রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪
নীড় পাতা / সাহিত্য ও সংস্কৃতি / ইতিহাস ও ঐতিহ্য / বাংলাদেশে ওরা আদিবাসী নয়: ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী

বাংলাদেশে ওরা আদিবাসী নয়: ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী

অধ্যাপক মাহফুজ আহমেদ:

পৃথিবীর অনেক দেশের সাথে বাংলাদেশে প্রতি বছরের মতো এ বছরও আগামীকাল ১ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হবে। অস্ট্রেলিয়ান এরিজিন, যুক্তরাষ্ট্রের রেড ইন্ডিয়ান, নিউজিল্যান্ডের মাউরি, দক্ষিণ আমেরিকার ইনকা ও মায়া, জাপানের আইন, রাশিয়ার মােনেট, ফ্রান্স ও স্পেনে বাসকু, আরব বেদুইন প্রভৃতি জনগােষ্ঠী প্রাচীন কাল থেকেই আদিবাসী হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। বাংলাদেশে আদিবাসী কারা-এই নিয়েও একটি বিতর্ক ইদানীং চালু হয়েছে। বাংলাদেশের জনগােষ্ঠীর যে অংশটি নিজেদের হঠাৎ আদিবাসী বলে দাবি করতে শুরু করছে তারা কিন্তু কয়েক বছর আগেও নিজেদের এ পরিচয়ে পরিচিত করাতে চায়নি। তারা দীর্ঘ দিন ধরে উপজাতি, ক্র জাতিসত্া অথবা নিজস্ব লােএ পচিয়েই পরিচিত হবার দাৰি করে আসছিল। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে জাতিসংঘ সদর দপ্তর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ৬১তম অধিবেশনে The United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples অর্থাৎ আদিবাসী জনগােষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক খােষণাপত্র জারিওয়ার পর হঠায করে তারা নিজেদের আদিবাসী বলে দাবি করতে শুরু করেন। এরকম হঠাৎ করে আদিবাসী হতে চাওয়ার নজির বিশ্বে আর কোথাও নেই। ইস্যুটি পুরাতন না হলেও তা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস, অখ-তা ও সার্বভৌমত্বের উপর প্রভাব ফেলেছে যে বিষয়টি সবচেয়ে ভয়ংকর এবং আত্মঘাতী ৩া হচ্ছে আমাদের মিডিয়া ও সুশীল সমাজের একটি অংশের জোরাল সমর্থন ও আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপােষকতা পেয়ে তারা ইতােমধ্যে বিষয়টিকে মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী সরকার তাদের দাবির কাছে কিছুটা নমনীয় হয়ে বাংলাদেশের সংবিধানে এ সকল জাতিসত্ত্বাকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আর এই সুযােগে তফসিলী সম্প্রদায় ভুক্ত জনগোষ্ঠীও (যারা উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হওয়ার বৈশিষ্ট্যধারী নয়) ক্ষুদ্র নৃগােষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে গেছে। অথচ এ সকল জনগােষ্ঠীর মূল অংশ ভারতে এখনাে সাংবিধানিকভাবে তফসিলী সম্প্রদায় (Schedule Cast) হিসেবে চিহ্নিত, পরিচিত ও সুবিধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। আদিবাসীর সংজ্ঞা ও জাতিসংঘ কনভেনশনঘােষণাআদিবাসী বিতর্কের সমাধানে প্রথমেই আমাদের আদিবাসীর সংজ্ঞা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। আদিবাসী বিষয়ে দুই ধরনের সংজ্ঞা পাওয়া যায়। একটি আভিধানিক সংওয়া এবং অন্যটি জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত সংজ্ঞা। প্রথমেই দেখা যাক আভিধানিক সংজ্ঞায় আদিবাসী মানে কী? আদিবাসী শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Indigenous People, অনেকে আবার আদিবাসী শব্দের প্রতিশব্দ হিসেবে Aborigine

