নিউজ ডেস্ক:
দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। দরপত্র জটিলতায় প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর আবেদনকারীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। মুজিববর্ষে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ‘বিশেষ সেবা সপ্তাহ’র প্রথম দিনে গতকাল রবিবার গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জসহ চার জেলায় ড্রাইভিং লাইসেন্সের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শুরু হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তা উদ্বোধন করেন।
গত দুই বছরে ওবায়দুল কাদের একাধিকবার বলেছিলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে না পারায় বিআরটিএর সব অর্জন মøান হয়ে গেছে। বছরখানেক আগে আবেদন ও পরীক্ষায় পাস করেও ড্রাইভিং লাইসেন্স না পাওয়া ব্যক্তিদের ভোগান্তি ছিল চরমে। প্রায় ১৫ লাখ আবেদন জমা পড়েছে বিআরটিএতে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত সেবা সপ্তাহ পালন করবে বিআরটিএ। এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বিভাগীয় পর্যায়েও লাইসেন্স প্রদানের কাজ শুরু করা হবে। লাইসেন্স সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে (ভেন্ডর) সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে বলেছেন মন্ত্রী।
‘ডুয়েল ইন্টারফেস পলিকার্বনেট স্মার্ট কার্ডে’ ছাপা ৪০ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহের কাজ পেয়েছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ‘মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেড’। গত বছরের ২৯ জুলাই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ১২০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের চুক্তি হয় বিআরটিএর। এর সাত মাস পর লাইসেন্স মুদ্রণের কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে ‘টাইগার আইটি’ ২০১৬ সালে পাঁচ বছরে ১৫ লাখ লাইসেন্স সরবরাহের কাজ পেয়েছিল। ২০১৮ সালের আগস্টে নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলনের পর লাইসেন্সের আবেদনকারীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ের আগেই লাইসেন্স ফুরিয়ে যায়। সেবা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিআরটিএর সেবা পেতে এখনো
ভোগান্তি রয়েছে। এখনো দালালদের দৌরাত্ম্য রয়েছে। বিআরটিএর কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে দালালদের সখ্য ও যোগাযোগ রয়েছে। তবে প্রযুক্তির ব্যবহারে তা কমে আসছে। ডিজিটাল সেবার আওতা বাড়ানো গেলে দুর্নীতি ও অনিয়ম অনেকটা কমে যাবে। বদলি ও পদোন্নতির জন্য রাজনৈতিক তদবির বন্ধ করতে হবে বিআরটিএ কর্মকর্তাদের। যারা তদবির করবে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, সড়কে অনিয়ম বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। ফিটনেসবিহীন ও বেপরোয়া গাড়ি বন্ধ করতে হবে। সড়ক পরিবহন সচিব নজরুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেবা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেছেন, লাইসেন্স সমস্যার সমাধান হলো। আর ভোগান্তিতে পড়তে হবে না আবেদনকারীদের। চেয়ারম্যান আশাবাদী, পর্যায়ক্রমে সব সার্কেলে লাইসেন্স প্রদানের কাজ শুরু যাবে। নির্ধারিত তারিখে আবেদনকারীদের লাইসেন্স দেওয়া সম্ভব হবে।
মতপ্রকাশ মানে যা খুশি বলার অধিকার নয় : আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দি অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু দুঃখজনক। তদন্তে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা যেমন জরুরি, তেমনি এ আইনের অপপ্রয়োগ যাতে না হয়, সে বিষয়ে সরকার সচেষ্ট। সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। কিন্তু স্বাধীনতা মানে যার যা খুশি বলার নিরঙ্কুশ বা একচেটিয়া অধিকার নয়। অন্যের মতামতকে সম্মান জানানোও মতপ্রকাশের সীমানাভুক্ত। মুশতাকের মৃত্যুতে যারা ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন’ তাদের বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।ড্রাইভিং লাইসেন্সের জট খুলেছে