নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোরঃ
কৃষি প্রধান চলনবিল অঞ্চলের ইরি-বোরো ধান কাটা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। কৃষকের গোলায় উঠেছে নতুন ধান। এবার একদিকে যেমন ধানের ফলন বেশি অন্যদিকে তেমনি গতবারের চেয়ে দাম বেশি পাওয়ায় খুশি হয়েছেন কৃষক। ঘরে নতুন ধান রেখে এখন গো-খাদ্য সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন এই অঞ্চলের কৃষক। ধান কাটা মাড়াই পর অবশিষ্ট এই খড় গবাদী পশুর উৎকৃষ্ট ও প্রধান খাবার। তাই সরা বছর গবাদী পশুর খাবার জোগাড় ও বাণিজ্যিক ভাবে খড় ক্রিয় করে বাড়তি আয় করতেই এই গো-খাদ্য সংগ্রহ।
নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিল অঞ্চলের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, কৃষকের বাড়ির পাশের প্রায় প্রতিটি ধানের খলাতেই শুরু হয়েছে খড় শুকানো উৎসব। জ্যৈষ্ঠ মাসের ভ্যাপসা গরম আর রোদে পুরে তাঁরা খড় শুকাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ এই শুকনো খড় পালা দিচ্ছেন। দুর থেকে গ্রামের এসব খলায় উঁচু অসংখ্য খড়ের পালার দিকে তাকালে মনে হয় এ যেন ছোট ছোট পাহাড় টিলার মেলা।
কৃষকরা জানান, গবাদী পশুর প্রধান খাদ্য এই খড় এখন বাণিজ্যিক ভাবে বিক্রয় হয়। ধান কাটা মাড়াই পর কাঁচা খড় প্রতি বিঘায় ১৫০০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রয় হয়। যাদের গরু নেই তাঁরা সব খড় বিক্রয় করে দেন। যাদের গরু আছে তাঁরা চাহিদা মত খড় মজুদ করে বাকি গুলো বিক্রয় করে দেন। এতে কৃষকদের বাড়তি কিছু আয় হয়। দেড় থেকে দুই মাস পর অর্থাৎ বর্ষার সময়ে এই গো-খাদ্য খড়ের দাম আরও বেড়ে যায়। সেসময় নৌকায় করে খড় ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দাম দর করে খড় কিনেন।
উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের আয়েশ গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, আমার ১৫ বিঘা জমির ধানের খড় রোদে শুকিয়ে ছোট বড় ৩টি পালা দিয়েছি। আমার ২টি গরুর ১ বছরের খাবারের জন্য ১টি পালা লাগবে। বাকি ২পালা বর্ষা মৌসুমে বিক্রয় করে দেব বলে আশা করছি। এতে বাড়তি কিছু আয় হবে। রামানন্দ খাজুড়া ইউনিয়নের কৈগ্রামের কৃষক মুসা সরদার তাঁর খলাতে খড় শুকানো কাজ করতে করতেই বলেন, আমার গরু নেই। ১০ বিঘা জমির সব খড় রোদে শুকিয়ে পালা দিয়ে রাখবো। গতবছর এই ১০ বিঘা জমির খড় কিছুটা জালানী হিসাবে রেখে সব খড় ২৫ হাজার টাকায় বিক্রয় করেছিলাম। এবছরও তাই আশা করছি। ডাহিয়া গ্রামের খড় ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন বলেন,গত ১০ বছর ধরে খড়ের ব্যবসা করছি। সিরাগঞ্জ শাহজাদপুরের বাঘা বাড়ি মিল্ক ভিটা এলাকায় গো-খাদ্য হিসাবে চলনবিলের এই খড়ের অনেক চাহিদা। আমরা ধান কাটা মাড়াই পর পরই প্রতি বিঘা ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা দরে কিছু খড় কিনে মজুদ রাখি। বর্ষায় গ্রামে গ্রামে ঘুরে খড়ের পালা ভেদে দর দাম করে খড় কিনি। এর পর নৌকা বোঝাই করে বাঘা বাড়ি মোকামে কেজি ও মণের ওজন হিসাবে বিক্রয় করি। এতে প্রতি মৌসুমে এই ব্যবসা থেকে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করি।
আরও দেখুন
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ ………..চাঁপাইনবাবগঞ্জে রক্তদান সামাজিক সেবামূলক সংগঠন ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। শুক্রবার …