সবজি ও ফলের চাহিদা আসছে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। তাই আবার পণ্য রপ্তানি শুরু করতে চান এ খাতের উদ্যোক্তারা। তাঁরা বলছেন, ‘আগের বছরের তুলনায় এ বছর সবজি রপ্তানি ভালোই হচ্ছিল। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টন সবজি রপ্তানি হতো। এখনো আমদানিকারক ৪৩টি দেশের মধ্যে প্রায় সব কটিরই চাহিদা আসছে। কিন্তু ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আমরা দিতে পারছি না। তবে এসব পণ্য রপ্তানির জন্য আলাদা কার্গো বিমান চালু হলে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।’ এ জন্য বিমানসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলোচনাও করছেন বলে রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবার রপ্তানিতে ফিরতে পারলে দেশের উদ্বৃত্ত সবজি আর নষ্ট হবে না, কৃষক বেঁচে যাবেন এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রাও আয় হবে।
এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে জুলাই থেকে মার্চ এই ৯ মাসে মোট ৪৪টি দেশে সবজি রপ্তানি হয়েছে ১৪ কোটি ৬৭ লাখ ১৪ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রায় এক হাজার ২৫০ কোটি টাকার। সে হিসাবে প্রতি মাসে সবজি রপ্তানি হয়েছে এক কোটি ৬৩ লাখ কোটি ডলার বা ১৩৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকার। দৈনিক হিসাবে যা প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। গত বছর মোট ১০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ সবজি রপ্তানি হলেও চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ কোটি ডলারের। আর ৯ মাসে রপ্তানির লক্ষ্য ছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলারের। সে হিসাবে মার্চ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি সবজি রপ্তানি হয়েছে। আর গত বছরের তুলনায় ৭৯ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়েছে যুক্তরাজ্যে—তিন কোটি ১৫ লাখ ডলার। তারপরই আরব আমিরাত—এক কোটি ১৭ লাখ ডলার। ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে, ইউরোপের বাজারগুলোতে প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত টন শুধু কাঁচা মরিচই রপ্তানি হতো।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাইড প্রডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চাহিদা বেশি থাকলে স্বাভাবিক সময়ে দেশ থেকে দৈনিক এক হাজার টন শাক-সবজি ও ফলমূল রপ্তানি হয়। তবে গড়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টন রপ্তানি করা যায়। এর মধ্যে বেশির ভাগই শাক-সবজি। প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টন শাক-সবজি রপ্তানি হতো। এখন সম্পূর্ণই বন্ধ। তবে খাদ্যপণ্য হওয়ায় আমদানিকারক দেশগুলোর চাহিদা সব সময়ই ছিল। আমরা দিতে পারিনি। আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে বিমানের একটি কার্গো ফ্লাইট চালুর চেষ্টা করছি। এ ছাড়া অন্যান্য সংস্থার সঙ্গেও আলোচনা হচ্ছে। কেউ অপারেশনে গেলে, কোন দেশে কী পরিমাণ পণ্য পাঠাব আমরা সে তালিকা দেব। প্রাথমিকভাবে ইউরোপের দেশগুলোতে সবজি রপ্তানির চেষ্টা করছি।’