নিউজ ডেস্ক:
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাড়ে ছয় বছর পর ইউরোপে পুনরায় পান রপ্তানি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে পান রপ্তানি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে কৃষি মন্ত্রণালয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর শ্যামপুরে কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউসে ‘ইউরোপে নিরাপদ ও মানসম্পন্ন পান রপ্তানি’ শীর্ষক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবলস অ্যান্ড অ্যালায়েড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফভিএপিইএ) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রথম চালানে আজ রপ্তানি হচ্ছে এক মেট্রিক টন পান। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষিপণ্যের রপ্তানির সম্ভাবনা অনেক। সে সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ইতিমধ্যে দেশে উত্তম কৃষিচর্চা নীতিমালা (গ্যাপ) বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী জানান, সারা দেশে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিষমুক্ত শাকসবজি উৎপাদিত হচ্ছে। অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব থেকে সনদ দেওয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ভ্যাকুয়াম হিট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে।
পানে ক্ষতিকর সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির কারণে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ থেকে পান রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, যা ধাপে ধাপে ২০২০ পর্যন্ত বর্ধিত করে। এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন পান রপ্তানির জন্য শর্ত দেয়—পান সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ামুক্ত হতে হবে, উৎপাদন থেকে শিপমেন্ট পর্যন্ত উত্তম কৃষিচর্চা (গ্যাপ), গুড হাইজিন প্র্যাকটিসেস (জিএইচপি), গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিসেস (জিএমপি) অনুসরণ করত হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অ্যাক্রিডিটেড পরীক্ষাগার থেকে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ নিতে হবে।
এসব শর্তের বিপরীতে বাংলাদেশ পান আবাদের এলাকা নির্বাচন, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং, উত্তম কৃষিচর্চার আলোকে কর্মসূচি ও বাস্তবায়ন, মনিটরিং, ট্রেসিবিলিটি বা শনাক্তকরণ, পানের স্যাম্পল পরীক্ষার ব্যবস্থা করে। এ ছাড়া কৃষক নির্বাচন ও প্রশিক্ষণ, রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ, নিয়মিতভাবে পানের জমির মাটি ও পানি পরীক্ষা, রপ্তানি বাজারের জন্য নিরাপদ ও বালাইমুক্ত পান উৎপাদনের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৩ হাজার ২৫০ টন পান রপ্তানি করে। সে বছর পান রপ্তানি করে বাংলাদেশ তিন কোটি ডলার আয় করে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শর্ত পূরণ করায় গত ১৫ এপ্রিল পান রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। এ নিষেধাজ্ঞার আগে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৩ হাজার ২৫০ টন পান রপ্তানি করে। সে বছর পান রপ্তানি করে বাংলাদেশ তিন কোটি ডলার আয় করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্থানীয় সাংসদ সৈয়দ আবু হোসেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. জাফর উদ্দীন ও বিএফভিএপিইএর সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ।