সোমবার , নভেম্বর ২৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / বিদ্যানন্দের ‘প্রধানের’ পদ থেকে অব্যহতি চেয়েছেন কিশোর কুমার

বিদ্যানন্দের ‘প্রধানের’ পদ থেকে অব্যহতি চেয়েছেন কিশোর কুমার

নিউজ ডেস্কঃ

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাশ ‘প্রতিষ্ঠানপ্রধানের’ পদ থেকে পদত্যাগ করছেন। এর পরিবর্তে তিনি ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে থাকতে চেয়েছেন।

ফেসবুক পেজে এক পোস্টে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। বিদ্যানন্দের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ বলেন, কিশোর কুমার দাশ ফাউন্ডেশনে আছেন, থাকবেন। পদ তাঁদের কাছে বড় বিষয় না। প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ঠিকভাবেই চালানোই তাঁদের লক্ষ্য।

গতকাল সোমবার রাতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ফেসবুক পেজে বলা হয়, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার ‘প্রধান’ হিসেবে না থাকার কথা জানিয়েছেন। তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে থাকতে চান।

জানতে চাইলে বিদ্যানন্দের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ আজ মঙ্গলবার বলেন, ‘উনি (কিশোর কুমার দাশ) যে পদেই থাকুন না কেন বা উনি যদি বলেন যে আমি কোনো পদেই থাকব না, তারপরও ওনার যে প্রভাব বা উনি যে মানুষ, উনি সেভাবেই আমাদের কাছে থাকবেন। বরং আমরা গর্ব করি যে পদবি আঁকড়ে ধরে থাকার মেন্টালিটি আমাদের নেই। এটাই আমাদের বড় শক্তি। দিন শেষে আমরা মানুষ। ভালো লাগা, খারাপ লাগা থাকবে। তবে আমাদের কাজে এসব প্রভাব পড়বে না। সবকিছুই ঠিক থাকবে, চলবে। এটাই বড় কথা।’

ফারুক আহমেদ বলেন, মানুষের জন্য কাজ করাটাই তাঁদের মূল লক্ষ্য। কার কী পদ, সেটা নিয়ে কেউই ভাবছেন না। কিশোর কুমার দাশ প্রবাসে থাকেন। তিনি যখন দেশে ফিরবেন তখন এসব নিয়ে ভাবা হবে। তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত দেড় লাখ পরিবারের কাছে বিদ্যানন্দ খাদ্যসহায়তা পৌঁছাতে পেরেছে। তিন লাখ পর্যন্ত পৌঁছাবে বলে আশা তাঁদের। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী থেকে শুরু করে প্রশাসন, চিকিৎসকসহ অনেকে তাঁদের কাজে সহায়তা করছেন। এ ছাড়া ১০০–এর বেশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং ব্যক্তিপর্যায়েও অনেকে বিদ্যানন্দের সঙ্গে কাজ করছে বলে জানান তিনি।

বোন শিপ্রা দাশকে নিয়ে ২০১৩ সালে কিশোর কুমার দাশ শুরু করেন বিদ্যানন্দের কাজ। এখন দেশের নানান প্রান্তের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। নিজেদের অনেক কাজের মাধ্যমে তারা আলোচিত এবং প্রশংসিত। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে বিদ্যানন্দ অসহায় মানুষকে খাদ্যসহায়তা, জীবাণুনাশক ছিটানোসহ নানান ধরনের কাজ করে আসছে। সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির আর্থিক সহায়তায় তারা এসব কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

গতকাল সোমবার রাতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের দেওয়া ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘বিদ্যানন্দ’ নামটি দিয়েছেন এক মুসলমান ব্র্যান্ড এক্সপার্ট। “আনন্দের মাধ্যমে বিদ্যা অর্জন” স্লোগানের সঙ্গে মিল রেখে তিনি নামটি দিয়েছিলেন। অনেকেই এটাকে ব্যক্তির নাম থেকে ভেবে ভুল করেন। এজন্য আমরা দুই বছর আগে নাম পরিবর্তনের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটে করি। প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবকেরা নাম পরিবর্তনের বিপক্ষে ভোট দেয়। এই স্বেচ্ছাসেবকদের ৯০ শতাংশই মুসলিম।

গত মাসেই বিদ্যানন্দের প্রধান পদত্যাগের কথা জানিয়ে দেন স্বেচ্ছাসেবকদের। সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারে নয়, বরঞ্চ ব্যক্তিগত ত্যাগে স্বেচ্ছাসেবকদের অনুপ্রাণিত করার এবং নতুন মেধায় প্রতিষ্ঠানকে সমৃদ্ধ করার স্বপ্নে এমন সিদ্ধান্ত। আর তিনি প্রধানের পদ ছাড়লেও বিদ্যানন্দ ছাড়ছেন না, বরঞ্চ সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব নিতে চেয়েছেন।

বিদ্যানন্দ বলছে, ‘আমরা বিষয়টি প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম চলমান ক্যাম্পেইনের (করোনাভাইরাস) পরে। কিন্তু কিছুদিন ধরে চলা মাত্রাতিরিক্ত সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারে জল ঢালতে খবরটি আজকে শেয়ার করলাম। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য বিষয়টি হতাশার নয়। বরঞ্চ পদ আঁকড়ে থাকার মানসিকতার এই সমাজে উল্টা পথে হাঁটতে পারার জন্য গর্ব হচ্ছে। আর বিদ্যানন্দে পদে কি যায় আসে? এখানে তো কাজটাই আসল, আর সেটাই আমরা করে ছাড়বো।’

সূত্রঃ প্রথম আলো

আরও দেখুন

মিথ্যা মামলা থেকে খালাস বাগাতিপাড়ার দুই সাংবাদিক

নিজস্ব প্রতিবেদক বাগাতিপাড়া,,,,,,,,নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মারামারি ও চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা থেকে খালাস পেলেন দুই সাংবাদিক। রবিবার …