কয়েকদিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। এরই মধ্যে জমতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাটগুলো। প্রতিবছর কোরবানির ঈদে পশু কেনা হলেও তা যাচাই-বাছাই করার পারদর্শিতা থাকে হাতে গোনা কিছু মানুষের। ফলে কেউ ভালো পশু কিনতে গিয়ে মোটাতাজা করা পশু ঘরে আনেন। তবে কিছু বিষয় জানা থাকলে ভালো গরু কেনা সম্ভব। এতো গরুর মধ্যে মনের মতো একটি ভালো গরু পছন্দ করে কেনাটাও কিন্তু সহজ কাজ নয়। পাশাপাশি, কৃত্রিমভাবে নানা ওষুধ খাইয়ে মোটাতাজা গরুর ভিড়ে সত্যিকার স্বাস্থ্যবান ও সুস্থ গরু চেনাটাও বেশ কঠিন। তবে একটু সচেতন হলেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সুস্থ গরু চেনার কিছু উপায় আছে। সেগুলো জানা থাকলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন গরুটি সুস্থ নাকি অসুস্থ।
জেনে নেই সুস্থ গরু চেনার সেই উপায়গুলো সম্পর্কে।
১. অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোরবানির পশুকে
মোটাতাজাকরণ ওষুধ খাইয়ে স্বাভাবিকের চাইতে অতিরিক্ত মোটাতাজা করে কোরবানির
হাটে নিয়ে আসে। এসব গরু অন্যসব গরুর চাইতে ফোলা থাকে। তাই ভালো করে লক্ষ্য
করুণ আপনার পছন্দের গরু চটপটে কি না? কারণ, স্টেরয়েড খাওয়ালে গরু নড়াচড়ার
বদলে ঝিম মেরে থাকবে। এছাড়া স্টেরয়েড ট্যাবলেট খাওয়ানো গরুর ঊরুতে প্রচুর
মাংস থাকে।
২. অনেকে মনে করে মোটা গরু মানেই সুস্থ গরু। আসলে তা না, মোটা গরুতে চর্বি
অনেক বেশি থাকে যা খাওয়ার পর মানুষের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খাইয়ে অনেক সময় গরু মোটাতাজা করা হয়।
৩. শিং ভাঙা, লেজ কাটা, জিহ্বা, ক্ষুর, মুখ, গোড়ালি খত আছে কি না তা ভালো করে দেখে নিতে হবে।
৪. সুস্থ গরু চিনতে হলে পাঁজরের হাড়েও খেয়াল করতে হবে। সুস্থ গরুর পাঁজরের হাড়ে উঁচু নিচু থাকে এবং চোখে নড়াচড়া করবে।
৫. গরুর নাকের ওপরটা ভেজা ভেজা থাকে তাহলে বুঝতে হবে গরু সুস্থ। এছাড়া গরুর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি সঙ্গে সঙ্গে জিহ্বা দিয়ে টেনে নেয় তাহলেও বোঝা যায় গরুটি সুস্থ কারণ অসুস্থ পশু খাবার খেতে চায় না।
৬. গরুর কুঁজ মোটা ও টানটান থাকলে বুঝতে হবে গরুটি সুস্থ।
৭. গরুর পাঁজরের হাড়ে যে তিন কোনা গর্ত থাকে যাকে ফ্লায়েন্ট জয়েন্ট বলে। তাতে কোনা রয়েছে কিনা সেটি খেয়াল রাখতে হবে। যেসব গরুকে স্টেরয়েড জাতীয় খাবার খাওয়ানো হয় সেগুলোর পাঁজরের স্থান ফোলা থাকে এবং সেখানেও মাংস থাকে।
৮. ওষুধ খাওয়ানো গরুর মাংস খুবই নরম হয়ে যায়। এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পেছনের
রানের মাংস পরীক্ষা করতে হবে। সুস্থ গরুর রানের মাংস থাকবে শক্ত।
৯. গাভী কোরবানির দেয়া গেলেও তার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হবে যে গাভীটি
গর্ভবতী কিনা। গর্ভবতী গাভী কোন অবস্থাতেই কোরবানি দেয়া যাবেনা। সাধারণত
গর্ভবতী গাভীর পেট ও ওলান স্ফীত থাকে।
তাই বাজার যাচাই বাছাই করে সুস্থ গরু কিনুন। অসুস্থ গরু কিনে সেই গরুর মাংস
খেলে আপনার অসুস্থ হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। গরুর অসুস্থতার কারণে আপনার
ক্যান্সার হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। তাই রাতে গরুর কেনার চেয়ে দিনের আলো
থাকতেই গরু কিনুন।