মিনহাজ উদ্দীন আত্তার
করোনাকালীন সতর্কতা এবং সামাজিক দূরত্ব রক্ষার শর্তে সরকারের ঘোষণার পর গত রবিবার (১০ মে) থেকে নাটোরের মার্কেট-শপিং মল ঈদ উপলক্ষ্যে খুলেছেন ব্যবসায়ীরা। জেলা শহরের দুই-একটি ছাড়া বেশিরভাগ মার্কেটগুলোতে মানা হয়নি নিয়মকানুন। সামাজিক দূরত্ব মানার নামমাত্র লক্ষণ চোখে পড়েনি।
সরেজমিনে ঔষুধের দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। একই অবস্থা শহরের নিচাবাজারসহ বিভিন্ন স্থানের ওষুধের দোকানের। বিশেষ করে ছায়াবানি মোড়ের ডান দিকে দোকানগুলোতে নিয়ম মানার বালাই নেই! এছাড়া কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম ভেঙে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে জনসাধারণের অবাধে চলাফেরা করছে।
অনেকের মুখে মাস্ক থাকলেও একে অপরের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বাজার করছেন। একই অবস্থা শহরের শপিং মল ও মার্কেটগুলোতে। স্বর্ণকারপট্টি মার্কেট, সাদেক কমপ্লেক্স, সদর হাসপাতাল রোডসহ বিভিন্ন মার্কেটের দোকানগুলো খুবই সংকীর্ণ। ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের আনাগোনায় কোনভাবেই সেখানে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা যাচ্ছে না। এতে বেড়েছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। তবে মার্কেট কর্তৃপক্ষের দাবি, নিশ্চিত করা হয়েছে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা।
সকাল ৮টা থেকেই দোকান খোলার অপেক্ষায় মার্কেটের সামনে থাকে দোকান মালিক, কর্মচারীদের দীর্ঘ লাইন। মার্কেট খোলার কিছু সময়ের মধ্যেই ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় তিল ধারণের জায়গাও থাকে না। শাড়ি থ্রি-পিস পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন কাপড়ের জন্য মানুষ ভিড় করে এসব দোকানে। শহরের স্টেশন বাজার এলাকায় রোজি সুপার মার্কেটে লকডাউনের বিধিনিষেধকে ডোন্ট কেয়ার করছে সবাই।
দোকানের সামনে সাইকেল, মোটর বাইকের ছড়াছড়ি! আর দোকানের ভিতরও মানা হচ্ছে না কোনো সামাজিক দূরত্ব। এক কর্মীর ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে অন্য কর্মী! রোজি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা অনেকেই মাস্ক না পরেই ঘুরছেন, কেনাকাটা করছেন। ওই মার্কেটের অনেকে ব্যবসায়ীরাও মাস্ক না পরেই কাপড় বিক্রি করছেন। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে অনেকটা গাদাগাদি করেই বেচাকেনা করা হচ্ছে।
দু’একটা শপিং মল ছাড়াও ছোট মার্কেটগুলোতেও একই অবস্থা চোখে পড়েছে । শপিংমল খুলে দেয়া হয়েছে। দোকানপাটসহ সর্বত্র মানুষের ভিড় বাড়ছে; কিন্তু করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব কেউ মানছে না। নিয়ম না মেনে জনসমাগম করায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে স্বাস্থ্য কর্মীরা। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ব্যবসায়ী জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করা যায় না।
কারণ ক্রেতারা অসচেতন। অনেকে মাস্কও পরে না। ঈদবাজার করতে আসা মুহাম্মদ শাওন মিয়াজি জানান, ঈদ সামনে কেনাকাটা করতে এসেছি; কিন্তু কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। অনেকে তো মাস্কও পড়ে না। ব্যবসায়ীদের উচিত ছিল দোকানে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা; কিন্তু তা কোথাও দেখা যাচ্ছে না।সীমিত পরিসরে মার্কেট খুলে দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ জীবানুনাশক ছিটানোসহ ক্রেতা-বিক্রেতাকে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার কথা থাকলেও নাটোরের এই সংকীর্ণ মার্কেটে তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
নাটোরের জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ জানান, নিয়ম মেনে সবাই যেন কেনাকাটা করে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এজন্য নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।