আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের সীমিত সম্পদ দিয়েই রাষ্ট্রের জ্বালানি নিরাপত্তার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একজন স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি নিজে স্বপ্ন দেখতেন এবং জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নও করেছেন।
শুক্রবার দলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, জ্বালানি নিরাপত্তা ও বর্তমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মাহবুব উল আলম হানিফ তার বাসা থেকে ওয়েবিনারের ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় যোগদান করেন।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে ও উপ-কমিটির সদস্য মোঃ রনক আহসানের পরিচালনায় এতে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশী মোঃ আবদুস সবুর, বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ অঞ্জন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি সংস্থা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ কামরুজ্জামান খান, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড সংস্থা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ তৌফিকুর রহমান তপু, তিতাস গ্যাস ঢাকার মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল ওয়াহাব তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পৃথিবীতে অনেক রাজনৈতিক নেতা ছিলেন যারা অনেক সময় স্বপ্ন দেখিয়েছেন, কিন্তু সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেননি। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদের যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তা বাস্তবায়নও করেছেন। জাতির পিতা যে কত দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতা ছিলেন তা উঠে এসেছে তাঁর কর্মকা-ের মাধ্যমে। স্বাধীন রাষ্ট্রে সীমিত সম্পদের মধ্যেই তিনি দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
আবদুস সবুর বলেন, বঙ্গবন্ধু জ্বালানি নিরাপত্তায় প্রথম আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথ দেখিয়েছিলেন। দেশের অর্থনৈতিক ভিতকে মজবুত করতে ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট বহুজাতিক কোম্পানি শেল ওয়েলের কাছ থেকে দেশের ৫টি গ্যাসক্ষেত্র কিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, গোটা উন্নয়নশীল বিশ্বের একমাত্র সরকারপ্রধান, যিনি জ্বালানি নিরাপত্তা বিষয়কে জাতীয় নিরাপত্তার সমার্থক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাদ দিয়ে দেশের অগ্রগতি হবে না- নৌ প্রতিমন্ত্রী ॥ নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও দর্শনকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের কোন অগ্রগতি হতে পারে না। বঙ্গবন্ধুকে সব বিতর্কের উর্ধে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, ইতিহাসকে বাদ দিয়ে পথ চলা যায় না।
শুক্রবার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাহজাহান সরদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ, সিনিয়র সাংবাদিক শাহনেওয়াজ দুলাল প্রমুখ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সব বিতর্কের উর্ধে রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোন বিতর্ক করার প্রয়োজন নেই। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তখনই বিতর্ক হয়, যখন বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের লালন-পালন করা হয়। বিতর্ক তখনই হয়, যখন এই খুনীদের পুনর্বাসন করা হয়, যখন আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। এই বিতর্ক থেকে যতদিন আমরা বেরিয়ে আসতে পারব না; ততদিনই আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর যেই স্বপ্ন, ৩০ লাখ শহীদদের যেই স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন এখানে বাস্তবায়ন হবে। রাজাকার, আলবদর, আল-শামসদের স্বপ্ন এই বাংলাদেশে বাস্তবায়ন হতে পারে না। বঙ্গবন্ধুর প্রতি এটাই আমাদের ওয়াদা থাকবে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুই একমাত্র নেতা যিনি একটি রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করেছেন। পাকিস্তানের কায়েদে আজম কিন্তু মুসলিম লীগ সৃষ্টি করেন নাই। তিনি মুসলিম লীগে যোগদান করেছেন। মহাত্মা গান্ধী কিন্তু কংগ্রেস প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন নাই, তিনি কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সৃষ্টির সঙ্গে ছিলেন এবং সেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে তিনি বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছেন।
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময়েও এখানকার কিছু মানুষ বিরোধিতা করেছে। নিজ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের মানুষের বিরোধিতা করার ঘটনা দ্বিতীয়টি আমার জানা নেই। সেই অংশটি এখনও বাংলাদেশের বিরোধিতা করছে। তারা বিভিন্নভাবে বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার চেষ্টা করে। ১৫ আগস্টের পর জিয়াউর রহমান গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নাম ছাপাতে দেয় নাই।
সূত্র: চাঁপাইনবাবগঞ্জ