চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টদের জন্য পারসোনাল প্রটেকশন ইক্যুইপমেন্ট বা ব্যক্তি সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) ব্যবহার নিয়ে সতর্ক হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্যক্তি সুরক্ষা সরঞ্জাম কোন ধরনের সেবাদাতা ব্যক্তির জন্য কোনটি প্রয়োজন, তাকে ঠিক সেটিই ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে প্রয়োজনে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) সচিত্র নির্দেশনা জারিও করতে বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে যুক্ত হয়ে সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশব্যাপী চলমান কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী এই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে সংযুক্ত হন।
মতবিনিময়ের এক পর্যায়ে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষার পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যাদের মধ্যে লক্ষণ আছে, তাদের সবাইকে পরীক্ষা করা হয়েছে। ঢাকার বাইরেও করোনা পরীক্ষার সুবিধা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে।
অধ্যাপক ফ্লোরা পিপিই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ
করে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে দেশের সব জেলা-উপজেলায় পিপিই
সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, অনেক স্থানেই যাদের প্রয়োজন
নেই, তারাও পিপিই ব্যবহার করছেন। এতে করে যাদের প্রকৃত প্রয়োজন, তাদের
পিপিই’র ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পিপিই সত্যিকার অর্থে যাদের প্রয়োজন,
তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। যাদের প্রয়োজন নেই, তাদের পিপিই পরিধান করার
প্রয়োজন নেই। যেমন, যারা রোগীদের সরাসরি সেবা দেবেন, তাদের কিন্তু পিপিই
অবশ্যই পরতে হবে। কিন্তু হাসপাতালেও যারা সরাসরি রোগী দেখবেন না, তাদের
জন্য কিন্তু পিপিই প্রয়োজন নেই। সেভাবে পিপিই’র ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
বেশ কয়েকজন জেলা প্রশাসক ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন, তারা প্রত্যেকেই পর্যাপ্ত পিপিই পেয়েছেন। তাদের পিপিই’র কোনো সংকট নেই। কেউ কেউ অবশ্য বলেন, যাদের প্রয়োজন নেই, তারাও জেলা প্রশাসকের কাছে পিপিই পাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। এর মধ্যে গণমাধ্যমকর্মীরাও রয়েছেন। তবে প্রকৃত প্রয়োজন যাদের, তাদের মধ্যেই পিপিই বিতরণ করছেন তারা।
পরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিপিই ব্যবহার নিয়ে অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা থাকতে পারে। আমার মনে হয়, আইইডিসিআর বা সংশ্লিষ্টরা এ ক্ষেত্রে পিপিই ব্যবহারের একটি নির্দেশনা তৈরি করে দিতে পারে। প্রয়োজনে সচিত্র নির্দেশনা তৈরি করা যেতে পারে। কারা, কখন পিপিই ব্যবহার করবেন, এটি সবার সঠিকভাবে জানা প্রয়োজন এবং সবার মধ্যে এ নির্দেশনা সঠিকভাবে প্রচারিত হওয়া প্রয়োজন।
গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এছাড়া সচিবালয় প্রান্তে যুক্ত ছিলেন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও এর অধীন বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন সচিবালয় প্রান্তে।