- জাতীয় কর্মসংস্থান নীতির খসড়া অনুমোদন
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় আগামী ৩/৪ বছরের মধ্যে ৫৬ লাখ লোককে দক্ষ করে গড়ে তুলতে জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি, ২০২২ এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে ইরান এবং মালদ্বীপের মধ্যে দ্বৈত করারোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত চুক্তির খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া মন্ত্রিসভা ‘সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০২২’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে চাকরিরত অবস্থায় কোন শিক্ষক মারা গেলে তার অপ্রাপ্ত বয়সের সন্তানের লেখাপড়ার খরচ কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে বহন করা হবে। পাশাপাশি ব্যাংক ঋণে এখন থেকে অস্থাবর সম্পত্তিও ইক্যুইটি হিসেবে রাখার বিধান রেখে সুরক্ষিত লেনদেন (অস্থাবর সম্পত্তি) আইন, ২০২২ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সকল অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে সইয়ের লক্ষ্যে দ্বৈত করারোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ইতিপূর্বে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে যে দ্বৈত করারোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে, এ দুটি তেমনই। বাংলাদেশের সঙ্গে বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশের দ্বৈত করারোপ পরিহার চুক্তি রয়েছে। ওই চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশ সমঝোতার ভিত্তিতে করের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সুবিধা দিয়ে থাকে। এ সুবিধা নিয়ে ওইসব দেশের প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে তাদের অর্জিত অর্থ নিজ দেশে পাঠানোর সময় হ্রাসকৃত হারে কর পরিশোধ করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে হ্রাসকৃত করের হার কর্তন ছাড়াই বিদেশে অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা ব্যক্তির ক্ষেত্রে দ্বৈত করারোপ চুক্তির আওতায় কী পরিমাণ কর কর্তন আইনসঙ্গত এ সম্পর্কিত এনবিআরের সুনির্দিষ্ট অনুমোদন নেয়ার আবশ্যকতা রয়েছে।
এছাড়া ‘বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২২’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটি খুব ছোট একটি আইন। কমিশনের কয়েকজনের ডেজিগনেশন সেক্রেটারি আছে, সেটা পরিবর্তন করে নির্বাহী কর্মকর্তা করা হয়েছে।
জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি অনুমোদন ॥ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় আগামী ৩/৪ বছরের মধ্যে ৫৬ লাখ লোককে দক্ষ করে গড়ে তুলতে জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি, ২০২২ এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি, ২০২১ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। এটা ২০২২ হবে ২০২১ হিসেবে নিয়ে এসেছিল। এখন যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসছে ও আধুনিক বিশ্বের প্রযুক্তি পরিবর্তন হচ্ছে ফলে আমাদের উৎপাদন, প্রযুক্তি ও শ্রমিকদের দক্ষতা সেটার ব্যাপক পরিবর্তন করা দরকার। এ পরিপ্রেক্ষিতে এটা নিয়ে আসা হয়েছে। এটার মূল উদ্দেশ্য হলো, দেশের শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এ বিষয়ে একটি আধুনিক যুগোপযোগী নীতির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা।
প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য হচ্ছে কল্যাণ ট্রাস্ট ॥ ‘সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০২২’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এটি বাস্তবায়ন হলে চাকরিরত অবস্থায় কোন শিক্ষক মারা গেলে তার অপ্রাপ্ত বয়সের সন্তানের লেখাপড়ার খরচ কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে দেয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা চূড়ান্ত অনুমোদন হলো। সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হবে। মূল বিষয় হলো চাকরিরত অবস্থায় একজন শিক্ষকের মৃত্যু হলে তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোন সন্তান থাকলে, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু থাকলে ও তৃতীয় লিঙ্গের কোন শিশু থাকলে তাদের লেখাপড়ার খরচ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দেয়া হবে।
ইক্যুইটি হিসেবে রাখা যাবে অস্থাবর সম্পত্তি ॥ ব্যাংক ঋণে এখন থেকে অস্থাবর সম্পত্তিও ইক্যুইটি হিসেবে রাখার বিধান রেখে সুরক্ষিত লেনদেন (অস্থাবর সম্পত্তি) আইন, ২০২২ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা ব্যাংক থেকে যে সব ঋণ দেই তার বিপরীতে একটা ইক্যুইটি দিতে হয়। স্থাবর সম্পত্তি বা ক্যাপিটাল ইক্যুইপমেন্ট দেয়া হয়। সেখানে নতুন আইনে অস্থাবর সম্পত্তিকে ইক্যুইটি হিসেবে নেয়ার জন্য ব্যাংকিং ডিভিশন থেকে একটা প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সুরক্ষিত লেনদেন (অস্থাবর সম্পত্তি) আইন, ২০২২ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মানে এখন থেকে অস্থাবর সম্পত্তিও ইক্যুইটি হিসেবে নেয়া যাবে।