সোমবার , ডিসেম্বর ২৩ ২০২৪
নীড় পাতা / ই-লার্নিং / বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন হাট-বাজারে পরিণত না হয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরোনো ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন হাট-বাজারে পরিণত না হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হাট-বাজারের মতো পরিবেশ সৃষ্টি না করে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বাঁধ, সেতু, কালভার্ট সংক্রান্ত যেকোনো প্রকল্পের কাজ শীতের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, করোনা মহামারিতে তাঁর সরকার সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ায়, বিশেষ করে সময়মতো প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করায় দেশের অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা অংশ নেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই স্বকীয়তা নিয়ে থাকে। সেখানে ব্যাপক গবেষণা হতে হবে। সেসব গবেষণা বেশি বেশি প্রকাশের ব্যবস্থাও নিতে হবে।

একনেক সভায় ময়মনসিংহের ত্রিশালে ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পটি সংশোধিত আকারে অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, ‘ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবির নামে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়েছে। তাই এটির মানসম্মত শিক্ষার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেশি বেশি গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। এ জন্য অর্থ কোনো সমস্যা নয়। প্রয়োজনে আমি নিজেই টাকার ব্যবস্থা করব। তবে এখন যেটা দেখা যাচ্ছে, গবেষণায় টাকা বরাদ্দ থাকে; কিন্তু খরচ হয় না।’ তা ছাড়া সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে না বাড়ানোর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় বানাব। কিন্তু অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় শহর হয়ে যায়। হাজার হাজার শিক্ষার্থী এক জায়গায় পড়াশোনা করে। এতে পড়াশোনার মান রক্ষা সম্ভব হয় না। শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা নিয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি কাজ করছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ট্র্যাকিং করা হবে। মাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। যেহেতু জাতীয় কবির নামে বিশ্ববিদ্যালয়, এটাকে আলাদা মর্যাদায় নিয়ে যেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় যেন বাজার হয়ে না যায়।’

সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাঁধ, সেতু, কালভার্ট সংক্রান্ত যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে শীতের মধ্যেই, যাতে বর্ষাকাল পর্যন্ত না গড়ায়। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য নেওয়া কয়েকটি প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছিলেন। ফলে তাঁদের কাছ থেকে অনুদান পাওয়ার বিষয়টি সহজ হয়েছে। রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে আসার পর স্থানীয় জনগণের অনেক অসুবিধা হয়েছে। তাই এ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে, যেগুলো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি স্থানীয় জনগণেরও উপকারে আসবে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, করোনাকালে সরকার সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে। কত টাকা আছে, কী আছে, সেটা সরকার চিন্তা করেনি। বর্তমান দুঃসময়ে অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখতে বেশি জোর দিয়েছে সরকার। মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ, যারা কোনো কাজ না থাকলে তাদের জীবনটা চালানোই মুশকিল। তাদেরও নগদ অর্থ দিয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদের কাছে টাকা পৌঁছাতে পেরেছি। সময়মতো আমরা যে টাকাটা দিলাম, নগদ এবং প্রণোদনা দিলাম, এই টাকাই ব্যবসাকে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।’ কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিকে গুরুত্ব দিতে হবে। খাদ্য উৎপাদনটা বাড়াতে হবে, মানুষের যাতে খাদ্যের কষ্ট না হয়।

গতকালের একনেক সভায় রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেওয়া একটি প্রকল্পসহ মোট চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে এক হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৭৪০ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ৯১৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—এক হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় মাল্টিসেক্টর প্রকল্প এবং ৮৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।

আরও দেখুন

পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!

নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …