নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ৫০টি মডেল মসজিদের। সেই লক্ষ্যে মসজিদ নির্মাণের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। আওয়ামী লীগের ২০১৪ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নতমানের মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি ছিল। সে আলোকে সরকারি অর্থায়নে মসজিদগুলো নির্মিত হচ্ছে। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রকল্পের আওতায় দেশের নয়টি স্থানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর শুরু হয় নির্মাণকাজ। আগামী মার্চে ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন হলেও বাকিগুলোর কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। তবে নানা জটিলতায় পুরো মসজিদ প্রকল্পের কাজ শেষ সময় আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
প্রতিটি মডেল মসজিদে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা ছাড়াও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। জেলা সদরে নির্মিত মসজিদগুলো হচ্ছে চারতলা এবং উপজেলায় হচ্ছে তিনতলা কমপ্লেক্স। এর মধ্যে নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক অজুর স্থান, লাইব্রেরি ও গবেষণাকেন্দ্র, শিশুশিক্ষা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, অতিথিশালা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন কেন্দ্র ও ইমামদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। জমির ধরনভেদে প্রতিটি মসজিদ নির্মাণের জন্য ব্যয় হচ্ছে ১২-১৬ কোটি টাকা। ৫৬০টি মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে ৪০০টির কাজ শুরু হয়েছে। বাকি ১৫৫টি মসজিদ নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। পাঁচটি মসজিদের ভূমি নিয়ে আদালতে মামলা থাকায় অধিগ্রহণ শেষ করতে পারেনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ২০২১ সালের ১৭ মার্চের আগেই ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করতে চায় সরকার। ৫০টি মসজিদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের সাভার, ফরিদপুরের মধুখালী, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, পাকুন্দিয়া ও কটিয়াদী, মানিকগঞ্জের শিবালয়, রাজবাড়ী সদর, শরীয়তপুর সদর ও গোসাইরহাট উপজেলা রয়েছে।
এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগের বগুড়ার সারিয়াকান্দি, শেরপুর ও কাহালু, নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা, পাবনার চাটমোহর, সিরাজগঞ্জ জেলা ও উপজেলা সদর এবং রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলার মসজিদ মার্চে উদ্বোধন করা হবে। এর বাইরে রংপুর বিভাগের দিনাজপুরের খানসামা ও বিরল, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, পঞ্চগড় সদর ও দেবীগঞ্জ, রংপুরের জেলা ও উপজেলা সদর, মিঠাপুকুর, পীরগঞ্জ ও বদরগঞ্জ এবং ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার মডেল মসজিদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর সদর উপজেলা এবং ময়মনসিংহের তারাকান্দা ও গফরগাঁও উপজেলার মসজিদ মার্চে উদ্বোধন করা হবে। বরিশাল বিভাগের ভোলা সদর ও ঝালকাঠির রাজাপুরে মসজিদ নির্মাণের কাজ শেষের দিকে। চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলা সদর, লোহাগাড়া, মিরসরাই ও সন্দ্বীপ, কুমিল্লার দাউদকান্দি, খাগড়াছড়ির পানছড়ি এবং নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মসজিদের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে।
খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা ও খুলনা জেলা সদর এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মসজিদও উদ্বোধন হবে মার্চে। এ ছাড়া সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মডেল মসজিদটির উদ্বোধন করা হবে মার্চে।
মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এবং গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. নজিবর রহমান জানিয়েছেন, ‘মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ৫০টি মডেল মসজিদ মার্চের মধ্যে উদ্বোধনের লক্ষ্যে কাজ চলছে। এ সময়ের মধ্যে মসজিদগুলোর কাজ শেষ হবে। এর বাইরে ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত ৪০০ মসজিদ নির্মাণের কাজ শেষ হবে। বাকিগুলো একটু বিলম্ব হতে পারে।’
মডেল মসজিদগুলো হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। উপকূলীয় এলাকায় নিচতলা উন্মুক্ত রেখে ভবন নির্মিত হবে। অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী মুসল্লিদের জন্য আলাদা র্যাম্প থাকবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত্ব হলে ৪ লাখ ৪০ হাজার ৪৪০ পুরুষ এবং ৩১ হাজার ৪০০ জন নারীর নামাজ পড়ার সুযোগ হবে।
আরও দেখুন
পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!
নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …