রবিবার , অক্টোবর ৬ ২০২৪
নীড় পাতা / টপ স্টোরিজ / নাটোরের সিংড়ায় চাকুরির প্রতারণা চক্রের সদস্য আব্দুল জলিল আটক

নাটোরের সিংড়ায় চাকুরির প্রতারণা চক্রের সদস্য আব্দুল জলিল আটক

বিশেষ প্রতিবেদকঃ

নাটোরের সিংড়ায় সেনাবাহিনীর চাকুরির কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের সদস্য আব্দুল জলিল কে আটক করেছে সিংড়া থানা পুলিশ। শুক্রবার রাতে উপজেলার নাছিয়ারকান্দি গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়।

আটক জলিল উপজেলার নাছিয়ারকান্দি গ্ৰামের আফসার আলীর ছেলে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, জলিল সহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে এলাকার তরুণ-যুবকদের সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। জলিলের সঙ্গে শিক্ষিত যুবক পাংগাশিয়া গ্রামের জলিল মেম্বারের ছেলে সবুজ এবং পার্শ্ববর্তী উপজেলা গুরুদাসপুরের বিয়াঘাট গ্রামের ফারুক সহ বিভিন্ন জেলার প্রতারকচক্র জড়িত।

এই প্রতারক চক্রটি সেনাবাহিনী বিজিবি এবং পুলিশে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারির পরে সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা একটু সরল সাধারণ তরুণ-যুবকদের টার্গেট করে। এসব বেকার তরুণ-যুবকদের কাছে গিয়ে চাকরি হওয়ার পরে টাকা পরিশোধ সাপেক্ষে ব্ল্যাংক চেক এবং ফাঁকা স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর নিয়ে রাখে। যাদের নিজস্ব যোগ্যতায় চাকরি হয় তাদের কাছ থেকে তারা উপরোক্ত টাকা দাবি করে। টাকা পরিশোধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির সহ নানা ধরনের মামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকে।

এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে উপজেলার গোটিয়া পাড়া গ্রামে বুলবুল আহমেদ নামে এক তরুণের সাথে। ২০১৮ সালে বুলবুল আহমেদের সাথে দেখা করে সবুজ এবং জলিল সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে স্ট্যাম্প পেপার এবং ব্ল্যাংক চেকে স্বাক্ষর করে নেয়। কিন্তু দুই বছরেও তার চাকরি না হওয়ায় সে স্ট্যাম্প পেপার এবং ব্ল্যাংক চেক ফেরত চায়। ভুক্তভোগী বুলবুল জানান, স্ট্যাম্প পেপার এবং চেক ফেরত দিতে টালবাহানা শুরু করে তারা। একপর্যায়ে জলিল এবং সবুজের বিরুদ্ধে চেক এবং স্ট্যাম্প পেপার ফেরত চেয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করে। তখন সবুজ, জলিল এবং ফারুক এই স্ট্যাম্পের বিপরীতে ১৩ লক্ষ টাকা দাবি করে আদালতে মামলা করে। মামলায় তারা বুলবুলের বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ করে যে বিদেশ পাঠানোর নাম করে বুলবুল তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। এরপরেও বেনামে বিভিন্ন উপজেলা এবং জেলা থেকে বুলবুলের নামে চেক জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়। এতে পিতৃহীন বেকার যুবক বুলবুল দিশেহারা হয়ে পড়ে। পরে বুলবুল পুলিশ সুপার এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বিষয়টি পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এবং স্থানীয় থানায় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

অপরদিকে চামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রশিদুল ইসলাম মৃধা জানান এলাকায় আরও কিছু মানুষের সঙ্গে এরকম প্রতারণার অভিযোগ আছে জলিল এবং সবুজের বিরুদ্ধে। আমরা আশা করি প্রশাসন দ্রুত এসব প্রতারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এরপরে জলিল এবং সবুজ এলাকা থেকে সটকে পড়ে। প্রতারক জলিল আটক হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করে বুলবুল এবং তার পরিবার। আরেকজন প্রতারিত যুবক সোহাগ দাবি করে যে সবুজ তার কাছ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা নিয়েছিল চাকরি দেওয়ার নাম করে। কিন্তু চাকরি দিতে না পেরে তারা টাকা ফেরত দেয়ার ব্যাপারেও তালবাহানা শুরু করে। বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অভিযোগ করলে সালিশি বৈঠকে সোহাগের টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করে সবুজ। সোহাগ জানায় ইতিমধ্যে তার ৮০ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছে। কিন্তু বাঁকি টাকা আদায় নিয়ে শঙ্কায় পড়েছে সে। কারণ সবুজ ও জলিলসহ প্রতারক চক্র এখন গ্রেপ্তারের ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক তরুণ জানান তার কাছ থেকেও ব্ল্যাংক চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছে তারা। চেক জালিয়াতি মামলার ভয়ে সেও অভিযোগ করতে পারছে না। এলাকাবাসী জানায়, দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অনেক তরুণ যুবকের জীবন বিপন্ন হতে পারে।

আরও দেখুন

নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে বড়াইগ্রামে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত 

  নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষকের কন্ঠস্বর, শিক্ষায় একটি নতুন সামাজিক অঙ্গীকার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নাটোরের বড়াইগ্রামে …