শব্দটি ব্যবহার করেন। যাতে প্রকৃতপক্ষে সার্বজনীনভাবে আদিবাসী বােঝায় না। Aborigine বলতে সুনির্দিষ্টভাবে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের বােঝায়। a a T Aborigine শব্দের অর্থ বলা হয়েছে, A person, animal or plant that has been in a country or region from earliest times; An aboriginal inhabitant of Australia. একইভাবে Red Indian বলতে যুক্তরাষ্ট্রের আদিবাসীদের বােঝায়; অস্ট্রেলিয়ান এবরিজিন বা আদিবাসীদের বােঝায় না। এ ছাড়াও বিভিন্ন ডিকশনারিতে আদিবাসী বিষয়ে যে সকল সংজ্ঞা ও প্রতিশব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তা হচ্ছে: Aboriginal: earliest, primitive, a member of a race of people who were the original living in a country, specially Australia.aIT fafen fea indigenous- oR indigenous: belonging to a particular place rather than coming to it from somewhere else. b f a indigenous, Native born, originating or produced naturally in a country, not imported. এখানে Indigenous শব্দের বিপরীত শব্দ হিসেবে exotic শব্দটিকে ব্যবহার করা হয়েছে যার অর্থ হচ্ছে বহিরাগত। আভিধানিকভাবে আদিবাসী শব্দের অর্থ দেশি, স্বদেশজাত বা ভূমিপুত্র। একইভাবে বাংলা একাডেমির অভিধানে Indigenous শব্দের অর্থ বলা হয়েছে: দেশি, দৈশিক, স্বদেশীয়, স্বদেশজাত। কোলকাতা থেকে প্রকাশিত সংসদ অভিধানে indigenous শব্দের অর্থ হিসেবে বলা হয়েছে: স্বদেশজাত, দেশীয় । অন্যদিকে নৃতাত্ত্বিক সংজ্ঞায় আদিবাসী হচ্ছে কোনাে অঞ্চলের আদি ও অকৃত্রিম ভূমিপুত্র বা Son of the Soil. প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ মর্গানের সংজ্ঞানুযায়ী আদিবাসী হচ্ছে কোনাে স্থানে স্মরণাতীতকাল থেকে বসবাসকারী আদিমতম জনগােষ্ঠী যাদের উৎপত্তি, ছড়িয়ে পড়া এবং বসতি স্থাপন সম্পর্কে বিশেষ কোনাে ইতিহাস জানা নেই।

এখন দেখা যাক জাতিসংঘ উপজাতি ও আদিবাসীর সংজ্ঞা কীভাবে নির্ধারণ করেছে। উপজাতি ও আদিবাসী বিষয়ে জাতিসংঘ ও এর অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে এ পর্যন্ত প্রধানত তিনটি চার্টাৱেৱ অক্তিত্ব পাওয়া যায়। (১) জাতিসংঘের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার International Labour Organization (ILO) Sae4 TE e afee 800 facH swe Indigenous and Tribal Populations Convention-1957 (No.107); (২) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ১৯৮৯ সালের ৭ জুন অনুষ্ঠিত ৭৬তম অধিবেশনে প্রদত্ত Indigenous and Tribal Populations Convention-1989 (No.169) এবং (৩) ২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ৬১তম অধিবেশনে The United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples ft afete dies ouউপর্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রথম চার্টার দুটি (No.107 ও No.169) বিশেষভাবে লক্ষণীয় যাতে আদিবাসী ও উপজাতি বিষয়ক স্বার্থসংশ্রিষ্ট বিষয়গুলাে সংযােজন করা হয়েছে। এই কনভেনশন দুটিতে উপজাতি ও আদিবাসীদের জন্য আলাদা সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে। কনভেনশনে পাস হওয়া ধারাগুলাে একই সাথে আদিবাসী ও উপজাতি নির্ধারণ এবং তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে। শুধু আদিবাসীদের নয়। অথচ বাংলাদেশে এই চার্টারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একান্তভাবে আদিবাসীদের হিসেবে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে ২০০৭ সালের The United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples-শীর্ষক ঘােষণাপত্রটি শুধুমাত্র আদিবাসীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে। এই ঘােষণাপত্টিতে উপাতিদের বিষয়ে কোনাে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। এমনকি আদিবাসীদের সংজ্ঞাও নির্যারণ করা হয়নি।

