নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ জনপদে তিন হাজার কিলোমিটার রাস্তাকে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) এবং পাঁচ হাজার ব্রিজ তৈরি করবে সরকার। আর এসব কাজ মুজিববর্ষেই শেষ করে ২০২১ সালের ১৭ মার্চের আগে উদ্বোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। ব্রিজ ও রাস্তা নিমাণ ছাড়াও সারাদেশে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ৫০ হাজার দুর্যোগ সহনীয় বাড়ির উদ্বোধনসহ বেশকিছু উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষ কিছু কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে অতিদরিদ্র পরিবারের জন্য দুর্যোগ সহনীয় ৬৮ হাজার ৩৮টি বাড়ি নির্মাণ করা এ কর্মসূচির অংশ। এর মধ্যে ৫০ হাজার বাড়ি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির আগেই উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এছাড়াও একই সময়ে ২০০টি মুজিব কিল্লা উদ্বোধন করা হবে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের গৃহীত ২০টি কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হচ্ছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সারাদেশে অতিদরিদ্র ৫০ হাজার গৃহহীন পরিবারকে দুই বান্ডিল করে ঢেউটিন ও নগদ টাকা প্রদান করা হবে এবং একই বছরের মার্চে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে। এছাড়া সারাদেশে ৯ লাখ ৬৭ হাজার শ্রমিককে দিয়ে ‘পরিচ্ছন্ন গ্রাম, পরিচ্ছন্ন শহর’ কর্মসূচির আওতায় সংশ্লিষ্ট এলাকার রাস্তা, ড্রেন, বাজার, ঝোপ-ঝাড় পরিচ্ছন্ন করা হবে।
১৯৭৩ সালের ১ জুলাই বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে বাণিজ্য মেলার মাঠে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আগামী ১ জুলাই এক লাখ স্বেচ্ছাসেবকের মহাসম্মেলন আয়োজন করা হবে। ২ জুলাই ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। জুনে (২০২০) আয়োজন করা হবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ফেব্রুয়ারিতে (২০২১) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কর্মী সমাবেশ; ডিসেম্বরে (২০২০) টুঙ্গিপাড়া ও কোটালিপাড়ায় প্রয়োজন অনুযায়ী মাটির রাস্তা, ব্রিজ, হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) রাস্তা, স্ট্রিট লাইট, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও মুজিব কিল্লা নির্মাণ করা হবে।
বছরব্যাপী টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে কী পরিমাণ দারিদ্র্যতার হার কমেছে এবং কী ধরণের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে; তা মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয়, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রচার করা হবে। এ ব্যাপারে সচেতনতাও বাড়ানো হবে।
জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তার প্রধান হচ্ছেন এই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষকে সামনে রেখে ২০টি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি পরিকল্পনাই ২০২১ সালের ১৭ মার্চের আগে বাস্তবায়ন করা হবে।