়ের ওপর আলোচনা : বাংলাদেশ-ভারত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ৮টি বিষয়ের ওপর আলোচনা হতে পারে। আজ সোমবার ঢাকার হোটেল ইন্টার কনটিনেন্টালে সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য সচিব ড. মো: জাফর উদ্দীন এবং ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে দেবেন ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প সচিব অনুপ ওয়াধাওয়ান। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধা দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানো এ বৈঠকের মূল লক্ষ্য।
বৈঠকের সম্ভাব্য আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছেÑ গত ১৫-১৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত উভয় দেশের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সভার সিদ্ধান্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য বিষয়ে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের ১৩তম সভার অগ্রগতি পর্যালোচনা। দুই দেশের মধ্যকার বিরাজমান ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাণিজ্য বাধা দূরীকরণ। কিছু বাংলাদেশী পণ্যের ওপর ভারত সরকার কর্তৃক আরোপিত এন্টি-ডাম্পিংয়ের বিষয়ে আলোচনা। দুই দেশের মধ্যে ‘কমপ্রিহেনসিপ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট’ (সিইপিএ) সইয়ের বিষয়ে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা; বর্ডার হাটের সংখ্যা বাড়ানো ও সীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি; বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার বন্দর সুবিধা সম্প্রসারণ এবং বাংলাদেশ ও ভারতের অংশগ্রহণে বিভিন্ন আঞ্চলিক ফোরামকে অধিকতর কার্যকরকরণ। এ ছাড়া বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়েও আলোচনা হতে পারে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।