উপর্যুক্ত দুটি সংজ্ঞা পর্যালােচনা করলে বােঝা যায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক উপজাতি ও আদিবাসী সংজ্ঞার মূল পার্থক্য হচ্ছে নির্দিষ্ট রাষ্ট্রে বংশানুক্রমে বসবাস বা অধিকৃত হওয়ার বা উপনিবেশ সৃষ্টির পূর্ব থেকে বসবাস করা। বাকি শর্তগুলাে মােটামুটি একই রকম। অর্থাৎ একটি জনগােষ্ঠী উপজাতি অথবা আদিবাসী হবেন উপর্যুক্ত শর্তের ভিত্তিতে। আইএলওর এই সংজ্ঞাটি যদি বাংলাদেশের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগােষ্ঠীর জনগণের ক্ষেত্রে বিচার করা হয় তাহলে পরিষ্কার বােঝা যায় এরা আদিবাসী নয়; উপজাতি। কিন্তু বাংলাদেশের মিডিয়া ও সুশীল সমাজের কিছু ব্যক্তিবর্গ জাতিসংঘ কনভেনশনের উপস্থাপিত সংজ্ঞাটির Tribal বা উপজাতি অংশটি সম্পূর্ণ চেপে গিয়ে শুধু Indigenous বা “আদিবাসী র সংজ্ঞাটি উপস্থাপন করেন।এখন পর্যবেক্ষণ করা যাক, বাংলাদেশের জন্য ২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬১তম অধিবেশনের United Nation Declaration on the Rights of Indigenous Peoples বা ‘আদিবাসী জনগােষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক ঘােষণাপত্র, প্রযােজ্য কিনা। ঘােষণাপত্রটির উদ্দেশ্য মহৎ হলেও এটি অনেক ক্ষেত্রে সংগতিপূর্ণ নয় এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতা বা সার্বভৌমত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে এর গ্রহণযোগ্যতা অনেক ক্ষেত্রেই প্রশ্নবিদ্ধ এবং এই ঘােষণাপত্রের নিম্নোক্ত ধারাগুলো বিশেষভাবে অধ্যয়ন করা প্রয়ােজন :

Article 3: Indigenous peoples have the right to self-determination. By virtue of that right they freely determine their political status and freely pursue their economic, social and cultural development. s a HCis অধিকার রয়েছে সেই অধিকার বলে তারা অবাধে তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা নির্ধারণ করে এবং অবাধে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সংস্কৃতিককর্ম প্রয়াস অব্যাহত রাখতে পারবে।Article 4: Indigenous peoples, in exercising their right to self-determination, have the right to autonomy or self government in matters relating to their internal and local affairs, as well as ways and means for financing their autonomous functions. অর্থাৎ আদিবাসী জাতিগােষ্ঠী আত্মনিয়ন্ত্রাধিকার চর্চার বেলায় তাদের অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়ের ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসন বা স্বশাসিত সরকারের অধিকার রয়েছে এবং তাদের স্বশাসনের কার্যাবলীর জন্য অর্থায়নের পন্থা ও উৎসের ক্ষেত্রেও অনুরূপ অধিকার থাকবে।

