আবরার হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরও ছাড় দেয়া হলো না। ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত ২৬ জনকে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন দলের পদধারী নেতা এবং বাকিরাও কর্মী ও সমর্থক।
বর্তমান সরকারের সময়ে বুয়েটের এ ধরনের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর আগে বিএনপির শাসনামলে ছাত্রদলের হাতে বুয়েট শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টি এমন কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বুয়েট বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনের সদস্য সচিব ও ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুয়েটের ডিএসডব্লিউ অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
২৬ জনকে বহিষ্কার ছাড়াও ৬ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়েছে। আবরার হত্যাকাণ্ডে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বুয়েট বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন এ সিদ্ধান্ত নেয়।
আজীবন বহিষ্কৃত ২৬ জনের মধ্যে ২৫ জনই পুলিশের অভিযোগপত্র অনুযায়ী অভিযুক্ত। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আরও ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়। বহিষ্কৃতদের অন্তত ১১ জন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে ছিলেন। অন্য আসামিরাও ছাত্রলীগের কর্মী বা সমর্থক ছিলেন।
আজীবন বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন: অমিত সাহা, মেহেদী হাসান রবিন, মুহতাসিম ফুয়াদ, অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রাসেল, ইফতি মোশররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মাজেদুর রহমান, মো. মুজাহিদুর রহমান, এহতেশামুল রাব্বী, খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. আকাশ, শামীম বিল্লাহ, নাজমুস সাদাত, অমর্ত্য ইসলাম, মো. মোর্শেদ ম-ল, মোয়াজ আবু হুরায়রা, মুনতাসির আল জেমি, মিজানুর রহমান, মুজতবা রাফিদ, আশিকুল ইসলাম, শামসুল আরেফিন রাফাত, ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না ও এসএম মাহমুদ।
বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হওয়া ৬ শিক্ষার্থী হলেন: নওশাদ সাকিব, সাইফুল ইসলাম, মো. গালিব, শাওন মিয়া, ইকবাল অভি ও মো. ইসমাইল।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর আবরার হত্যার ঘটনায় ২৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ২৬ জনের মধ্যে আশিকুল ইসলামের নামে পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়নি।
প্রসঙ্গত, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।