নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর পুঠিয়ায় রাতের আঁধারে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পুকুর খননকারীরা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। চুক্তি মোতাবেক দিনে খনন বন্ধ রেখে রাতে লাইট জ্বালিয়ে খননকাজ চলে। আর খনন করা পুকুরের মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ঢোগায় এই ধ্বংসযজ্ঞ চলায় ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। বার বার অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছে না তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের কার্তিকপাড়া বাজার এলাকায় অবাধে দিন-রাত চলছে পুকুর খননের মহাযজ্ঞ। আর সেই পুকুর খননের মাটি যাচ্ছে এলাকার বিভিন্ন ইটভাটায়। এই মাটি পরিবহনে ব্যবহৃত হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকায় নির্মিত মহাসড়ক, সড়ক ও গ্রামীণ পদ। ফলে মাটিবাহী ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়ক ডেবে গিয়ে ভেঙ্গেও যাচ্ছে। এছাড়াও পরিবহনের সময় মাটি পড়ে সড়কগুলো চলাচলের অনুপোযোগি হয়ে পড়েছে।
এসব নিয়ে এলাকাবাসী একাধিকবার অভিযোগ করলেও উপজেলা প্রশাসন রহস্যজনক কারনে নিরব রয়েছে। প্রশাসনের রহস্যজনক ভূমিকায় ক্ষুদ্ধ অত্র এলাকাবাসী।
স্থানীয় একাধিক সূত্রমতে, বাগমারা উপজেলার রামগুয়া এলাকার ভূমিদস্যু আব্দুল লতিফ নামের এক প্রভাবশালী পুঠিয়া এলাকায় এসে পুকুর খনন সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। তার নেতৃত্বেই এই এলাকায় চলছে ডজনখানেক পুকুর খননের মহাযজ্ঞ। বিশেষ করে স্থানীয় কয়েকজন নামধারী সাংবাদিক, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই পুকুর খনন সিন্ডিকেট। ফলে আদালত বা দেশের প্রচলিত কোন আইন-কানুনকে তোয়াক্কা করেন না ভূমি খেকু লতিফ ও তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এমনকি জমির মালিককে না জানিয়ে জোরপূর্বক রাতারাতি পুকুর খনন করছেন আব্দুল লতিফ।
মোসলেম নামের এক কৃষক জানান, যেখানে ১০ জনের জমি আছে সেখানে ছয়-সাত জনের কাছ থেকে লিজ নিচ্ছে। বাকিরা জমি দিতে রাজি না হলেও রাতারাতি তাদের জমিতেও পুকুর খনন হয়ে যাচ্ছে। বাধা দিতে গেলে পিস্তল ধরে ভয় দেখানো হয়। ফলে ভয়ে কেই কিছু বলতে সাহস পায়না।
এ ব্যাপারে জানতে ভূমিদস্যু আব্দুল লতিফের সঙ্গে কথা বলেতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ কে এম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, এলাকায় অবৈধভাবে পুকুর খননের বিরুদ্ধে অভিযোগ অব্যাহত রয়েছে। যখন যেখানে পুকুর খননের খবর পাওয়া যাচ্ছে সেখানে অভিযান করা হচ্ছে। এর আগে কয়েকটি অভিযান করে খননকারীদের জেল- জরিমানাও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।