নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া:
রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ী এলাকায় সরকারী খাস ও ভিপি ৩ টি পুকুর মৎস্যজীবী সমিতির নামে লিজ নিয়ে সাব লিজ দেওয়ার অভিযোগ তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবীতে রবিবার সকালে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন এলাকাবাসীর পক্ষে আরিফুল হক রুবেল।
সরকারী পুকুর নিয়ম বহির্ভুত ভাবে সাব লীজ প্রদানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বাংলা ১৪২৬ হতে ১৪২৮ সালের ৩০শে চৈত্র পর্যন্ত তিন বছরের জন্য ইজারা প্রদানের নিমিত্তে আপনার স্বাক্ষরে ইজারা বিজ্ঞপ্তি জারী করা হয় গত বছর ফেব্রয়ারী ২০১৯ মাসের ২৮ তারিখে।
ইজারা বিজ্ঞপ্তি মতে, পুঠিয়া মৌজার আর.এস ২১৯ নং দাগের শিবচৌকি নামক পুকুর পরিমান ৬.১৮ (একর) যাহা রাতোয়াল (শিলমাড়িয়া ইউপি) মহিলা বিত্তহীন সমবায় সমিতির নামে ইজারা প্রদান করা হয়।
একই মৌজার শ্যাম সাগর নামক পুকুর যাহার আর.এস ১১৯ নং দাগে মোট পরিমান ৬ (একর) যাহার অংশ বিশেষ ২.৯৩ একর সরকারী খাস ও ভিপি খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত। উক্ত পুকুরে অবশিষ্ট সম্পত্তি যাহা ২.১৩ আর এস ৬৪ নং খতিয়ান ভুক্ত এবং ০.৭২ একর আর এস ৪৮ নং খতিয়ানে ব্যক্তি মালিকের নামে রের্কড প্রস্তুত হয়েছে। উক্ত শ্যাম সাগর পুকুরের আংশিক ২.৯০ (একর) পুঠিয়া পাঁচআনী বাজার মৎস্যজীবী সমিতির নামে ইজারা প্রদান করা হয়েছে।
একই মৌজার গোবিন্দ সাগর পুকুর যাহা আর.এস ২০ ও ২১ নং দাগ ১.২৫ একর সম্পত্তি সরকারের খাস খতিয়ান ভুক্ত বাঁকী ৫.১৮ একর পুকুর আর এস ৬৪ খতিয়ানে প্রজার নামে রেকর্ড দেখা যায়। উক্ত পুকুরের ১.২৫ (একর)অংশ বিদিরপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে ইজারা দেওয়া হয়েছে।
উক্ত পুকুর গুলো সরকারী অংশ উক্ত বর্ণিত সমিতির নামে লীজ ইজারা দেওয়া হলেও পুকুর গুলি পুঠিয়া কাঁঠালবাড়ীয়া গ্রামের মৃতঃ মতিউর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান আতিক সাবলীজ নিয়ে মাছ চাষ করতে দেখা যাচ্ছে।
যাহা সরকারী জল মহাল ব্যবস্থাপনা নীতি, ২০০৯ এ বর্ণিত ৫১৬৭ পৃষ্ঠার ০৯নং ধারাতে বর্ণিত বিধানের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। উক্ত পুকুর গুলি উল্লেখিত সমিতি লীজ নিয়ে নিজেরা চাষাবাদ না করে মধ্যস্বত্ব ভোগীর কাছে সাবলীজ দিয়ে সরকারী আইন ভঙ্গ করেছেন।
আরও উল্লেখ্য যে, উক্ত আতিকুর রহমান এর দাদা মৃত. আব্দুল মজিদ (ডাক্তার) তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে শান্তি কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। উক্ত অভিযোগে তিনি ১৯৭২ সালে দালাল আইনে অভিযুক্ত হয়ে জেল খাটেন। ফলে আতিকুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সদস্য। এছাড়া সে পুঠিয়ার সরকারী স্বার্থ বিরোধী জালিয়াত খলিলুর রহমানের পক্ষের লোক হিসাবে খ্যাত।
অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক সরকারী স্বার্থে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য প্রার্থনা জানিয়েছে।
পরিশিষ্ট–ক এর শর্তবালীর ১৩ নম্বরে উল্লেখ রয়েছে, ইজারাদার কর্তৃক কোন অবস্থাতেই ইজারাকৃত জলমহলের সম্পূর্ণ বা আংশিক কাহারও নিকট হস্থান্তর বা সাব লীজ প্রদান করা যাবে না। অনুরুপ অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইজারা বাতিল করা হবে এবং জামানত সহ জমাকৃত ইজারা মূল্য সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। ঐ গ্রহীতা/সমিতি পরবর্তী তিন বছর কোন জলমহলের ইজারা সংক্রান্ত কোন আবেদন করতে পারবে না।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি রুমানা আফরোজ জানান, সেই আবেদনের অনুলিপি পেয়েছি। ইউএনও স্যার জলমহাল কমিটির সভাপতি, তিনি যে নির্দেশনা দিবেন সেই মোতাবেক তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ওলিউজ্জামান জানান, অভিযোগটি প্রাপ্ত হয়ে সহকারী কমিশনার ভূমিকে তদন্তের জন্য ইনডুস করা হয়েছে, রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।