নিজস্ব প্রতিবেদক,গুরুদাসপুর: নাটোরের গুরুদাসপরের গ্রাম্য ফতোয়ার শিকার পরিবারটির পাশে দাঁড়ালেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেন।১৩ জুন ঘটনার খবর পেয়েই তিনি দু’জন কর্মকর্তাকে ওই বাড়িতে পাঠান খোঁজ খবর নেয়ার জন্যে।পরবর্তীতে ওই পরিবারের নিরাপত্তার আশ্বাস দেন তিনি। ১৪ জুন তিনি স্বশরীরে তিনি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের গরিলা গ্রামে গিয়ে ওই পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন।এসময় তিনি অবরুদ্ধ পরিবারটিকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন। আজ মঙ্গলবার আবারো তিনি ওই গ্রামে গিয়ে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে খোঁজ খবর নেন। আজ তিনি সেখানে ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহযোগিতাও করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তমাল হোসেন জানান,অন্যায় ভাবে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে একটি পরিবারেক একঘরে করে রাখার সংবাদ জানা মাত্র উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সকল পদেক্ষপ নেওয়া হয়েছে। আর্থিক ও খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি তাদের স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন সবর্দা তাদের পাশে থাকবে এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তিনি আরো জানান, রাষ্ট্রীয় আইন অমান্য করে প্যারালাল কোন আইন প্রয়োগ করতে দেয়া হবে না।যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই সকল বে-আইনি কাজ বন্ধ করতে স্থানীয়দের নিয়ে কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাতে জনগণ এই ধরণে কর্মকান্ডে আর লিপ্ত না হন।
উল্লেখ্য,১৩ জুন শনিবার গ্রাম্য মাতব্বর ওসমান, রমজান, মকছেদ ও ইউপি সদস্য মোসাব্বের আলী যোগসাজশ করে রানীনগর মোল্লাপাড়া মসজিদে সামাজিক বিচার বসান। বিচারে শাশুড়ী-জামাইকে উপস্থিত রেখে শরীয়ত পরিপন্থী অপরাধের জন্য তওবা পড়ান ইমাম নুরুজ্জামান। এ কারণে শাশুড়ীর মেয়ে আর জামাইয়ের স্ত্রী থাকলো না বলে ফতোয়া দেন ওই মাওলানা। এরপর বাধ্য হয়েই স্বামীর ঘর ছেড়ে দুই সন্তানসহ মায়ের বাড়িতে অবস্থান নিতে হয় মেয়েকে। সেদিন থেকেই মা মেয়েকে একঘরে করে রাখা হয়। এরপর পরিবারটি সমাজের চোখে ধিকৃত ও অবজ্ঞার শিকার হয়।১৫জুন সোমবার এ ঘটনার খবর পেয়ে গুরুদাসপুর থানা পুলিশ মা মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।