নারদ বার্তা পরিবর্তনের অঙ্গিকার নিয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর:
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক সংঘর্ষে এক ইউপি সদস্যসহ উভয় পক্ষের দুইজন নিহত ও দশজন আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে ২৬ আগস্ট বুধবার সকালে উপজেলার রাজনগর গ্রামে।
নিহতরা হলেন, ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বনগাঁও গ্রামের জয়নাল আবদীন (৬০) ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পশ্চিম রাজনগর গ্রামের রিয়াজুল হক (৫০)। এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আরো দশজন আহত হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, রাজনগর গ্রামের আব্দুস সালাম ও রিয়াজুল হকের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বেশকিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ওই জমি নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা মোকদ্দমাও চলমান রয়েছে। রিয়াজুল হক চলতি মৌসুমে তর্কিত জমিতে রোপা আমন ধানের চারা রোপণ করে। ঘটনার দিন বুধবার সকাল সাড়ে ৮ টায় আব্দুস সালামের লোকজন ওই জমি দখল করতে গেলে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের বারোজন আহত হয়। আহতদের শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুস সালামের পক্ষের ইউপি সদস্য জয়নাল আবদীন ও অপর পক্ষের প্রধান রিয়াজুল হকের মৃত্যু হয়।
ইউপি সদস্য জয়নাল আবদীনের মৃত্যুর সংবাদ শুনে তার মা জয়নবী বেগম (৮০)’র মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) বিল্লাল হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নালিতাবাড়ী (সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম, নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশির আহমেদ বাদল, ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিকসহ জেলার অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে শেরপুর, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে উভয় পক্ষের ৭ জনকে গ্রেফতার করে। নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ নিহতদের সুরৎহাল ডায়েরীভুক্ত করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান।
অপরদিকে ছেলের মৃত্যুর সংবাদে মায়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্যে জয়নবী বেগমের মরদেহ পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্যে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতদের লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এদিকে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতন। নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশির আহমেদ বাদল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উভয় পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
