ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবার প্রথমবারের মতো বিভক্ত ঢাকার দুই সিটিতে একযোগে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হচ্ছে। আর এটিই ইভিএমে সবচেয়ে বড় নির্বাচন।
শনিবার ভোটকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেছে, উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিচ্ছেন। কেন্দ্রগুলোতে নারীদের উপস্থিতি বেশি রয়েছে। তবে বেলা বাড়লে ভোট কেন্দ্রেগুলোতে নারী ভোটারের পাশাপাশি পুরুষ ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।এর আগে সকাল ৭টা থেকে ভোটার কম থাকলেও বেলা যতো বাড়ছে ভোটারও তত বাড়ছে। সকাল থেকেই কেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটাররা দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
এবারে আওয়ামী লীগসহ নয়টি দলের ১৩ জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া কাউন্সিলর পদে প্রায় সাড়ে সাতশ প্রার্থী রয়েছেন ভোটের মাঠে। দুই সিটিতে মোট ভোটার ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন ভোটার রয়েছেন।
পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জের লালকুঠি কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। এ কেন্দ্রে চারটি বুথ রয়েছে। নারী-পুরুষ মিলে ভোটার সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। এর মধ্যে একটিতে এখানে মেয়র ও কাউন্সিলর সব প্রার্থীর এজেন্ট রয়েছেন। ভোটকেন্দ্রের কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা হয়।ইভিএমে প্রথম ভোট দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে লালকুঠি কেন্দ্রের ভোটার আদুরি রানি বলেন, এবার আমি প্রথম ইভিএমে ভোট দিলাম। এই কেন্দ্রে নারী ভোটারদের মধ্যে প্রথম ভোট আমি দিয়েছি। ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। ইভিমে ভোট দেওয়া খুব সহজ।
লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার অপেক্ষা করছেন সম্পা রানি নামে এক ভোটার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ভোটের পরিবেশ খুব ভালো। এজন্য ভালো লাগছে। সকালে এসেছি ভোট দিয়ে দ্রুত বাসায় চলে যাবো। আরও অনেক নারী ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন।
সেন্টাল গালর্স স্কুল ভোটকেন্দ্রের ভোট দিতে এসেছেন এক মধ্যবয়সী নারী ছালেহা বেগম।
তিনি বলেন, আমাদের জন্য যে ভালো করবেন, তাকেই ভোট দেবো। আমি আরও অনেকবার ভোট দিয়েছি। তবে, এবার ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেবো।একটু ভয় লাগছে। মেশিনতো ভালো বুঝি না। দেখি কী, হয়।ঢাকার দু’সিটিতে ২ হাজার ৪৬৮টি ভোটকেন্দ্র ও ১৪ হাজার ৪৩৪টি ভোটকক্ষ রয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ১ হাজার ৩১৮টি ভোটকেন্দ্র ও ৭ হাজার ৮৫৭টি ভোটকক্ষ এবং দক্ষিণ সিটিতে এক হাজার ১৫০টি ভোটকেন্দ্র ও ৬ হাজার ৫৮৮টি ভোটকক্ষ রয়েছে।
গত ২২ ডিসেম্বর ঢাকার দু’সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিলো গত ৩১ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র বাছাই ২ জানুয়ারি, প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিলো ৯ জানুয়ারি। ভোটগ্রহণের তারিখ ৩০ জানুয়ারি থাকলেও ওইদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা থাকায় তা পরিবর্তন করে ১ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। গত ১০ জানুয়ারি প্রচার শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার প্রচার শেষ হলো। মোট ২১ দিন প্রচারের সুযোগ পান প্রার্থীরা।