বিশেষ প্রতিবেদক:
কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না নাটোরে ধান চালের বাজার। এ বছর রাজশাহীতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৩ হাজার ৯৮১ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে এবারের ধানের উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। প্রতি হেক্টরে ৫ দশমিক ৪৭ হেক্টর ধান উৎপাদিত হবে। সেই হিসাবে নাটোরে এবার ধানের ফলন হবে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৬০ মেট্রিক টন।
অন্যদিকে নাটোরে চলতি মৌসুমে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫ হাজার ৫৬৯ হেক্টর জমিতে, চাষ হয়েছে ৬৯ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে ফলন নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন, তবে প্রতি হেক্টরে উৎপাদিত হচ্ছে ৩ দশমিক ২০ মেট্রিক টন হারে। নাটোরে গত ১৫ দিনের ব্যবধানে মোটা ও চিকন—সব ধরনের চাল কেজিতে অন্তত পাঁচ টাকা বেড়েছে। আর নাটোরে গত তিন দিনে চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২ টাকা।
নাটোরের পাইকারি বাজারে বিআর-২৮ জাতের চালের ৫০ কেজির একটি বস্তা ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন বস্তাপ্রতি ২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। একই চালের ৮৪ কেজির বস্তা বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৬০০ টাকায়। গতকাল পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়। মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা ৩০০ টাকা আর বাসমতী ৫০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।
এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। নাটোরের বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে চালের মূল্যবৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া যায়। নাটোরের খুচরা বাজারে মিনিকেট ৫৮, ছাঁটা মিনিকেট ৬০ ইরি–২৮ চাল ৫৪, কাঠারী ৬০ থেকে ৬২, একই দামে বিক্রি হচ্ছে শম্পা কাঠারী। আর গুটি চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫টাকা কেজি দরে। নাটোরের ব্যবসায়ীরা কৃষকদের ধান মজুদকে দায়ী করেছেন।
নাটোরের কানাইখালী চালের বাজারের মিতালি রাইস এজেন্সির মালিক হারুন অর রশীদ জানান, চাল আমদানি না হওয়া এবং কৃষকদের মজুদের ফলে বাজারেও কিছু দাম বাড়ছে।
তবে এই বাজারে চাল কিনতে আসা এক ক্রেতা জানান, কৃষকরা বলছেন তারা ধানের দাম পাচ্ছেন না অপরদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন তাদের অতিরিক্ত দামে ধান কিনতে হচ্ছে। অন্যান্য চালের দাম বাড়ার পেছনে কোনো কারণ নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ালেও এটি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা নেই। কারণ, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আমদানিকৃত চাল এসে পড়লেই পুরোদমে নতুন চাল বাজারে আসবে। তখন দাম কমবে।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান, গতকাল পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার পুরোপুরি রোপা ও আমন ধান কাটা হয়েছে। ধানের দাম সন্তোষজনক থাকায় এতে কৃষকরা এবার বেশি লাভবান হচ্ছে। এর মধ্যে অল্প করে নতুন চাল বাজারে উঠছে। ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে পুরোদমে নতুন চাল বাজারে চলে আসবে।
তাহলে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণ সম্পর্কে, তিনি আরো তিনি চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কোনো কারণ নেই। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী গুজব ছড়িয়ে চালের দাম বাড়াচ্ছে।
জানান, ২০১৯-২০ উৎপাদন বর্ষে প্রতি কেজি চালের উৎপাদন খরচ দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকার উপরে। সরকারি খাদ্যগুদামে চাল কেনা হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৭ টাকা দরে। ভোক্তা ও উৎপাদকদের স্বার্থ বিবেচনা করেই এ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।