নিজস্ব প্রতিবেদক, গুরুদাসপুরঃ
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর আদর্শ গ্রামে বসবাস করা একটি পরিবারের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকান্ডের অভিযোগ তুলেছেন গ্রামের মানুষ। পরিবারটিকে উচ্ছেদের দাবীতে গতকাল রোববার গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে মিছিল-সমাবেশও করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পরিবারটির বিরুদ্ধে মাদক, শিশুপাচার, বহুবিবাহ ও ফাঁদ পেতে টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা রকম অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ তুলেছেন গ্রামের মানুষ। এনিয়ে শনিবার গ্রামের মানুষের গনস্বাক্ষর সম্বলিত একটি আবেদন থানায় দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীর পক্ষে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মিজানুর রহমান এ অভিযোগটিদেন। গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন,- অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জনরোষ থেকে পরিবারটিকে রক্ষা করতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
লিশ ও গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, পরিবারটি একটি খাস জায়গায় বসবাস করছেন দীর্ঘদিন ধরে। কোন পুরুষ সদস্য নেই। বৃদ্ধ হালিমা বেগম তাঁর মেয়ে চামেলী খাতুনের মেয়ে শাবানা খাতুনকে নিয়ে বসবাস করছেন। আয়ের পথ হিসেবে পরিবারটি নানা রকম অনৈতিক কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছেন।
তাঁদের এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করতে গেলেই নানাভাবে হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে গ্রামের মানুষকে। কতিপয় পুলিশ সদস্যের সাথে পরিবারটির বিশেষ সখ্যতা থাকায় প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না গ্রামের মানুষ। একারনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন পরিবারটি। অভিযোগ করলেন গ্রামের মানুষ।
সম্প্রতি প্রতিবেশি জালেমন বেগম, রহিমা বেগম অভিযোগ করেন, হালিমা বেগম জোর পুর্বক গাছ কেটে জায়গায় টয়লেট নির্মান শুরু করেন। প্রতিবাদ করায় তাদের মারপিট করা হয়। আরেক প্রতিবেশি কুদ্দুস মোল্লা অভিযোগ করেন পরিবারটির অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় তাকেও মারধর করা হয়।
স্থানীয় চায়ের দোকানী আনোয়ার হোসেন, মুদী দোকানীর দোকানের বাঁকি টাকার তাগাদা দেওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পুলিশ দিয়ে হয়রানী করা হয় তাঁদের। ভুক্তভোগী এসব মানুষ নিজেদের রক্ষা এবং পরিবারটির অনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধের দাবী তোলেন তাঁরা। সর্বশেষ শনিবার রাতে গ্রামবাসী মাইকিং করে জোটবদ্ধ হয়ে রোববার পরিবারটিকে ঘেরাও করে। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী এসময় পরিবারটির নির্মানাধীন টয়লেট ভাংচুর করে।
নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শওকত রানা বলেন, পরিবারটির বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। পরিবারটির প্রধান হালিমা বেগমের বিরুদ্ধে শিশু পাচার ও মাদক মামলা রয়েছে।
এ মামলায় জামিনে রয়েছেন তিনি। তাছাড়া তার মেয়ে চামেলি খাতুনের বিরুদ্ধে কমপক্ষে সাতটি বিবাহ এবং তার মেয়ে শাবানা খাতুনের বিরুদ্ধে চারটি বিবাহের অভিযোগ রয়েছে। বিবাহ বানিজ্যের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়া পেশা তাদের। অনেক মানুষ এমনকি পরিষদও কোন সমাধান দিতে ভয় পায় হয়রানীর ভয়ে।
অভাবের কারনে অনেক সময় তাদের পরিবারটি পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। বিচ্ছিন্ন ঘটনায় মামলা হলেও জামিনে রয়েছেন তারা। রোববার গ্রামের কতিপয় মানুষের প্ররোচনায় তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে তাদের নির্মানাধীন টয়লেট, জানালার কাঁচ ও একটি ছাগল রাখার টংঘর ভাংচুর করা হয়েছে।
দাবী হালিমা বেগম ও তার মেয়ে চামেলি খাতুনের। এঘটনায় তাঁরাও আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান তাঁরা।
ওসি মোজাহরুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল থেকে মুঠোফোনে জানান, পরিবারটি অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
আরও দেখুন
গুরুদাসপুরে বাড়ি বিক্রি করেও ঋণ থেকে রক্ষা হয়নি এক বস্ত্র
ব্যবসায়ীর নিজস্ব প্রতিবেদক গুরুদাসপুর,,,,,,,,,,,ধার-দেনা শোধ করতে শেষ সম্বল বাড়ি বিক্রি করেও মুক্তি পাননি কুদরত আলী …