নিজস্ব প্রতিবেদক, হিলিঃ
ভোরে ফযরের আযান শুনে ঘুম ভাঙে দুলির। নামাজ পড়ে এসে দোকান সে খুলে বসে সে। শুরু হয় তার কর্ম ব্যস্ততা। ভোর থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত টানা চলে তার পান দোকানে পান খিলির বেচাকেনা। আর এভাবেই এক মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে কাটছে তার জীবন সংসার। এমনটি বলে জানালেন পানের দোকানদার দুলি মিয়া।
দিনাজপুরের হিলি চেকপোষ্ট দুলি মিয়ার দোকান। এখন তার বয়স প্রায় ৬০, এদিকে প্রায় ৫০ বছর ধরে পান দোকান করে আসছে সে। তার বাবা মুসা মিঞা, তিনি বাংলাহিলি বাজারের একজন পুরাতুন জনপ্রিয় পান খিলির দোকানদার ছিলেন। এখনও পুরনো বয়স্ক মানুষদের কাছে তার বাবা’র নাম শোনা যায়। দুলি মিঞার দোকান টাও আবার তার মৃত বাবার ব্যবসা প্রতিষ্টান। অনেক সজন্তে দুলি মিঞা ধরে রেখেছে তার বাবার ব্যবসা। ১০ পয়সা পানের খিলি থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত দুলি পান বিক্রি করছে। দুর-দুরান্ত থেকে অনেকে ছুটে আসে তার হাতের এক খিলি পান খেতে। তার পানের দোকানের একটিই তার সব কিছুই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। পানের দোকানে রয়েছে বাহারি মসলা আর নানান প্রকারের জর্দ্দা। পানের দোকানদার হিসেবে একাধিক গুনে গুনান্ন্তি সে। তাই আধা ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও পান নিতে বিরক্ত হয় না ক্রেতা সাধারন।
একখিলি পান খেতে খেতে তার সাথে কথা হয় দুলি মিয়ার সাথে। তার কথায়, দীর্ঘদিন ধরে পান বিক্রি করে অনেক কষ্টে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করছি। বড় মেয়ে নার্সিং কোর্স শেষ করেছে। এখন সে একটা প্রাইভেট ক্লিন্কিকে চাকরী করে। প্রতিমাসে বেতনের কিছু অংশ দেয়, তা দিয়ে বর্তমান আমি খুব উপকৃত হচ্ছি। ছোট ছেলেটা এবার ৯ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করে। সব মিলে কষ্ট হলেও চলছি আর কি?
একজন পানের ক্রেতা টগর মল্লিক জানায়, তার হাতের পানের সাধ অন্য কোন দোকানে পাই না। আমার প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ৩০ খিলি পান লাগে। দুলি ভাই একসাথে বেশি করে পানের খিলি সুন্দর করে বানিয়ে কাগজে মুড়িয়ে দেয়।
এবিষয়ে হাকিমপুর (হিলি) পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত জানায়, দুলি ভাই একজন সৎ ও পরিশ্রমী মানুষ। ছোট থেকেই তাকে আমি তার বাবার দোকানসহ নিজের দোকান করতে দেখছি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে তার প্রতি আমার সুদৃষ্টি থাকবে। যে কোন প্রয়োজনে আমি তার পাশে আছি এবং থাকবো।