Article 5: Indigenous peoples have the right to maintain and strengthen their distinct political, legal, economic, social and cultural institutions, while retaining their right to participate fully, if they so choose, in the political, economic, social and cultural life of the State. অর্থাৎ আদিবাসী জাতিগােষ্ঠী যদি পছন্দ করে তাহলে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশ গ্রহণের পূর্ণ অধিকার রেখে আদিবাসী জাতিগােষ্ঠীর স্বতন্ত্র রাজনৈতিক, আইনী, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অক্ষু্ন রাখা ও শক্তিশালী করার অধিকার থাকবে।Article 10: Indigenous peoples shall not be forcibly removed from their lands or territories. অর্থাৎ আদিবাসী জাতিগােষ্ঠীকে তাদের ভূমি বা ভূখণ্ড থেকে জবরদস্তিমূলকভাবে উৎখাত করা যাবে না।Article 20 : 1. Indigenous peoples have the right to maintain and develop their political, economic and social systems or institutions. অর্থাৎ আদিবাসী জাতিগােষ্ঠী তাদের জীবন-জীবিকা উন্নয়নের নিজস্ব ধারা নিশ্চিত করার জন্য এবং তাদের ঐহ্যিগত ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্বাধীনভাবে নিযুক্ত থাকার জন্য তাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থা বা প্রতিষ্ঠান বজায় রাখা ও উন্নয়নের অধিকার থাকবে।

Article 30 : 1. Military activities shall not take place in the lands or territories of indigenous peoples, unless justified by a relevant public interest or otherwise freely agreed with or requested by the indigenous peoples concerned. ie জনগােষ্ঠীর ভূমি কিংবা ভুখশ্ডে সামরিক কার্যক্রম হাতে নেওয়া যাবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত উপযুক্ত জনস্বার্থের প্রয়োজনে যুক্তিগ্রাহ্য হবে, অন্যথায় যদি সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠী স্বেচ্ছায় সমিতি স্থাপন বা অনুরােধ করে।উপরােক্ত ধারাগুলাে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে United Nation Declaration on the Rights of Indigenous Peoples বা আদিবাসী জনগােষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক ঘােষণাপত্র অনুসারে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর তাদেরকে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার, স্বতন্ত্র তথা স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। এমনকি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি তারা মনে করে যে তারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রে থাকবে না বা ভারতেও যােগ দেবে না; তবে তারা স্বাধীন রাষ্ট্র স্থাপন করতে পারবে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রে থাকলেও তারা যে অঞ্চলে করে সেই অঞ্চলের ভূমির মালিকানা বাংলাদেশের হবে না এবং সে অঞ্চলে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী কোনাে কার্যক্রম পরিচালনা তে পারবে না। তারা আত্মনিয়ন্ত্রণ, স্বায়ত্তশাসন, স্বশাসিত সরকার ও তাদের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক, সামাজিক, সংস্কৃতি ও আইনী কার্যক্রম এবং তা পরিচালনার জন্য স্বনিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু করতে পারবে। উক্ত বিষয়গুলাে নিশ্চিত হলে প্রকারান্তরে তা এই অঞ্চলের উপর বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ খর্ব করবে।

