মঙ্গলবার , এপ্রিল ১ ২০২৫
নীড় পাতা / উত্তরবঙ্গ / সরস্বতী পূজা-অধ্যাপক শেখর কুমার সান্যাল সনাতন ধর্ম মতে সরস্বতী বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী।

সরস্বতী পূজা-অধ্যাপক শেখর কুমার সান্যাল সনাতন ধর্ম মতে সরস্বতী বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী।

নিজস্ব প্রতিবেদক,,,,,,,,,,,,,,,,,,তিনি বাগেশ্বরী, বাগ্‌দেবী, বিদ্যাদেবী, বীণাপাণি প্রভৃতি নামে অভিহিতা। প্রজ্ঞা-সুর-সংগীতের দেবী সরস্বতী জ্ঞান ও কলাবিদ্যার অধিশ্বরী। বেদ, বেদাঙ্গ এবং বেদান্ত তাঁরই আশ্রিত। ‘বেদাঃ শাস্ত্রানি সর্ব্বানি নৃত্যগীতাদিকঞ্চ যৎ। ন বিহীনং ত্বয়া দেবী’ বেদাদি শাস্ত্র সকল এবং নৃত্যগীতাদি তাঁকে ছাড়া নয়। ধর্মশাস্ত্রে সরস্বতীকে ষোড়শবিদ্যারূপা বলা হয়েছে। মহাভারতে আছে আর্যরা ব্রহ্মাবর্তে এক তটিনী তীরে নীড় রচনা করে বাস করতেন। ঋষিদের কণ্ঠনিঃসৃত বেদমন্ত্র নিয়ত ধ্বনিত হতো বলে এই পুণ্যভূমি বাগ্‌দেবীর পীঠস্থান এবং স্রোতস্বিনীটি ‘সরস্বতী’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। বাগ্‌দেবী সুন্দর ও সত্যবাক্যের প্রেরণকর্ত্রী, শুভবুদ্ধির উদ্বোধনকারিণী এবং নরনারী হৃদয়ে জ্যোতি সঞ্চারিণী। দেবী সরস্বতীর উৎপত্তি সম্পর্কে কথিত আছে, তিনি পরমাত্মার মুখ হতে আবির্ভূতা। দেবী শুক্লবর্ণা, বীণাধারিণী, চন্দ্রশোভাযুক্তা এবং স্মৃতিশাস্ত্রের মধ্যে শ্রেষ্ঠা। সৃষ্টিকালে ঈশ্বরের ইচ্ছায় প্রধানাশক্তি পাঁচ অংশে বিভক্ত হন- রাধা, পদ্মা, সাবিত্রী, দুর্গা ও সরস্বতী। এঁদের মধ্যে সরস্বতী কৃষ্ণকণ্ঠ হতে উদ্ভূতা। শ্রীকৃষ্ণ সর্বপ্রথম এই দেবীর পূজা করেন, পরে ধরণীমাঝে এই পূজা প্রচলিত হয়। ত্রিগুণসম্পন্ন মানুষের সত্ত্ব, রজঃ ও তমঃ গুণের যথাক্রম আধিক্য অনুযায়ী ব্রহ্মের মহাশক্তি মহাসরস্বতী, মহালক্ষ্মী ও মহাকালীরূপে প্রতিভাত হন। সত্ত্বগুণ শ্বেতবর্ণ, শুভ্র নিষ্কলুষ জ্ঞান, বিদ্যা, জ্যোতি প্রভৃতির প্রতীক। তাই সত্ত্বগুণসম্পন্ন মানুষের কাছে মহাশক্তি সরস্বতীরূপে আবির্ভূতা। সরস্বতীর রূপকল্পনার প্রকাশ রয়েছে সরস্বতীস্তবে- শ্বেতপদ্মাসনা দেবী শ্বেত পুষ্পোপশোভিতা। শ্বেতাম্বরধরা নিত্যা শ্বেতগন্ধানুলেপনা।। শ্বেতাক্ষসূত্রহস্তা চ শ্বেতচন্দনচর্চ্চিতা। শ্বেতবীণাধরা শুভ্রা শ্বেতালঙ্কারভূষিতা।। মহাসরস্বতীর প্রতিমারূপের নান্দনিক বর্ণনা দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ‘সোনারতরী’ কাব্যে ‘পুরস্কার’ কবিতায়- ‘বিমল মানসসরসবাসিনী, শুক্লবসনা শুভ্রহাসিনী, বীণাগঞ্জিত মঞ্জুভাষিণী কমলকুঞ্জাসনা’। বিমল জ্ঞানলাভে প্রফুল্ল বিশাল জ্ঞানসরোবরে অধিষ্ঠিতা, শ্বেতশুভ্রা, নিষ্কলুষবসনা, বিমলানন্দে শুচিস্মিতা, জ্ঞানরূপ কমলে সমাসীনা যে দেবীহস্তের বীণাঝংকারে মধুভাষ ও সংগীতের মূর্চ্ছনা – তিনিই দেবী সরস্বতী। প্রতি মাঘী শুক্লা শ্রীপঞ্চমীতে (বসন্ত পঞ্চমী) হিন্দুসম্প্রদায়, বিশেষত শিক্ষার্থীসমাজ মহাসমারোহে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মানুষ্ঠান সরস্বতীবন্দনা করে থাকেন। হে প্রজ্ঞাপারমিতা জ্ঞানমাতা, তুমি নিখিলভুবন ভরি’ অমৃতের ধারাসিঞ্চন কর! সরস্বতি মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে। বিশ্বরূপে বিশালাক্ষি বিদ্যাং দেহি নমোহ্‌স্তু তে।।

আরও দেখুন

সিংড়ায় ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীলদের ঈদ পুনর্মিলনী

নিজস্ব প্রতিবেদক সিংড়া,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,নাটোরের সিংড়ায় সাবেক ও বর্তমান সাথী, সদস্য এবং দায়িত্বশীলদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। …