গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের কায়েতপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষিশ্রমিক আশরাফুল আলম গত ছয়দিন ধরে ঘর থেকে বের হন না। তিনি জানালেন, ভয় তাঁর জন্যই নয়, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে তা তাঁর পরিবারের সদস্যের মধ্যেও ছড়াতে পারে। বাইরে মানুষের সংস্পর্শে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয় থাকলেও ঘরবন্দি থেকে না খেয়ে মরার উৎকণ্ঠাও ছিল তাঁর। আর উৎকণ্ঠার মধ্যেই দরজার বাইরে আচমকা ডাক শোনা গেল, আশরাফুল ভাই, বাড়ি আছেন? আমি আপনাদের এমপি। দরজা খোলেই হতবাক বনে যান আশরাফুল। তাঁর সামনে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে হাজির গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ। আর খাদ্যসামগ্রী হাতে পেয়ে কেঁদে ফেলেন আশরাফুল। আশরাফুল আলম বলেন, পরতম (প্রথম) ভাবছি, স্বপ্ন দেখতাছি। পরে দেহি হাচাই (সত্য)।
একই কথা বললেন অশীতিপর রাবেয়া খাতুন। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁর স্বামী মারা যায়। সহায় সম্বলহীন পরিবারটির বাস সরকারি জমিতে। তাঁর তিন ছেলেই দিনমজুর। কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় তাঁর তিন ছেলেও ঘরবন্দি। এতে চোখে অন্ধকার দেখছিল পরিবারটি। আর এরই মধ্যে বাইরে থেকে ডাক, ‘রাবেয়া মা, বাড়ি আছেন? ঘর থেকে বেরিয়ে রাবেয়ার চোখ ছানাবড়া। খাদ্যসামগ্রী হাতে সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ। আর এই দৃশ্যটি ছিল আজ মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টায়।
শুধু আশরাফুল আলম ও রাবেয়া খাতুনই নন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কর্মহীন ১৫ হাজার দরিদ্র মানুষের দায়িত্ব নিলেন ইকবাল হোসেন সবুজ। এরই অংশ হিসেবে চাল, ডাল, আলু ও তেলসহ আগামী ১৫ দিনের খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়।
ইকবাল হোসেন সবুজ জানান, প্রয়োজনে এই তালিকা আরো দীর্ঘ হবে। আমি কথা দিচ্ছি, শ্রীপুর উপজেলাসহ গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাওয়ালগড় ও পিরুজালী ইউনিয়নের একজন মানুষও অভুক্ত থাকবে না।