indigenous and Tribal Populations Convention-1957 (No.107) ১৯৫৭ সালে পাস হলেও এ পূর্যন্ত বিশ্বের মাত্র ২৭টি দেশ এই কনভেনশনটি র্যাটিফাই করেছে। ১৯৭২ সালের ২২ জুন বাংলাদেশও কনভেনশন ১০৭ ব্যাটিফাই করেছিল। পরে কনভেনশন ১৬৯ পাস হওয়ার পর পূর্বোক্ত কনভেনশন ১০৭ তামাদি হয়ে গেছে এবং বাংলাদেশ অদ্যাবধি কনভেনশন ১৬৯ র্যাটিফাই করেনি। তাই এটি আমাদের দেশের জন্য অবশ্য পালনীয় নয়। এখানে লক্ষণীয় যে এরই মধ্যে ৮টি দেশ এই কনভেনশনকে নিন্দা করে তা থেকে বেরিয়ে গেছে। অন্যদিকে Indigenous and Tribal Populations Convention-1989 (No.169), ১৯৮৯ সালে পাস হলেও এখন পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র ২২টি দেশ এই কনভেনশনটি র্যাটিফাই করেছে। এই উপমহাদেশের একমাত্র নেপাল ছাড়া আর কোনাে দেশ এই কনভেনশনটি র্যাটিফাই করেনি।অন্যদিকে, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে জাতিসংঘের ৬১তম অধিবেশনে আদিবাসী বিষয়ক যে ঘােষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে ভােটদানের সময় ১৪৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে, ৪টি দেশ বিপক্ষে, ১১টি দেশ বিরত এবং ৩৪টি দেশ অনুপস্থিত থাকে। বাংলাদেশ তােটদানে বিরত থাকে। বিরুদ্ধে ভােট দেওয়া দেশগুলাে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র।বিস্ময়কর অথবা পরিহাসের ব্যাপার হলাে, বাংলাদেশের তথাকথিত আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় খুব সােচ্চার ও পৃষ্ঠপােষক দেশগুলাের বেশিরভাগই কিন্তু নিজ দেশের জন্য আইএলও কনভেনশন ১০৭ বা ১৬৯ ও জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘােষণা পত্রের সিগনেটরি নয়, পক্ষে ভােট দেয়নি এবং র্যাটিফাইও করেনি। কাজেই তাদের কুঞি বর্ষণের কারণ ও মতলব বুঝতে সায়েন্টিস্ট হওয়ার প্রয়ােজন নেই। এসব সামরাজ্যবাদী শক্তিগুলাের উপজাতি, আদিবাসী কিংবা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য এই মায়াকাশ্নার পেছনে মূলত ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সর্বোপরি আধিপত্যবাদী স্বার্থই প্রকাশ্যে কিংবা অবচেতনে প্রবলভাবে কাজ করেছে-একপা নির্দ্বিধায় বলা যায়।তাহলে বাংলাদেশে সত্যিকার আদিবাসী কারা নিঃসন্দেহে বাঙালি ও বাংলা ভাষাভাষীরা এদেশের সত্যিকারের আদিবাসী। কারণ তারাই প্রােটো অস্ট্রোলয়েড (Proto Astroloid) নামে আদি জনধারার অংশ এবং তারাই একমাত্র আদিবাসী বা Son of the Soil বলে দাবি করতে পারে। এর পেছনে জাতিতাত্ত্বিক নতাত্ত্বিক ও বৈজ্ঞানিক যুক্তি প্রমাণও রয়েছে। বাংলাদেশের এই অঞ্চলে বাঙালিরা বসবাস করে আসছে চার হাজার বছরেরও পূর্বে থেকে। বিক্রমপুর, ওয়ারি-বটেশ্বর, সােনারগা কিংবা মহাস্থানগড় থেকে প্রাপ্ত নৃতান্ত্বিক প্রমাণাদি এসব বিষয় নিশ্চিত করে। নতাত্ত্বিক ও জাতিতাত্ত্বিক

