নিউজ ডেস্ক:
বর্তমানে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বছরে গড়ে ১৬ শ’ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় করে থাকে। আগামী বছর থেকে এই আয় আরো বাড়িয়ে ১৮ শ’ কোটি টাকায় নিয়ে যেতে চায় সংস্থাটি। বিআরটিএর ভাষ্য মতে, আগামী পাঁচ বছরে প্রতি বছর গড়ে ১৮০০ কোটি টাকা হিসাবে ৯০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে। তবে এই জন্য ‘সেবা’ ক্রয় করতে হবে। আর সেবাটি হবে ‘বুদ্ধিবৃত্তিক’ ‘পেশাগত’। সেবা দু’টি কেনার জন্য সংস্থাটির ব্যয় করতে হবে ২০৮ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই সেবাটি কেনা হবে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমের (সিএনএস লিমিটেড) কাছ থেকে। যারা অনেক বছর ধরেই প্রায় একচেটিয়া বিআরটিএ, রেলসহ সরকারি আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাজ পেয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) যেসব সেবা দিয়ে থাকে তার মধ্যে মোটরযান রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, রোড ট্যাক্স, রুট পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মালিকানা বদলি, রেট্রো-রিফ্লেকটিভ নাম্বার প্লেট, ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেয়া অন্যতম। এসব সেবার জন্য নির্ধারিত হারে কর ও ফি দেয়া গ্রাহকদের বাধ্যতামূলক।
এর আগে ২০১০ সাল পর্যন্ত ওই কর ও ফি আদায় বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মাধ্যমে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে করা হতো। পরবর্তী সময়ে মোটরযানের বিভিন্ন কর ও ফি গ্রাহক কর্তৃক জমা দেয়া এবং বিআরটিএ কর্তৃক আদায় কার্যক্রম অধিকতর স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক, সহজতর, দ্রুত ও নিশ্চিত করতে ডাক বিভাগের পরিবর্তে ডিজিটালাইজড অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশে গত ২০১০ সালের ২ আগস্ট নির্বাচিত সার্ভিস প্রোভাইডারের সাথে বিআরটিএর পাঁচ বছর মেয়াদে প্রথমবার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
জানা গেছে, সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশে ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট তারিখে নির্বাচিত সার্ভিস প্রোভাইডারের সাথে বিআরটিএর দ্বিতীয়বার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মেয়াদ আগামী ১৬ জুলাই শেষ হওয়ার কথা।
বিআরটিএ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ১৮টি অনলাইন ব্যাংকের ৫৪৭টি শাখা ও বুথের মাধ্যমে, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে অনলাইনে কর ও ফি তথা সরকারি রাজস্ব আদায় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ২০১০ সালের আগে বছরে গড়ে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা কর ও ফি আদায় হতো। পক্ষান্তরে বর্তমানে বছরে গড়ে প্রায় ১৬৩৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হচ্ছে।
প্রসঙ্গত এ পদ্ধতির মাধ্যমে বিআরটিএর মোটরযান সংক্রান্ত রাজস্ব আদায় ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন মোটরযান সংক্রান্ত আয়কর, ভ্যাট ইত্যাদি আদায় করা হয় যা গড়ে প্রতি বছর প্রায় ১২৯০ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয় প্রক্রিয়া কোয়ালিটি অ্যান্ড কস্ট বেইজড সিলেকশন (কিউসিবিএস) পদ্ধতিতে সম্পাদন করা হয়। বিআরটিএর বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় (রাজস্ব খাতে) বিবেচ্য ক্রয় কাজটি একটি প্যাকেজ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছে। প্রস্তাবিত সেবা ক্রয় কাজটির প্রাক্কলিত মূল্য ভ্যাটসহ ২২১ কোটি ৭৫ লাখ ৬৫ হাজার ৩৫০ টাকা।
এ কাজের যৌক্তিকতা উল্লেখ করে বিআরটিএর পাঠানো এক সার-সংক্ষেপে বলা হয়, সেবাগুলো অব্যাহত রাখা ও মোটরযান সংক্রান্ত রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে বর্ণিত মোটরযান কর ও ফি জমা দেয়া সংক্রান্ত অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখা জরুরি। এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য যোগ্য, দক্ষ ও উপযুক্ত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের লক্ষ্যে আগ্রহব্যক্তকরণ আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমকে (সিএনএস লিমিটেড) দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করেছে। জানা গেছে, আগামীকাল বুধবার ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদন পেতে পারে।
আরও দেখুন
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ ………..চাঁপাইনবাবগঞ্জে রক্তদান সামাজিক সেবামূলক সংগঠন ‘রক্তের খোঁজে আমরা’র ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। শুক্রবার …