বিশ্বব্যাপী
মহামারী আকার ধারণ করা নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে চলছে নানা গুজব। দেশেও
ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত কয়েক দিন ধরে গুজব অব্যাহত রয়েছে।
একটি স্বার্থান্বেষী মহল সুপরিকল্পিতভাবে দেশের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল
করতে এধরনের গুজব ছড়াচ্ছে।
প্রবাস
থেকে পরিচালিত বাংলাদেশি কিছু প্রোপাগান্ডা ধরনের নিউজ পোর্টাল
bdcorona.wordpress.com, http://akhonsamoy.com/ সহ আরও বেশ কিছু নিউজ
পোর্টাল এসব গুজব ছড়াচ্ছে। এমনকি কিছু ইউটিউব চ্যানেলও বাদ যাচ্ছে না এর
থেকে।
গত
২৮ মার্চ, “এখন সময়” নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল তাদের ওয়েব সাইটে
“বাংলাদেশে মারা যেতে পারে ২০ লাখ মানুষ!” শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশ করে।
যেখানে তারা জাতিসংঘের নামে ফেক নথির রেফারেন্স দিয়ে করোনা নিয়ে বানোয়াট
রকমের প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।
সেখানে
বলা আছে, “জাতিসংঘের ফাঁস হওয়া একটি আন্তঃসংস্থা নথি মোতাবেক,
করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রশমন ও অবদমনে জরুরী পদক্ষেপ নেওয়া না হলে কভিড-১৯
রোগে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে “৫ লাখ থেকে ২০ লাখ” মানুষের মৃত্যু হতে
পারে। “জাতীয় প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা” (সিপিআরপি ভি১) শীর্ষক এই
নথিতে এই সংখ্যাকে “ভয়াবহ” বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে ঢাকায়
বিদেশী কূটনীতিকদের এই নথিটি দেওয়া হয়।”
অথচ ভোরের পাতার অধিকতর অনুসন্ধানে জানা গেছে জাতিসংঘের তরফ থেকে এসব কোন ধরনের নথীই ফাঁস হয়নি।
এদিকে
তিন শতাধিক কর্মী নিয়ে একটি চক্র রাজধানী ঢাকায় গুজব ছড়াতে বিভ্রান্তিমূলক
লিফলেট বিতরণ করছে। যেখানে লেখা আছে, ‘ছোঁয়াচে রোগ বা সংক্রামক রোগ বলতে
কিছু নেই। ছোঁয়াচে রোগ বিশ্বাস করা হারাম, কাট্টা কুফরী ও শিরকের
অন্তর্ভুক্ত’। চক্রটি ৩২টি প্রাইভেটকারের সহায়তায় এই গুজব ছড়াচ্ছে বলে
জানিয়েছে পুলিশ। গত শনিবার বিকেলে ডিএমপির রমনা জোনের সিনিয়র সহকারী
কমিশনার এস এম শামীমের নেতৃত্বে এই চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে
শাহবাগ ও রমনা মডেল থানা-পুলিশ।
পুলিশ
জানিয়েছে, সাধারণ মানুষের ধর্মীয় আবেগকে পুঁজি করে বিভ্রান্তিমূলক লিফলেট
বিতরণ করছে চক্রটি। এই চক্রের হোতা রাজারবাগ দরবার শরিফের ‘রাজারবাগী
হুজুর’। রাজধানীর শাহজাহানপুর থানা এলাকার রাজারবাগ ৩ নম্বর গেটের বিপরীত
পাশে রাজারবাগ দরবার শরিফ আঞ্জুমান অফিসের দ্বিতীয় তলায় থাকেন ওই রাজারবাগী
হুজুর। সেখান থেকে তার সাঙ্গপাঙ্গরাই এই গুজব প্রচারে অংশ নিয়েছে।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে তদন্তের
স্বার্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি পুলিশ।
এছাড়া
কিছু বিদেশী মিডিয়াও জেকে ব্রেকিং নিউজ নামের একটি নিউজ পোর্টালও নতুন করে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আগামীকাল থেকে সবার মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড করা
হবে, এমনকি হোয়াটস আপ, টুইটার এবং ফেসবুক একাউন্টও মনিটরিং করা হবে বলে
একটি গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এমন কোনো নির্দেশনা কোনো সংস্থাকেই সরকারের
পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি বলে ভোরের পাতাকে নিশ্চিত করেছেন গোয়েন্দা সংস্থার
একাধিক কর্মকর্তা।
তারা
জানিয়েছেন, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন গুজব ছড়াচ্ছে শুধু তাদেরকেই নজরদারিতে
রাখা হচ্ছে। এছাড়া সাধারণ মানুষের ফোন কল রেকর্ড করার মতো কিছুই হয়নি। অযথা
মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই একটি মহল করোনাভাইসারের মহামারীর সময়
এসব গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ সেটি বিশ্বাসও করতে শুরু করেছে।
মূলত
সরকার বিরোধী একটি অংশ যেকোনো দুর্যোগের সময়ই এমন গুজব প্রচার করে আসছে
গত কয়েক বছর ধরে। আগে যারা গুজব ছড়িয়েছিল, তাদেরকেই নজরদারিতে রাখা হয়েছে
বলেও জানা গেছে। জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য যারা গুজব প্রচার করছে
তাদের আইনের আওতায় আনারও সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
আরও দেখুন
পিরোজপুরে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে দিনব্যাপীপ্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার, ঢাকা: মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে পিরোজপুরের …