ইতিহাস বিশ্লেষণে দিবালােকের মতাে সুল্ট ও প্রতিষ্ঠিত যে, বাংলাদেশে বসবাসরত কোনাে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এ দেশের আদিবাসী নয় বিশ্বের তাবৎ শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী এবং গবেষণাকারী এ ব্যাপারে একমত।অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান উপজাতি চাকমাদের আদি বাস্থান ছিল আরাকান, ত্রিপুরাদের আদি বসবাস ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে এবং মারমা জনগােষ্ঠী এসেছে বার্মা থেকে। সেই অর্থে তারা কেউই বাংলাদেশের আদিবাসী নয় বরং অভিবাসী। তারা বিভিন্ন হান থেকে দেশান্তরী হয়ে এদেশের নানা জানে অভিবাসিত হয়ে আনুমানিক তিনশ থেকে পাঁচশ বছর পূর্ব থেকে বাংলাদেশ ভূখন্ডে বসবাস করতে শুরু করেছে। তাই কোনােক্রমেই বাংলাদেশে কসবাসকারী চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এদেশের আদিবাসী হতে পারে না।বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নুগােষ্ঠীুলাে যে আদিবাসী নয় তার প্রমাণ বাংলাদেশের উপজাতীয় ক্ষুদ্র জাতিগােষ্ঠীগুলাে এদেশের আদিবাসী বা ভূমিপুত্র নয় তার প্রমাণ প্রখ্যাত উপজাতি গবেষক ও নৃতত্ত্ববিদ Robert Henry Sneyd Hutchinson sta An Account of Chittagong Hill Tracts (1906). Captain Thomas Herbert Lewin (1869), is The Chittagong Hill Tracts and Dwellers Therein (1869), HS (১৯৯৬) প্রমুখের লেখা, গবেষশাপত্র, খিসিস এবং বিলাের্ট বিশ্লেষণে পাওয়া যায়। তারা সবাই একবাক্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজাতীয়দের নিকট অতীতের কয়েক দশক থেকে নিয়ে মাত্র কয়েক শতাব্দী আগে এদেশে স্থানাপ্তরিত বা অভিবাসিত হওয়ার যুক্তি প্রমাণ ও ইতিহাস তুলে ধরেছেন।পার্বত্য চট্টগ্রামের কুকি জাতি বহির্ভত অন্য সকল উপজাতীয় গােষ্ঠীই এখানে তুলনামূলকভাবে নতুন বসতি স্থাপনকারী। এখানকার সবচেয়ে আগের জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে মা, খিয়াং, পাংখাে এবং কুকি মূল কুকি উপজাতির গাত্রভুক প্যারা করা হয়, এরা প্রায় তিনশ থেকে পাঁচশ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় এসে বসবাস করেছিল। চাৰুৱা আজ দেকে মাত্র আড়াই থেকে তিনশ বছর পুর্বে মােগল শাসনামলের শেষ থেকে ব্রিটিশ শাসনামলের প্রথম দিকে মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চল থেকে পার্বত। চট্টগ্রামে প্রবেশ করে (খবরিহ ১৮৬৯। প্রখ্ত নতুবিদ এবং ব্রিটিশ পার্বত্য JUNTOS E S Thomas Herbert Lewin , A greater portion of the hill tribes at present living in the Chittagong Hill Tract undoubtedly came about twO generations ago from Arakan. This is asserted bath by their own traditions and by records in Chittagong Collectorate. it was in some measure due to the exodus of our hill tribes from Arakan that the Burmese war of 1824 took place .. hired in a great measure upon refugee from hill tribes who fleeing from Arakan into territory, were purchased and demanded at our hands by the Burmese (Lewin 1869, pp 28-29). অর্থ্যাৎ

