নিজস্ব প্রতিবেদক, নন্দীগ্রাম:
বগুড়ার নন্দীগ্রামে আরবি শিক্ষকের ধর্ষণে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী অন্তসত্ত্বা হয়েছে। এ ঘটনাটি জানাজানি হবার পর হাফেজ রুহুল কুদ্দুস পালিয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে নন্দীগ্রাম উপজেলার ৪নং থালতা মাঝগ্রাম ইউনিয়নের দারিয়াপুর গ্রামে। এ ঘটনায় হাফেজ রুহুল কুদ্দুসের দুই ভাতিজাকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, দারিয়াপুর গ্রামের আব্দুল হালিম সুজনের ১১ বছর বয়সি মেয়ে দারিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে লেখাপড়া করতো। বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে প্রতিদিন সকালে এলাকার অন্য শিশুদের সঙ্গে সেও গ্রামের হাফেজ রুহুল কুদ্দুস (৫৫) এর বাড়িতে আরবি পড়তে যায়। সেদিন হাফেজের বাড়িতে পরিবারের লোকজন কেউ ছিল না। পড়া শেষে সবাইকে ছুটি দিলেও ওই ছাত্রীকে পড়া ধরবেন বলে হাফেজ রুহুল কুদ্দুস তাকে বসতে বলে। অন্য ছাত্রীরা চলে যাওয়ার পর লম্পট হাফেজ তাকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি চিৎকার করতে থাকলে তার মুখে কাপড় চাপা দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে লম্পট হাফেজ রুহুল কুদ্দুস। এক পর্যায়ে ধর্ষণের কথা কারো কাছে বললে তাকে মেরে ফেলা হবে বলে ওই হাফেজ হুমকি দেয়। এই ভয়ে ওই ছাত্রী পরিবারের কাউকে কিছুই জানায়নি।
সম্প্রতি ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বাবা-মা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। গত ৪ জুলাই নন্দীগ্রাম হেলথ কেয়ার ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিষ্টিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়। তার রিপোর্টে ওই ছাত্রীর তিন মাসের গর্ভবতী বলে উল্লেখ করা হয়। এ দিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। একপর্যায়ে গত ৮ জুলাই গ্রামের মাতব্বর এনামুল হক, এসরাক আলীর নেতৃত্বে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালানো হয়। তবে তার বাবা আব্দুল হালিম সুজন রাজি হয়নি।
ওই ছাত্রীর ফুফু মর্জিনা বেগম বলেছে, মেয়ের বাবা একজন ভটভটি চালক। আমাদের কোনো লোকজন নেই। হাফেজ প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকেই বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। আমি এ ঘটনার ন্যায় বিচার চাই।
১০ জুলাই এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ শওকত কবিরের সাথে কথা বললে তিনি বলেছেন, ওই ছাত্রী অন্তসত্ত্বার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। হাফেজ রুহুল কুদ্দুসকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ মাঠে রয়েছে।