প্রতিযোগিতাময় বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন প্রজন্মকে সেই শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার কথা বলেছেন।
বুধবার রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কে নির্মিত ‘শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এই লক্ষ্যের কথা জানান।
সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এই ট্রেনিং সেন্টারের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা আমাদের নতুন প্রজন্ম যারা তাদেরকে এমনভাবে শিক্ষিত করতে চাই যেন প্রতিযোগিতাময় বিশ্বের সঙ্গে তারা তাল মিলিয়ে চলতে পারে। সেজন্য প্রযুক্তি শিক্ষাটা একান্তভাবে দরকার।
“আমাদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বা কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র প্রয়োজন। যে কারণে আমরা বাংলাদেশের প্রায় সব ক্ষেত্র যেগুলো আগে সরকারি ছিল সেগুলো বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দিই, যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।”
প্রযুক্তির ব্যাপকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রযুক্তিনির্ভর একটা জাতি-গোষ্ঠী গড়ে তুলতে চাই। আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন আরও বেশি আগ্রহী হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কম্পিউটার শিক্ষা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করে দিচ্ছি। শুধু নিজেদের শিক্ষার জন্য না। রপ্তানিখাতেও ডিজিটাল ডিভাইস অনেক বেশি অবদান রাখতে পারে। আমাদের ছেলেমেয়েরাও ঘরে বসে এখানে বসে শিখে শুধুমাত্র অনলাইনে তারা এখন আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারছে। সেই সুযোগটা আমরা সৃষ্টি করতে চাই।”
১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের সময় দেশে মোবাইল ফোনের উচ্চমূল্যের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ছিয়ানব্বই সালে আমরা যখন আসি আমরা দেখেছি এদেশে একটা মোবাইল ফোনের দাম ছিল এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। ফোন করলে প্রতি মিনিট ১০ টাকা, ধরলেও ১০ করলেও ১০। এই ছিল অবস্থা। এখন কম্পিটিশনের যুগে খুব অল্পতেই ব্যবহার করা যায়। আমাদের ১৬ কোটি মানুষের দেশে ১৩ কোটি সিম ব্যবহার হয়।
“এই যে আমরা কথা বলতে পারছি বা আজকে টাকা পাঠানো, ক্রয়-বিক্রয় থেকে শুরু করে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা মানুষ পাচ্ছে। মানুষের জীবনমান উন্নত হচ্ছে। অনলাইনে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সবকিছু যে হচ্ছে তার ফলে আমরা মনে করি যে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণেরও সুযোগ হচ্ছে। দেশের অর্থনীতিও আরও শক্তিশালী হচ্ছে। একেবারে গ্রাম পর্যায়ের মানুষ যেন কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় সেই ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিচ্ছি।”
অনুষ্ঠানে শতভাগ বিদ্যুতায়িত ঢাকা, ফেনী, গোপালগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, জয়পুরহাট, মেহেরপুরসহ ৭টি জেলা, ফেনীতে ১১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং ১৮টি জেলার ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমানে দেশের ৯৬ ভাগ মানুষ বিদ্যুত্ পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “৬৪টা জেলা আমাদের। সেখানে ৪০টা জেলায় এখন শতভাগ বিদ্যুৎ হয়ে গেল। ৪১০টা উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ আমরা দিতে পারলাম। বাকি যেগুলো আছে ইনশাল্লাহ এই মুজিববর্ষে আমরা বাংলাদেশের সকল ঘরে আলো জ্বালব। এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।