মাত্র দুই পুরুষ আগে শ্রিটিশদের সাথে বার্মা যুদ্ধের সময় চাকমারা পার্বত্য অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করে যা চট্টগ্রাম কালেক্টরেট অফিসে দলিল দ্তাবেজ থেকে নিশ্চিত হয়েছেন। অন্যদিকে পার্বত্য অঞ্চলের মারমা জনগােষ্ঠী ১৭৮৪ সনে এ অঞ্চলে বার্মা থেকে দলে দলে অনুপ্রবেশ করে এবং বসবাস শুরু E (Shelley, 1992 and Lewin, 1869).পার্বত্য চট্টগ্রামের এসব উপজাতীয় জনগােষ্ঠীগুলাের ইতিহাস পর্যালােচনা করলে দেখা যায় যে, এসক জনগােষ্ঠীগুলাের প্রায় সবাই যুদ্ধ বিগ্রহ এবং হির দাঙ্গা-হাঙ্গামার ফলে তাদের পুরাতন আবাসস্থল থেকে এখানে পালিয়ে এসেই অথবা এক জনগােষ্ঠী অন্য জনগোষ্ঠীর পশ্চাদ্ধাবন করে আক্রমণকারী হিসেব এদেশে প্রবেশ করেছে। বিশিষ্ট চাকমা পন্ডিত অমেরেন্দ্র লাল খিসা অরিজিনস অব চাকমা পিপলস অব হিলট্রেক্ চিটাগং-এ লিখেছেন, তারা (চাকমারা) এসেছেন মংােরের আখড়া থেকে। পরবর্তীতে আরাকান এবং মগ কর্তৃক তাড়িত হয়ে বান্দরবানে অনুপ্রবেশ করেন। আজ থেকে আড়াই-তিনশ বছর পূর্বে তারা উত্তর দিকে রাঙামাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন। বাংলাদেশে এ বিষয়ে যারা গবেষণা করেছেন এবং প্রবন্ধ লিখেছেন যেমন ঢাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবদুর রব, অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ড. খুরশীদা বেগম, বিজয় কী বাের্ডের উদ্ভাবক মােস্তফা জব্বার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কাজ করছেন এমন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছেন যে ক্ষুদ্র নগােষ্ঠীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নয়।ক্ষুদ্র নৃগােষ্ঠীদের আদিবাসী আখ্যায়িত করলে অসুবিধা কী : অনেককেই এটি বলতে শোনা যায় যে, আদিবাসী বললে যদি ওরা মুশী হয় বা খুশী থাকে তাহলে সমস্যা ? বিভিন্ন লেখা এবং দুই একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনেও অবচেতনভাবে তাদের আদিবাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আপাতদৃ্টিতে তাতে এখনই কোনাে সমস্যা মনে নাও হতে পারে কিন্তু পরবর্তীসময়ে ইষ্ট তিমুর কিংবা সাউথ সুদান’-এর মতাে পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়ভার নিতে কি আমাদের সেই সব বুদ্ধিজীবী এবং মিডিয়া প্রস্তুত আছেন? সকলের গতার্থে এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে না যে ইস্ট তিমুর এবং সাউথ সুদান এর মতাে পরিস্থিতি কাশীর, চেচনিয়া, ফিলিপাইনের মিন্দানাও সহ পৃথিবীর আরও কিছু স্থানে বিরাজ করলেও সেখানে গণভােট অনুষ্ঠিত করে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হচ্ছে না। এই পরিপ্রেক্ষিত্রে আমাদের নিকটবর্তী দেশ মিয়ানমারে আরাকানী মুসলিমদের সাথে কী ধরনের আচরণ করা হচ্ছে এবং তার প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কতটা সহানুভূতিশীল ভূমিকা রাখছে তা ও পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে।

