শনিবার , সেপ্টেম্বর ২৮ ২০২৪
নীড় পাতা / জেলা জুড়ে / গুরুদাসপুর / মুরগী খামারের বর্জ্যে পরিবেশ দূষণ, খামার বন্ধের নির্দেশ

মুরগী খামারের বর্জ্যে পরিবেশ দূষণ, খামার বন্ধের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, গুরুদাসপুর:
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের জুমাইনগর গ্রামে মানুষের বসতবাড়ির পাশে মুরগীর মলযুক্ত বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্যহানীর অভিযোগ উঠেছে খামারী মজনু শেখের বিরুদ্ধে। তীব্র দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে ওই গ্রামের বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবারসহ অন্যত্র বসবাস করছেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর পক্ষে ভুক্তভোগি মজনু প্রামাণিক ইউএনও’সহ থানায় ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, খামারী মজনু শেখের বসতবাড়ির সাথেই দুটি লেয়ার মুরগীর খামার রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ওই খামারের মুরগীর বিষ্ঠার ভাগাড় থেকে প্লাস্টিকের পাইপ দ্বারা জনচলাচলের পাঁকা রাস্তার ওপর দিয়েই ভুক্তভোগি মজনুর বাড়ি সংলগ্ন রাস্তার নিচে জলাবদ্ধ জমিতে ফেলা হয়। এতে চরম দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্বাস্থ্যহানীর আশঙ্কায় শিশু সন্তানসহ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যের বাড়িতে বাস করছেন তিনি। এমনকি সেই জলাবদ্ধ মুরগীর বিষ্ঠা তার পাটের জমির পানিতে মিশে যাওয়ার ফলে চরম দুর্গন্ধে পাট কাটতেও পারছেন না। খামার মালিককে অপরিকল্পিতভাবে মুরগীর মলযুক্ত বর্জ্য ফেলতে নিষেধ করলে উল্টো তাদের সাথে অসদাচরণ করার অভিযোগও উঠেছে।

ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে সরেজমিন গেলে দেখা যায়, ওই খামারের পাশে বিভিন্ন স্থানে মুরগীর বিষ্ঠা পড়ে আছে। প্রায় ৭শ’-৮শ’ লেয়ার মুরগী রয়েছে এ খামারে। তার পাশেই রয়েছে একটি মসজিদ। অথচ মুরগীর বিষ্ঠা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। এমনকি পরিবেশ দূষণ কমাতে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়নি। বুধবার দুদিন হতে চললেও সেই বিষ্ঠাভর্তি পাইপ রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখা গেছে। দুর্গন্ধে ওই রাস্তায় চলাচলে ও আশপাশের মানুষের বাড়িতে বসবাসে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফলে দুষিত পরিবেশের মধ্যে থেকে এলাকার বাসিন্দারা স্বাস্থ্যহানীর আশঙ্কায় ভুগছেন।

ভুক্তভোগি শাহিন, খাদেম, হায়দার, আয়নালসহ এলাকার অনেকে অভিযোগ করে বলেন, মজনু শেখের খামারের মুরগীর বিষ্ঠার দুর্গন্ধে এলাকায় থাকা যাচ্ছেনা। মাঝে মধ্যেই এমন পরিবেশ দূষণের শিকার হতে হয়। রোদ উঠলে বাতাসে দুর্গন্ধ আরও বেশি ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধে ওই রাস্তায় চলাচল করতে গেলেও বমি আসে। তৃপ্তি নিয়ে খাওয়াদাওয়া করা যায় না।

অপরদিকে মুরগীর বর্জ্য দুর্গন্ধ ছাড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত খামার মালিক মজনু শেখ বলেন, যে জলাবদ্ধ জমিতে মুরগীর বর্জ্য ফেলানো হয়েছে সেই জমির মালিকের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে এলাকার অন্য কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তাছাড়া খামার থেকে পরিবেশ দূষণ হওয়ার কোনো সুযোগও নেই। সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তাছাড়া আমাকে যখন তখন প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে মজনু।

এ ব্যাপারে নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু বলেন, জুমাইনগরে মানুষের বসতবাড়ির পাশে মুরগীর খামারের মলযুক্ত বর্জ্য ফেলায় দুর্গন্ধে এলাকাবাসীর চরম ভোগান্তির কথা শুনেছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ওই মুরগীর খামারে পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া কোনো লাইসেন্স না থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে জানান তিনি।

বুধবার সন্ধ্যায় গুরুদাসপুর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) সেলিম হোসেন ঘটনাস্থল থেকে ফিরে জানান, অভিযুক্ত মজনু শেখের মুরগীর খামারে পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া কোনো লাইসেন্স পাওয়া যায়নি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সত্যতা পাওয়ায় আগামী ৮ দিনের মধ্যে সব মুরগী বিক্রি করে খামার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও দেখুন

মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি করায় প্রতিবাদে নন্দীগ্রাম ওলমা পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে ভারতের মহারাষ্ট্রে হিন্দু পুরোহিতের কটুক্তির প্রতিবাদে বগুড়ার …