শুক্রবার , নভেম্বর ২২ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / শেষ হলো পদ্মা সেতুর ২৯৪টি পাইল বসানোর কাজ

শেষ হলো পদ্মা সেতুর ২৯৪টি পাইল বসানোর কাজ

দেশি-বিদেশি হাজারও মানুষের ঘাম ও শ্রমে এবং কলাকৌশলে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতুর নির্মাণের কর্মযজ্ঞ। প্রমত্তা পদ্মার বুক চিরে একে একে দাঁড়াচ্ছে স্বপ্নের এই সেতুর পিলার। পদ্মা সেতুর ২৯৪টি পাইল ড্রাইভের সর্বশেষ পাইল বসানোর কাজ শেষ হয় ১৪ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে। এদিকে সেতুর পাইল বসানোর কাজ শেষ হওয়ায় প্রকল্প এলাকায় সংশ্লিষ্টদের মঙ্গে এখন আনন্দের জোয়ার বইছে।

পদ্মা সেতুর (মূল সেতু) নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের জানান, পদ্মা সেতুতে ২৯৪টি পাইল ড্রাইভ হবে। এরই মধ্যে ২৯৩টি পাইল ড্রাইভের কাজ আগেই শেষ হয়েছে। ১৪ জুলাই সেতুর সর্বশেষ ২৬ নম্বর পিলারের ৭ নম্বর পাইল ড্রাইভের কাজ শেষ হয়।

এদিকে পদ্মা সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ৩০টির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে সেতুর পিলারের ওপর ১৪টি স্প্যান বসানো হয়েছে। ১৪টি পিলারের মধ্যে স্থায়ী ১২টি ও অস্থায়ী দুটি মিলিয়ে ১৪টি স্প্যান বসেছে। এতে মূল সেতুর ২১০০ মিটার দৃশ্যমান। অন্যদিকে নদীর দুই পারে থাকা ভায়াডাক্টের ওপর সাতটি করে ১৪টি রেলওয়ে স্প্যান এবং জাজিরা প্রান্তে ২৩৪টি সুপার-টি গার্ডার ও মাওয়া প্রান্তে ২০৪টি সুপার-টি গার্ডার মিলিয়ে ৪৩৮টি সুপার-টি গার্ডার বসবে। এতে মোট রোডওয়ে স্প্যান হবে ৮৩টি। রেলওয়ে গার্ডারের স্প্যান বসেছে ৭টি। তবে রোডওয়ে সুপার-টি গার্ডারের কোনো স্প্যান এখনো বসানো হয়নি।

সেতুসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিন মিটার পরিধির একেকটি পাইল নদীর ১২০ মিটার পর্যন্ত তলদেশে গেছে। এক লাখ ৪০ হাজার ঘনমিটার পানি প্রতি সেকেন্ডে প্রবাহিত হয়ে থাকে পদ্মা নদী দিয়ে। খরস্রোতা এ নদীতে যাতে পাইলের ওপর পিলার একশ বছরের বেশি সময় টিকে থাকে, এমনভাবে নদীতে পাইল ড্রাইভ করা হয়েছে। চীন থেকে আসা স্টিল প্লেট দিয়ে পাইল তৈরি করা হয়েছে মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে। জানা গেছে, মূল সেতুর নির্মাতা চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানিকে পাইল বসানোর কাজ করতে দেওয়া হয়েছিল। তাদের চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের ১৬ দিন আগে পাইল বসানোর কাজ শেষ হলো। নির্মাণকাজের শুরুতে ২৬৪টি পাইলের ওপর ৪২টি পিলার তৈরির নকশা করা হয়। কিন্তু নদীর গভীর তলদেশে কাদামাটির স্তর ও গঠনগত বৈচিত্র্য থাকায় নতুন নকশা করতে হয়। এ নকশায় ১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ১৬টি করে মোট ৩২টি পাইল করা হয়। আর ২২টি পিলারে সাতটি করে মোট পাইল ১৫৪টি এবং ১৮টি পিলারে ছয়টি করে মোট ১০৮টি পাইল রাখা হয়। সব মিলিয়ে ৪২টি পিলারে পাইল রাখা হয় ২৯৪টি।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। আর নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ৩০ জুন পর্যন্ত মূল সেতুর ৮১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। নদীশাসন কাজের ৫৯ শতাংশ এবং প্রকল্পের সার্বিক কাজের ৭১ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।

আরও দেখুন

পিরোজপুরে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে দিনব্যাপীপ্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:  ১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার, ঢাকা: মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে পিরোজপুরের …