আসল কথা হচ্ছে যে, United Nation Declaration on the Rights of Indigenous Peoples 4 fine white free ঘােষণ” ২০০৭ অনুয়ায়ী তাদের আদিবাসী স্বীকৃতি প্রদান করলে সেই অনুযায়ী তাদের স্বায়ত্তশাসন, রাজনৈতিক, আইনী, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক স্বাধীনকা দানৱ ৰখাৰাধকতা তৈরি হবে। বিশেষ করে এই ঘােষণাৰ ধারা ৩০ অনুযায়ी আদিবাসী জনগােষ্ঠীৰ কুমি কিবাে ভূখ নামতিক কার্য্রম পরিচালনা করা যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না উপযুক্ত জনস্বার্থের প্রয়োজন যুক্তিগ্রাহ্য হবে, অনাথায় ধদি সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগােষ্ঠী খোয় সমতি আপন বা অনুরােধ না করে। একটি স্বাধীন রাষ্ট্র তার সামরিক কার্যক্রম পৰিছালনার জন্য বিশেষ কোনাে জনগােষ্ঠীর ভূমি বা ভূখ- নাৰাৱেৱ জালে যথাযথ পদ্ধতি ও বিশেষ করে তাদের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লি- বিশেষ জনগােন্ীর সঙ্গে আলােচনা করে অনুমতি গ্রহণ করার বিষয়টি সেই বা্্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলেই অনুমেয়। এছাড়া উল্লিখিত জাতিসংঘ ঘােষণার অসংগতি পূর্ণ বিষয়গুলাে যেমন উপযুক্ত জনস্বার্থে সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা কী? বাংলাদেশ সরকার জেএসএস, ইউপিডিএফ এবং সংস্কারবাদীদের সাথে আলােচনা কৰে? এই দলগুলাের মতন তো এক নয়। স্বেচ্ছায় যদি সমাতি জ্ঞাপন না করে তারা তাহলে কী হবে? যদি কোনাে বিশেষ গােষ্ঠী বহি্বিশ্ের কারাে সঙ্গে কোনাে অ অঁওত করে? যদি বহির্নিশ থেকে ওই অঞ্চল আন্ত হয়, সরকার কি সামরিক কার্যম গ্রহণে ক্ষুদ্র নৃগােষ্ঠী। কারাে সমৰ্তিৰ অপেক্ষায় নিক্রিয় থাকবে? যদি ক্ষুদ্র নৃগােষ্ঠী নেতৃত্ব সম্মতি না দেয় তাহলে কী হবে? এছাড়াও বাংলাদেশে কমবেশি ৫০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব মালিকানাধীন ভূমি আছে এবং তারা যদি সেই ভূমি বা ভুষ্ড ব্যবহারে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উপর এত বিধিনিষেধ আরােপ করতে থাকে তাহলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের কী হবে?E755এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবদুর রবের অভিমত, একশ্রেণীর মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী দেশের ক্ষ জাতিগোলীকে আদিবাসী বলে ব্যাপকহারে প্রচার করছে। এক কথায় বললে এরা মূর্খ। এনে কারা এনছ্োপলজি, সােসিওলােজি, ইতিহাস, ভূগোল এবং ভদ্র জাতিগােষ্ঠী, আদিবাসী এ উপজাতি সম্পর্কে কোন ধাণা নেই। আর যারা জেনে বুকে এ কাজ করছে তারা বিক্সি পারিতোষিক, ব্যক্তি, উচ্চ বেনের চাকরি প্রভৃতির লােভে করছে। শ্রিস্টইলেকট্রনিক মিডিয়া, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতা এনজিও কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর প্রভাবশালীরা লােতে বশে দেশে বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এমন মিথ্যাচার করছে। কাজেই আমাদের সকলকে এই বিষয়টিতে সতর্ক হতে হবে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদেৱ আদিবাসী বলা বন্ধ করতে হবে।চট্টগ্রামের পার্ব এলাকা আমাদের মােট ভূখদেশভাগের এৰুভাগ (১৩,২৯৫ বগকিনি৫ ১৩৩ বর্গমাইল) এবং এনে মােট জনসংখ্যার মাত্র শতকরা এক ভাগ (২০১১ সালের অদমারি অনুধ্যায়ী ১৫:৯৮,২৯১ জন মানুষ বাস করে। এ এলাকায় জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি করে বিস্মিতবাদকে যাৱা অবচেতনে উস্কে দিচ্ছে তা জানে না যে এখানে বসবাসকারী মোট জনসংখ্যার অর্ধেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্টী। অভিবাসন, নৃতাত্ত্বিক ও জাত্ৰিাক্তিসহ অন্যান্য

সকল বিবেচনায়ই তারা এই ভূখণ্ডের মূল বা আদি বাসিন্দা নয়। বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের মতাে এখানকার আদিবাসীও আসলে বাভালিরা। তবে এদেশের সকল নাগরিকের মতাে ক্ষুদ্র জাতিগােষ্ঠীর সদস্যরাও বাংলাদেশের নাগরিক। তাদের অল্প কিছুদিন আগে থেকে দাবিকৃত আদিবাসী হওয়ার প্রবল ইচ্ছা আসলে জাতিসংঘের ২০০৭ সালের আদিবাসী জনগােষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক ঘােষণাপত্রের বিভিন্ন ধারা থেকে ভবিষ্যতে ফায়দা লােটার কৌশল। এই কৌশলের ফাঁদে পা দেওয়া ভয়ংকর এবং বিপজ্জনক। কারণ তাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ তার এক দশমাংশ ভূমির মালিকানা হারাতে পারে যার সাথে আমাদের ভৌগােলিক অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জড়িত। কাজেই সকলকে সতর্ক হতে হবে এবং এদেশে বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আদিবাসী বলা বন্ধ করতে হবে।

লেখক: শিক্ষাবিদ ও সমাজ উন্নয়ন গবেষক।

আরও দেখুন

পিরোজপুরে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে দিনব্যাপীপ্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:  ১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার, ঢাকা: মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে পিরোজপুরের …