শুক্রবার , নভেম্বর ১৫ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / ভয়াল ২৫ মার্চ আজ

ভয়াল ২৫ মার্চ আজ

নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ এমন একটি দিন। যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এই দিনে চেষ্টা করা হয়েছিল ঘুমন্ত অবস্থায় বাংলাদেশের নাম মুছে ফেলে দেওয়ার। আজ সেই ভয়াল ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস।

১৯৭১ সালের এই রাতে পাক-হানাদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’-এর নামে নিরস্ত্র বাঙালির উপর নির্বিচারে চালায় বিশ্ব ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা। ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ ছিল বাঙালির একটি প্রজন্মকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার এক নারকীয় পরিকল্পনা।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে জেনারেল টিক্কা খান বলেছিলেন, ‘আমি পূর্ব পাকিস্তানের মাটি চাই, মানুষ চাই না’। ফলে বাঙালি জাতির জীবনে নেমে আসে বিভীষিকাময় ভয়াল কালরাত।

২৫ শে মার্চ পাক-হানাদার বাহিনী স্বাধীনতাকামী বাঙালির উপর দানবের মতো ঝাঁপিয়ে পড়লে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলার সর্বস্তরের জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

কালরাতে শুরু হওয়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা চলতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় ধরে। ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় মহান স্বাধীনতা। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা লাভ করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন একটি দেশ স্থান করে নেয সেটা হলো বাংলাদেশ।

২৫ শে মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বর্বরোচিত হামলার সেই নৃশংস ঘটনার স্মরণে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ মহান জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে এ দিনকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। আমাদের জাতীয় রাজনীতিতে একটা সময় গণহত্যার এই বিষয়টি চাপা দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়। ১৯৭৫ সালের পর এই অপরাজনীতিতে জড়িত ছিল সামরিক-বেসামরিক আমলা, তাদের প্রতিনিধি স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ও তার পাকিস্তানি দোসররা। গণহত্যার বিষয়টিকে তারা খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে ২৫ শে মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত হয়।

প্রতিবার এই দিনটি এলে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ কর। এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ে সারাবিশ্ব এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সে কারণে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দল এবার সব কর্মসূচি পরিহার করেছে। তবে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি ২৫ শে মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে এক বিবৃতি প্রদান করেছেন, বিবৃতিতে তিনি ২৫ শে মার্চ কাল রাতে নিহত সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিশ্ব সভ্যতার এক সংকটময় মুহূর্তে আমাদের জাতীয় জীবনে ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস সমাগত। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে সৃষ্ট সংকটের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ইতোমধ্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’-এর বছরব্যাপী কর্মসূচি পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে এবং ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা ভেবে বাতিল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশবাসীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও সবধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি স্থগিত করেছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ৩০ লাখ শহীদের পবিত্র স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে ভয়াবহ এই বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করাই হোক এবারের স্বাধীনতা দিবসের অঙ্গীকার।

আরও দেখুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ ………..চাঁপাইনবাবগঞ্জে রক্তদান সামাজিক সেবামূলক সংগঠন ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। শুক্রবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *