করোনার অজুহাতে চালের দাম বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে বাজার মনিটরিং নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বুধবার ব্যবসায়ীদের চিঠি দেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অযথা ঘরে ঘরে দু-তিন মাসের চাল মজুদ করার কোনো প্রয়োজন নেই। কোনো ব্যবসায়ী বা মিল মালিক যদি সংকট তৈরি করার চেষ্টা করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে ভোক্তারা একসঙ্গে কতটুকু খাদ্যশস্য কিনতে পারবেন, তা নির্ধারণ করে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। সিলিং নির্ধারণ করে দিতে চাই না। কারণ তা করলে মানুষ মনে করবে, না জানি কী আছে। বিদেশ থেকে মানুষ আসা বন্ধ হয়েছে, তবে পেঁয়াজ আসছে, প্রয়োজনে চাল আসবে। এক মাস ১০ দিন পর ধান পাব। ২৫ দিন পর হাওরের ধান পাব। চিন্তার কোনো কারণ নেই। সরকারি মজুদের থেকে ৮-১০ গুণ বেশি ধান-চালের মজুদ বেসরকারি পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকৃত ব্যবসায়ী ও মিলারদের উচিত মানবতার প্রশ্নে আল্লাহকে হাজির-নাজির রেখে মানুষের
আরও সেবা দেওয়া।
সেখানে কেউ যাতে বাড়তি সুবিধার চেষ্টা করে রোজা সামনে রেখে কোনো অবৈধ ব্যবসা না করতে পারে, সে বিষয়ে সচেষ্ট আছি।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, কোনো কারণে যদি চালের সমস্যা তৈরি হয়, সে ক্ষেত্রে সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি করে দাম স্থিতিশীল রাখবে। বর্তমানে সরকারি গুদামে ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ৪৯৫ টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে।
এর মধ্যে তিন লাখ ১৯ হাজার টন গম। সোয়া ১৪ লাখ টন চাল মজুদ আছে। এর বাইরে পাইপলাইনে রয়েছে আরও দুই লাখ টন গম। গতবার এ সময়ে ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৩ টন খাদ্যশস্য মজুদ ছিল।
ওএমএসের চাল বিতরণের জন্য এরই মধ্যে ডিলারদের চিঠি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আটা বিক্রি চলছে এবং চলবে, ভোক্তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, বাজারে ২৫টি মনিটরিং টিম আছে। প্রয়োজনে এটাকে আরও বৃদ্ধি করে মনিটর করা হবে।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বই আক্রান্ত হয়েছে। আল্লাহকে একটু ভয় করেন, মানুষকে ভালোবাসেন, মানুষকে সেবা দেন, দেশের প্রতি একটু আনুগত্য স্বীকার করেন, দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলেন- এটাই আমাদের মেসেজ। সংবাদ সম্মেলনে খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম উপস্থিত ছিলেন।